গরুর মাংসের ভক্ত মসরুর আহমেদ নিজে যেমন ভালোবাসেন মাংস খেতে, তেমনি অন্যদেরও খাওয়ায় উৎসাহ দিয়েছেন৷ তার ভাষায়, ‘‘আমি কিন্তু গরুর মাংস খুবই ভালো পাই, ডাক্তার আমাকে অ্যালার্জির জন্য না করেছিল, কিন্তু জিব্বার লোভ কি সামলানো যায়, যাই হোক গরুর মাংসের মজাই আলাদা, সবাই গরুর মাংস খাবেন৷''
রোমিও রাজকুমারের অনেকটা এরকমই মত, কারণ তিনিও যে মাংসপ্রেমী৷
তবে কামরুল হাসানের মতে বিজ্ঞানীদের এই চিন্তাটি খুবই উন্নত, তিনি আশাবাদী৷
মনে হয় মাংস খেতে ভালোবাসেন পাঠকবন্ধু ইবনে আল আরাফাতও৷ তার মন্তব্য এই পাগলারা (বিজ্ঞানীরা) যা বলবে তাই আমাদের মানতে হবে???
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
প্রতিদিন মাংস
জার্মানদের খাবারের তালিকায় প্রায় প্রতিদিনই মাংস থাকা চাই৷ মাংস রান্না বা সেদ্ধ অবস্থায়, এছাড়া সসেজ, সালামি, হ্যাম – কোনো না কোনোভাবে তাঁদের খাবার টেবিলে থাকে মাংস৷ তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় এবং এতে নানা সমস্যা দেখা যায়, সে কথা জেনেও তাঁরা মাংস পছন্দ করেন৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম মাংস
একজন প্রাপ্তবয়স্ক জার্মান গড়ে দিনে ১৫০ গ্রাম মাংস খান, অর্থাৎ সপ্তাহে যা ১০০০ গ্রামেরও বেশি৷ অথচ ডাক্তাদের মতে, একজন মানুষ সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন এবং এর বেশি খাওয়া একেবারেই উচিত নয় যদি সে মাংস ‘রেড মিট’ হয়৷ গরু, ছাগল, শূকর, ভেড়া এবং ঘোড়ার মাংসকে ‘রেডমিট’ বলা হয়৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়
ডাক্তারদের মতে, কেউ দিনে ১০০ গ্রামের বেশি ‘রেডমিট’ খেলে তাঁর হৃদরোগের ঝুঁকি এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়৷ সে তুলনায় সাদা মাংস, অর্থাৎ মুরগি বা পাখির মাংস খেলে ঝুঁকি অনেক কম৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
পরিমিত পরিমাণ
মাংসতে রয়েছে প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন ‘বি’৷ জার্মানির পট্সডাম রেব্র্যুক-এর খাদ্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড.গিজেলা ওলিয়াস বলেন, রেডমিট হৃদরোগ এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় ঠিকই৷ তবে মাংসের তৈরি সসেজ কিন্তু এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় আরো বেশি৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিটকাটার
জার্মান মাংসের দোকানের কর্মীরা প্রায় সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত৷ এখানে যে কোনো জায়গায় কাজ করতে গেলে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকতে হয় – তা সে মাংস কাটার কাজ হোক, অথবা অন্য কোনো কাজ৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
গ্রিল মাংস
আগুনে পোড়ানো বা গ্রিল করা রসালো মাংস দেখতে যেমন লোভনীয়, তেমন খেতেও দারুণ মজা৷ তাই গ্রীষ্মকালে জার্মানরা প্রায়ই গ্রিল পার্টির আয়োজন করেন, যেখানে প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়া হয়৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
আরো গ্রিল
নানাভাবে বিভিন্ন পশুর বিভিন্ন অংশের মাংস গ্রিল করা হয়৷ তবে জার্মানরা বেশিরভাগই গ্রিল করেন শূকরের মাংস৷ এসব লোভনীয় গ্রিল দেখে কারো কি মনে থাকার কথা যে, একজন মানুষের দিনে মাত্র ১০০ গ্রাম মাংস খাওয়া উচিত?
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
দামে সস্তা
গরু বা খাসির মাংসের তুলনায় শূকরের মাংস দামের দিক দিয়ে অনেক সস্তা৷ আর সেজন্যই হয়ত শূকরের মাংস জার্মানিতে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে৷ এবং সেটা হয়ে থাকে নানাভাবেই!
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
পাউরুটির সাথেও মাংস
জার্মানরা সকালের নাস্তা বা রাতে রুটির সাথেও মাংসের সসেজ বা মাংসের স্লাইস খান৷ এছাড়া, বিভিন্ন দোকানে, ক্যাফেতে নানা ধরনের রুটির মধ্যে ‘স্যান্ডউইচ’ আকারে মাংস ভরে খাবারও চল আছে জার্মানিতে৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
ড্যোনার কাবাব
জার্মানিতে অনেক তুর্কি রেস্তোরাঁ আছে এবং এসব রেস্তোরাঁর বেশিরভাগ খাবারই মাংস দিয়ে তৈরি৷ বিশেষ করে ‘ড্যোনার কাবাব’ তরুণদের কাছে বেশ প্রিয়৷ এটা একরকম পাতলা রুটির মধ্যে সবজি এবং গ্রিল করা মাংস দিয়ে তৈরি করে হয়৷ বলা বাহুল্য, জার্মানিতে ৪০ লাখ মুসলমানের বাস, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এসেছেন তুরস্ক থেকে৷
-
জার্মানরা মাংস খেতে বেশি ভালোবাসেন
হালাল মাংস
জার্মানিতে তুর্কি দোকানগুলোতে হালাল মাংসও পাওয়া যায়৷ সেসব দোকানে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমানসহ জার্মানরাও মাংস কেনেন৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
প্রাণীহত্যা না করেও যে মাংস খাওয়া সম্ভব তারই চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ তবে প্রতিবেদনটি পড়ে কিন্তু আগন্তুক অগ্রপথিক রসিকতাই করেছেন৷ তার মন্তব্য, ‘‘শাক-সবজি হত্যার ব্যাপারে কিছু করবেন না? তাদের কি প্রাণ নেই.....৷''
বন্ধু জাকারিয়ার মতে জীবিত প্রাণীর গোশত খাওয়া হারাম৷ পাঠক তুহিনেরও মত অনেকটা এরকমই৷ মিরাজ হোসেন, নজরুল ইসলাম, স্নেহা জাহান নাসিমা – এরা সকলেই এই একই মত পোষণ করেন৷
মামুন হাসান বলছেন এসব নাকি বিজ্ঞানীদের ব্যর্থ প্রচেষ্টা৷
শিব শঙ্কর ব্রহ্ম বিজ্ঞানীদের সমর্থন করে জানিয়েছেন, ‘‘ইতিবাচক মনোভাবই কিন্তু ইতিবাচক ফলাফল আনে'' কাজেই তিনি এগিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন৷
মামুন হাসান তো এটাকে উদ্ভট চিন্তাভাবনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন৷ শাজাহান তালুকদার বলছেন, সৌদিরা নাকি এভাবেই খায়৷
আবদুল্লাহেল ফরিদ মনে হয় খুবই মজা পেয়েছেন ফেসবুরকে প্রতিবেদনটি পড়ে৷ তিনি বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে রসিকতা করেছেন, ‘‘মাংসের ফ্লেভার যুক্ত ট্যাবলেট বের করুন আর এক পাতিল সবজিতে যেন একটা ট্যাবলেট ফেলে দিলেই কাজ হয়!''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন