1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিনামূল্যে ওষুধ

৬ জুলাই ২০১২

ভারতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হলেও, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান এগোতে পারছে না তেমন৷ তাই জন সাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন দিল্লি৷

https://p.dw.com/p/15Rj6
ছবি: AP

ভারতের মহানগরীর সরকারি হাসপাতাল থেকে গ্রামের ছোট স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র পর্যন্ত সবজায়গার চিকিৎসকরা শীঘ্রই তাঁদের রোগীদের জন্য সাধারণ ‘জেনেরিক' ওষুধগুলো ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারবেন যেগুলো রোগীরা বিনামূল্যে পাবে৷ গত বছরও ভারতীয়দের জন্য স্বাস্থ্য সেবায় মাথাপিছু সরকারের খরচ ছিল মাত্র সাড়ে চার ডলার৷ কিন্তু সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে প্রায় সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে৷ সারা দেশের মানুষের জন্য নামকরা প্রতিষ্ঠানের মোড়কে আবৃত নয় - এমন সাধারণ ওষুধ, বিনামূল্যে বিতরণের সিদ্ধান্তটি গত বছরই অনুমোদন করে ভারত সরকার৷ তবে এতদিন সেই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করা হয়নি৷ এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে কয়েক সপ্তাহ আগে প্রথম দফায় অর্থ ছাড় দেয়া হয়েছে৷  

ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশই দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করে৷ অথচ সেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবার নামে রমরমা ব্যবসা করে চলেছে৷ এসব বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে খরচ প্রায় চার গুণ বেশি৷ আর ওষুধের দোকানেও রয়েছে বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির মোড়কে আবৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডেড ওষুধ-পত্র৷ কিন্তু দেশটির সাধারণ মানুষ এসব বিলাসবহুল স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না৷ তাই সরকারের এই সিদ্ধান্ত কোটি কোটি ভারতবাসীর জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে বলেই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের৷ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতের ১.২ বিলিয়ন মানুষের প্রায় অর্ধেক মানুষ বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ার এই সেবা পাবে বলে জানিয়েছে নতুন দিল্লি৷

Arzt Doktor in Indien
সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকারছবি: AP

ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এল সি গয়াল বলেন, ‘‘সরকারের এই নীতির ফলে সঠিক মানের ‘জেনেরিক' ওষুধগুলোর যৌক্তিক ব্যবহার আরো সম্প্রসারিত হবে৷ কারণ, এগুলো ব্র্যান্ডেড ওষুধগুলোর চেয়ে অনেক বেশি সস্তা৷''

এই পরিকল্পনা অনুসারে, চিকিৎসকরা শুধুমাত্র সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ‘জেনেরিক' ওষুধগুলোর নামই ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারবেন৷ এর বাইরে যদি তাঁরা কোনো নামকরা প্রতিষ্ঠানের মোড়কবিশিষ্ট ওষুধ খাওয়ার জন্য রোগীকে বলেন, তাহলে চিকিৎসকদের শাস্তি ভোগ করতে হবে৷ সরকারের এমন উদ্যোগের ফলে কোটি কোটি মানুষের উপকার হলেও, ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতির ওষুধের বাজারে বড় বড় ওষুধ কোম্পানিগুলো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা৷

‘কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস' নামক প্রতিষ্ঠানের ইউরোপীয় প্রধান ক্রিস স্টার্লিং বলেন, ‘‘ভারতের সাম্প্রতিক বেশ কিছু পদক্ষেপের মুখে খুঁড়িয়ে চলা ওষুধ শিল্পের জন্য এটি যেএকটি বড় ধাক্কা, তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ ভারতের এই ধরণের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বাজার কৌশল আরেকবার ভালোভাবে পর্যালোচনা করতে হবে৷'' বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ফাইজার, গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন এবং ম্যার্ক'এর মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বড় ধাক্কা খাবে৷ কারণ তারা প্রতি বছর রোগের নতুন চিকিৎসার জন্য উন্নতমানের ওষুধ বের করতে প্রচুর পয়সা খরচ করে গবেষণা ও উৎপাদন খাতে৷

অবশ্য, ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডিউসার্স সংস্থা বা ওপিপিআই-এর মহাপরিচালক তপন রায়ের মতে, ওষুধের দাম মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয়৷ তবে এই পরিকল্পনা ব্র্যান্ডেড ওষুধের বাজারের খুব বেশি ক্ষতি করবে না৷ বরং তিনি মনে করেন, এর ফলে ওষুধ শিল্পের উন্নতি ত্বরান্বিত করবে এবং যেসব গরিব মানুষ এতদিন ওষুধ কিনতে পারতো না, এখন তারাও সহজে ওষুধ সেবন করতে পারবে৷''

এএইচ / ডিজি (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য