ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়ারা এখন প্রচণ্ড শীত ও ক্ষুধার কবলে

ভূমিকম্পের প্রায় সপ্তাহ পেরুলেও ধ্বংসস্তূপ সরানোর এখনও কোনো কুলকিনারা করা যায়নি৷ এখনও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন কংক্রিটের নীচে৷ স্বজনরা অপেক্ষায় আছেন প্রিয়জনের খবর জানতে৷ তুরস্কের কাহরামানমারাসে ধ্বসে পড়া ভবনের পাশে তেমনই কয়েকজনকে দেখা যাচ্ছে অপেক্ষার প্রহর গুণতে৷

ভূমিকম্পে আশ্রয় হারানো মানুষদের জন্য কোথাও কোথাও আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে৷ তুরস্কের গাজিয়ানটেপে একটি ফুটবল খেলার মাঠে তাঁবু টানিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷

এর মধ্যে বইছে শৈত্য প্রবাহও৷ হিমাঙ্কের নীচে নেমে যাওয়া তাপমাত্রায় রাতারাতি আশ্রয়হীন হয়ে পড়া মানুষেরা পড়েছেন ভয়ানক বিপাকে৷

আগুনের তাপে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা৷ পেছনে ধ্বংসস্তূপ, সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ৷

ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে আশ্রয়হীন মানুষদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ তুরস্কের কাহরামানমারাসে এক ব্যক্তিকে খাবার বিতরণ করতে দেখা যাচ্ছে৷

চারদিকে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন৷ সন্তানকে নিয়ে কোথায় যাবেন জানা নেই এই নারীর৷ ছবিটি তুরস্কের হাতায় তোলা৷

বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে যথেষ্ট খাবার, ঔষধ, এমনকি টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই৷ আলিহান কাভাসোগলু নামের এক নারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আক্রান্ত হয়ে পড়ছি৷ টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই৷ সবাইকে বাইরেই কাজ সারতে হয়৷ চারদিকে এত দুর্গন্ধ যে রাতে আমরা ঘুমাতেও পারি না৷’’

ভূমিকম্পের প্রায় এক সপ্তাহ পরও সৌভাগ্যবান অনেককে জীবিত উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে৷ স্বজন হারানোরা এখনও তাই আশায় বুক বেঁধে আছেন৷ রাতেও ধ্বংস্তূপের পাশে আগুন জ্বালিয়ে তারা অপেক্ষা করছেন৷

সময় গড়ানোর সাথে সাথে অবশ্য বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এসেছে৷ শেষ পর্যন্ত স্বজনদের দেখা পাবেন কিনা জানেন না আপনজনেরা৷ ক্ষুধা, ক্লান্তি, অনিশ্চয়তা সব মিলিয়ে ভয়াবহ হতাশা গ্রাস করেছে বেঁচে যাওয়া মানুষদের৷