1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের জেলে বাংলাদেশি নাগরিক

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
৬ এপ্রিল ২০১৮

বছর দশেক আগে বৈধ পাসপোর্টেই ভারতে যেতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের বাদল ফরাজি৷ বিএসএফ আটক করে তাঁকে৷ পুলিশ জড়িয়ে দেয় হত্যা মামলায়৷ বাদল এখন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী৷ শত চেষ্টাতেও মিলছে না দেশে ফেরার সুযোগ৷

https://p.dw.com/p/2vcRy
Screenshot Facebook justiceforbadolfarazi
ছবি: Facebook/justiceforbadolfarazi

নেহায়েত ভ্রমনের উদ্দেশ্যেই ভারতে আসতে চেয়েছিলেন বাদল৷ কিন্তু সীমান্তরক্ষিবাহিনী বিএসএফ আটক করার পর থেকে যা যা ঘটেছে তাকে জীবনের অন্ধকারময় অধ্যায় বলেই মনে করছেন জেলবন্দী যুবক৷ ১০ বছর ধরে একই সুরে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করছেন তিনি৷ ইতিমধ্যে ছেলের শোকে মৃত্যুবরণ করেছেন বাবা৷ বাদলকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আর্জি জানাচ্ছেন তাঁর মা, বোন৷

সালটা ২০০৮৷ আঠারো বছরের তরতাজা যুবক বাবা-‌মায়ের নিষেধ অমান্য করে ভারতে বেড়াতে আসছিলেন৷ বৈধ পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও বিএসএফ জওয়ানদের হাতে আটক হলেন৷ তারপর সোজা দিল্লি পুলিশের কাছে হস্তান্তর৷ দিল্লিতে ৭১ বর্ষীয়া এক বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার৷ টানা ৭ বছর বিচারাধীন বন্দি থাকার পর বছর তিনেক আগে যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছে দিল্লির সাকেত জেলা আদালত৷ রায় বহাল রেখেছে দিল্লি হাইকোর্ট৷ বাদলের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷

২০০৮ সালের ১৩ জুন বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বাদল ফরাজিকে৷ পুরোনো ঘটনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে একটি আশ্চর্যজনক বিষয় নজরে এসেছে৷ সেটি হলো, বাদলের পাসপোর্টে বাংলাদেশ অভিবাসনের স্ট্যাম্প থাকলেও ভারতের অভিবাসন বিভাগের কোনও স্ট্যাম্প নেই৷ প্রশ্ন থেকেই যায়– কেন?‌ জবাব নেই কারও কাছে৷ ফলে, বাদলের দাবিকে আরও জোরালো বলে মনে হয়েছে৷ ভারত-‌বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের জেলে বন্দিদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে শাস্তির বাকি মেয়াদ দেশের জেলে কাটানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে৷ সেক্ষেত্র বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে৷ বিষয়টি এখন বিবেচনাধীন রয়েছে৷

ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিদের কাছে বাদলের মুক্তির আবেদন জানিয়েছেন তার মুমূর্ষু মা৷ বোনও জানিয়েছেন একই আবেদন৷

<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Frahul.kapoor.9634%2Fvideos%2F10215773781196256%2F&show_text=0&width=560" width="560" height="315" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowTransparency="true" allowFullScreen="true"></iframe>

এক দশক ধরে জেলবন্দি বাদল দাবি করে আসছেন তিনি দোষ করেননি৷ বরং ‌বাদল সিং নামের অন্য এক ব্যক্তির‌ সঙ্গে তাঁকে গুলিয়ে ফেলেছিল পুলিশ৷ বেনাপোলে বাদল খলিফ ফরাজিকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশও নিজেদের ভুল বুঝতে পারে৷ কিন্তু, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী নিজেদের ভুল শোধরানোর পরিবর্তে মিথ্যাকে সত্যি বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছে৷ তারপর ভুল বা মিথ্যাকেই সত্যি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালানো হয়েছে৷ ৭ বছর বিচারাধীন বন্দি থাকার পর তাঁকে নির্দোষ ঘোষণা করে রেহাই দেওয়া হলে মানবাধিকার-‌সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে৷ তাই এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না কোনও পক্ষই৷

দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০০৮ সালে নয়া দিল্লির অমর কলোনিতে ৭১ বছরের এক বৃদ্ধা খুন হন৷ মূলত ডাকাতির উদ্দেশ্যেই খুন বলে ধরে নেওয়া হয়৷ তেমন প্রমানও মেলে৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, টাকা ও গয়নাগাঁটির লোভে অসহায় ‌ওই বৃদ্ধাকে খুন করে সব লুট করে গা-‌ঢাকা দেয় বাদল সিং নামের পরিচারক৷ ‌পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকায় ওই বৃদ্ধা একাই থাকতেন৷ চটজলতি ‘‌বাদল'‌কে খুঁজেও পায় পুলিশ৷ পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয় ভারত-‌বাংলাদেশ বেনাপোল সীমান্তে প্রথমে ‌বিএসএফ‌ আটক করে বৈধ পাসপোর্টধারী বাদল ফরাজিকে৷ তারপর তাঁকে তুলে দেওয়া হয় দিল্লি পুলিশের হাতে৷ ‘‌বাদল'কে পেয়ে পুলিশ মামলা সাজিয়ে নেয়৷ এখানেই অভিযোগ, বাংলাদেশি বাদল ফরাজি দিল্লিতে বৃদ্ধার খুনি বাদল সিং নন৷ তবুও প্রথমে ভুল করে, পরে জেনেবুঝে তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আর এই কাজে প্রায় সবমহলের দিকেই আঙুল উঠেছে

রাহুল কাপুর

তবে, বাদল যেহেতু একা অসহায় বিদেশি যুবক, তাঁর পক্ষে উপযুক্ত নথি জোগাড় করা সহজ ছিল না৷ বাংলাদেশ দূতাবাস-সহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় যেটুকু নথি জোগাড় হয়েছিল, দেশের ‘‌বিদেশি বন্দি'‌ আইনে তা-‌ও গ্রাহ্য হয়নি৷ ফলে, গত ১০ বছর ধরে দেশের সবচেয়ে বড় সংশোধনাগার তিহারে অন্য ১৬ হাজার কয়েদির সঙ্গে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন বাদল ফরাজি

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের জুলাইয়ে দিল্লিতে খুন হয় ওই বৃদ্ধা৷ অভিযুক্তের নাম ছিল বাদল সিং৷ অথচ ধরা হয়েছে বাদল ফরাজিকে৷ পুলিশ ও আদালতের যুক্তি, দিল্লিতে খুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল বাদল৷ তারপর আবার ফিরে আসার সময় বেনাপোলে ধরা পড়েছেন৷ ভারতের সবচেয়ে বড় জেল তিহার৷ সেখানে বাদলকে নিয়ে যাওয়া হয় ২০০৮ সালের ২১ জুলাই৷ তখনও তাঁর বিরুদ্ধে দোষ প্রমানিত হয়নি৷ ৭ বছর ধরে বিচারাধীন বন্দি থাকার পর ২০১৫ সালে জাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় তাঁকে৷ এরপর ঘটনাচক্রে ২০১৬ সাল থেকে তিহারের ৩নং জেলে গিয়ে একাধিকবার বাদলের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন দিল্লিতে কর্মরত সমাজকর্মী রাহুল কাপুর৷ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক কর্ম বিভাগে ‌‌মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করার পর সমীক্ষার কাজে তিহার জেলে গিয়েছিলেন রাহুল৷ সেখানেই তাঁর আলাপ হয় বাংলাদেশি বন্দি বাদল ফরাজির সঙ্গে৷

রাহুল কাপুর ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‌‘বাদল ফরাজির অসহায়তা ও কষ্টকর জীবন যেকোনও কল্পকাহিনীকেও হার মানাবে৷ অনেক গবেষণা করে আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, বাদল কোনও দোষ করেনি৷ তা-‌ও তাঁকে জেলে বন্দী থাকতে হচ্ছে৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও একের পর এক ডিগ্রি অর্জন করেছেন৷ নিজের ব্যবহারে সবার মন জয় করেছেন৷ সমাজসেবায় কাজ করছেন৷ জেলে সংস্কারমূলক অনেক কাজ করেছেন৷ আমার মতে, বাদলকে মুক্তি দিলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও ভালো হবে৷ তাছাড়া সংশোধনাগার জীবনের ‘‌রোল মডেল'‌ হতে পারেন বাদল৷ কেউই জানেন না, অন্যায় না করেও ১০ বছর ধরে বন্দি থাকার পরেও এদেশের শহিদ সেনাকর্মীদের পরিবারকে সরকারি সাহায্য করা হয় যে তহবিল থেকে সেই তহবিলে প্রতিমাসে অর্থ সাহায্য করে চলেছেন৷ সংশোধনাগারে কয়েদিরা গড়ে মাসে ৫০০-‌৬০০ টাকা রোজগার করেন৷ তার থেকেও প্রতিমাসে ২০০ টাকা শহিদ ভারতীয় সেনার পরিবারকে সাহায্যের জন্য দান করেন বাদল৷'‌'‌

