ভারতের প্রথম জিএম খাদ্য বিটি ব্রিনজাল নিয়ে বিতর্ক চলছেই
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০জিএম বা জেনেটিক্যালি মোডিফাইড পণ্যের ব্যবহার ভারতে প্রথম নয়৷ তবে বিটি বেগুনই হতো ভারতীয় খাদ্যতালিকায় স্থান পাওয়া প্রথম জিএম খাদ্য৷
ভারতে উত্পাদিত তুলার কমপক্ষে ৮০ শতাংশ হলো জিএম বা বিটি তুলা৷ কিন্তু আট বছর আগে ভারতে জিএম পণ্যের আগমন ঘটলেও এখনো ভারতীয়রা তাদের খাদ্য তালিকায় জিএম খাবার যোগ করতে রাজী নয়৷
এর কারণ হিসেবে তারা বলছে জিএম খাদ্যে যে জীন ব্যবহৃত হয় তা বিষাক্ত এবং এটা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে৷
উল্লেখ্য, জিএম খাদ্যে এক ধরণের প্রোটিন রয়েছে যা পোকামাকড় তাড়াতে সাহায্য করে৷ এই প্রোটিনটি তৈরি হয় মাটিতে বাস করে এমন একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে৷ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া থেকে জীন নিয়ে সেটাকে ফসলে স্থানান্তর করে দেয়া হয়৷ ফলে ফসলটি নিজে নিজেই ঐ প্রোটিনটি তৈরি করতে পারে৷
ভারতে জিএম খাবার উত্পাদনের ক্ষেত্রে মার্কিন কোম্পানি মোনসান্টো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে৷ কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বের বর্ধিত জনসংখ্যার খাওয়ার জোগান দিতে কৃষকদের উত্পাদন দ্বিগুন করতে হবে৷ তাই জিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে৷
তবে মোনসান্টোর এই মতের বিরোধী লোক রয়েছে অনেক, যেমন গ্রীনপিস ইন্ডিয়ার রঙ্গনাথান৷ তিনি বলছেন, জিএম প্রযুক্তি যে উত্পাদন বাড়ায় তা ঠিক নয়৷ তাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের জনগণের জন্য খাবার জোগাড়ের যে স্বপ্ন মোনসান্টো দেখছে তা সম্ভব নয়৷ তিনি বলছেন, জৈব ও প্রাকৃতিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই উত্পাদন বাড়ানো সম্ভব৷
জমিতে অধিক পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার ও জমির উর্বরতা কমে যাওয়ায় ভারতে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ জিএম প্রযুক্তি এই বিষয়টিকে গুরুত্বই দিচ্ছেনা৷
এছাড়া সমালোচকরা বলছেন, জিএম ফসলের জন্য দামি বীজ আর প্রযুক্তি কিনতে গিয়ে কৃষকরা আরো ঋণী হয়ে পড়েছে৷ তবে মোনসান্টো ইন্ডিয়ার পরিচালক জ্ঞানেন্দ্র শুকলা বলছেন, দেশব্যাপী প্রায় ৫০ লক্ষ কৃষক জিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করছে৷ যদি এটি লাভজনক না ই হবে তবে এতো কৃষক এটা ব্যবহার করছেন কেন, বলছেন শুকলা৷
প্রতিবেদন : জাহিদুল হক
সম্পাদনা : আবদুস সাত্তার