এখন বাকি শাস্তিটুকু বাংলাদেশের জেলে কাটানোর বন্দোবস্ত হলে প্রথম ২-‌৩ মাস বাড়িতেই থাকতে পারবেন বাদল৷ প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন৷ বাকি সময় জেলে থাকবেন৷ কিন্তু, ভারতে এই সুযোগ মেলে না, কারণ, তিনি বিদেশি বন্দি৷ এই দাবিতে গত ৩ বছর ধরে লড়াই চালালেও গত ৫ মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হয়েছেন রাহুল৷change.org ‌-‌এ আবেদন করেছেন৷ ‌ব্যাপক সাড়াও মিলছে৷ এ পর্যন্ত এক হাজার মানুষ সুষমা স্বরাজকে টুইট করেছেন৷ দু-‌জন সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের নিজেদের লেটারহেড-‌এ সুষমা স্বরাজকে চিঠি লিখেছেন৷ ১২ হাজার মানুষ তাঁর সঙ্গে যুক্ত৷ সংশোধনাগার সূত্রের খবর, বাদল যখন সংশোধনাগারে আসেন, তখন তো হিন্দি বা ইংরেজি জানতেন না৷ জেলে থাকাকালীন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন৷ এতসবের মাঝেও গত ১০ বছর ধরে একই কথা বলে চলেছেন, ‘‘‌আমি নিরপরাধ৷ আমি কাউকে খুন করিনি৷''

বিদেশি বন্দির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সরকারি পদ্ধতি অনুসরণ করে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়৷ অন্যভাবে সংগৃহিত তথ্য-প্রমাণ আদালতে আইনত গ্রাহ্য নয়৷ বাদলের মামলায় এক সাংবাদিক বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার সময় ইমিগ্রেশনের তথ্য ব্যক্তিগতভাবে সংগ্রহ করে আদালতে জমা দেন৷ কিন্তু, তা গ্রাহ্য হয়নি৷

মোশাররফ হোসেন

বাংলাদেশ দূতাবাস জানাচ্ছে, তাদের কাছে প্রমান আছে, খুনের সময় বাংলাদেশে নিজের স্কুলে ছিলেন বাদল৷ স্কুলের অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্টারে তাঁর উপস্থিতির প্রমাণও আছে৷ সব তথ্য নিয়ে এখনও লড়ে চলেছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্তারা৷ ২০১২ সালে বাংলাদেশ দূতাবাস ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে বেশকিছু তথ্য-‌প্রমানসহ চিঠি লিখে বাদলকে নির্দোষ দাবি করে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার আর্জি জানায়৷

বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (‌কনস্যুলার)‌ মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‌‘‌বারবার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি৷ আমাদের মনে হয়েছে বাদল ফরাজি নিরপরাধ৷ এই সম্পর্কিত বেশকিছু তথ্য-‌প্রমাণ আমরা পেয়েছি৷ আদালত ও ভারত সরকারের কাছে সেগুলি পেশ করাও হয়েছিল৷ কিন্তু, বাদল ফরাজির শাস্তি ঘোষণা হয়েছে৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ভারতের বিদেশ মন্ত্রক মারফত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে একটি আবেদন জানিয়েছি৷ আবেদনটি হলো, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শাস্তিপ্রাপ্ত কয়েদিদের নিজেদের জেলে পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি রয়েছে৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী, বাদলকে তাঁর নিজের দেশের জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হোক৷ বাকি শাস্তি নিজের দেশের জেলেই কাটাক বাদল৷ তবে, এই ব্যাপারে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও জবাব আসেনি৷ আমরা অপেক্ষা করছি৷ আশা করছি, বাদল দেশে ফিরতে পারবেন৷'‌'‌

দিল্লির সাকেত আদালত ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা করে৷ পরে দিল্লি হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে৷ এরপর ভারতের সর্বোচ্চ আদলত সুপ্রিম কোর্টেও বাদলের আর্জি খারিজ হয়ে যায়৷ কিন্তু, এতসবের মধ্যেই বাদল পড়াশোনা করে স্নাতক হয়ে উঠেছেন৷ ইন্দিরা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী, দশম শ্রেণী, দ্বাদশ শ্রেণী এবং স্নাতক পরীক্ষা্য সফল হয়েছেন বাদল৷ এখন গড়গড় করে ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন তিনি৷ এবং স্পোকেন ইংলিশের প্রশংসাপত্রও রয়েছে তাঁর৷ সম্প্রতি বাদলকে দিল্লিতেই নবনির্মিত সংশোধনাগার মান্ডোলিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷ সেখানে তিনি দক্ষতার সঙ্গে ‘‌জেল সেবাদার'‌ হিসেবে কাজ করছেন৷

দশ বছর আগে প্রতিবেশী দেশের কয়েকটা শহর ঘুরে দেখার ইচ্ছা থেকে বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভারতে এসেছিলেন বাদল৷ বাবা আবদুল খালেক ফরাজির মৃত্যুর পর জেলে বসেই একটি চিঠিতে সেইসব লিখেছেন তিনি৷ লিখেছেন, ‘‘‌আব্বা বলেছিলেন, একমাস পরে আমরা সবাই মিলে ভারতে বেড়াতে যাবো কিন্তু, আমি একাই বেড়াতে আসতে চেয়েছিলাম৷ প্রায় জোর করে এসেছিলাম৷ যদি না আসতাম আজ আমার এমন দুর্দশা হতো না৷''

প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো? লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান