1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতীয় অভিনেত্রীর ‘নগ্ন' প্রতিবাদ

১ মে ২০১৮

ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরে তেলেগু অভিনেত্রী শ্রী রেড্ডি প্রকাশ্যে তাঁর বেশবাস অপসারণ করে তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ অভিনব প্রতিবাদের সেই ভিডিও দেখা হয়েছে কোটি বার!

https://p.dw.com/p/2wx9m
Gewaltbereite Jugend Berlin Deutschland Symbolbild
প্রতীকী ছবিছবি: Imago/photothek/L. Johannssen

একজন ভারতীয় নারীর পক্ষে জনসমক্ষে – অর্থাৎ পুরুষদের সামনে তাঁর জামাকাপড় খুলে ফেলাটা যে কতটা সাহস বা দুঃসাহসের কাজ, তা পশ্চিমের ‘ফেমেন' থেকে শুরু করে ‘#মিটু' আন্দোলনের নারীবাদীদের পক্ষে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়৷

অপরদিকে ভারতের মতো দেশে শ্রী রেড্ডির ‘নগ্ন প্রতিবাদ' যে প্রতিবাদের পাশাপাশি – এমনকি তার পরিবর্তে নগ্নতাকেই বেশি গুরুত্ব দেবে, এতেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷

অথচ পূর্ব কিংবা পশ্চিমের ‘সমৃদ্ধ' ও ‘সংস্কারমুক্ত' দেশ কিংবা ভারতের মতো দারিদ্র্যের সাগর থেকে মাথা তুলে দাঁড়াতে প্রয়াসী সনাতনপন্থি ও রক্ষণশীল দেশ – সর্বত্রই নারীদের পুরুষদের লালসা ও শোষণের শিকার হতে হয়৷ হলিউড থেকে শুরু করে বলিউড বা তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, সর্বত্রই সুন্দর মুখ এবং সেই সঙ্গে সুন্দর শরীরের চাহিদা, যেমন সেলুলয়েডের পর্দায়, তেমনই তথাকথিত ‘কাস্টিং কাউচ'-এর উপর৷ এক কথায়, পুরুষ শাসিত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে উঠতি অভিনেত্রীদের কাছ থেকে অনেক ক্ষেত্রে যে বিশেষ মূল্যটি দাবি করা হয়, তা দৃশ্যত ক্যালিফোর্নিয়া থেকে তেলেঙ্গানা, সর্বত্রই এক৷

তফাৎটা হলো এই যে, সেই শোষণের বিরুদ্ধে তেলেঙ্গানায়‘নগ্ন প্রতিবাদ' জানালে একটির বদলে দু'টি ইস্যু এসে পড়ে, একটির বদলে দু'টি ভীমরুলের চাকে ঢিল ছোঁড়া হয়৷ প্রথমত, পুরুষ কর্তৃক নারীর শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ; দ্বিতীয়ত, সেই প্রতিবাদের অস্ত্র হিসেবে নারীর প্রকাশ্য  নগ্নতা৷ শ্রী রেড্ডি যখন প্রথম ইস্যুটির কথা বলতে চাইছেন, তখন অনেকেই দেখছেন শুধু শ্রী রেড্ডির নগ্নতা, খোলা রাস্তায় ক্যামেরার সামনে তাঁর সালোয়ার-কামিজ ও বক্ষাবরণী খুলে ফেলে হাত দিয়ে বুক ঢেকে দাঁড়ানো এবং পরে পর্যায়ক্রমে আবার বেশবাস পরা৷

পশ্চিমের ‘ফেমেন' গোষ্ঠীর প্রতিবাদে নগ্ন বক্ষদেশ প্রদর্শিত হয় বটে, কিন্তু তা থেকে শ্রী রেড্ডির এই ‘স্ট্রিপ প্রটেস্ট' বা জামাকাপড় খোলার প্রতিবাদের অনেক ফারাক৷ শ্রী রেড্ডি প্রতিবাদের এই পন্থা বেছে নিয়েছেন, কেননা, তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দৃশ্যত উঠতি অভিনেত্রীদের কাছ থেকে এ ধরনের নগ্ন ভিডিও ও নগ্ন ফটো দাবি করা হয়ে থাকে৷ বস্তুত তিনি তেলেগু ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্সের সামনের কার পার্কে তাঁর ‘নগ্ন প্রতিবাদের' উপস্থাপনা করেন৷ তাঁর এই প্রতিবাদের আরেকটি লক্ষ্য ছিল নাকি মুভি আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন বা এমএএ, যারা তাঁকে কয়েকটি ফিল্মে অভিনয় করা সত্ত্বেও তাঁদের সদস্য করেনি৷ তৃতীয়ত, শ্রী রেড্ডির দাবি হলো যে, তেলেগু চলচ্চিত্রে ৭০ ভাগ ভূমিকা তেলুগু অভিনেত্রীদের জন্য সংরক্ষণ করা উচিত৷

তাঁর নগ্ন প্রতিবাদ থেকে শ্রী রেড্ডি এযাবৎ যা পেয়েছেন, তা হলো অসংখ্য ট্রলস আর ইন্টারনেটে নারীবিদ্বেষী গালিগালাজ৷ এছাড়া পবন কল্যাণের মতো নামকরা অভিনেতা ও তাঁর ফ্যানদের সঙ্গে তাঁর কাজিয়া বেঁধেছে৷ ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য অভিনেত্রীর আচরণ সম্পর্কে ইঙ্গিত করেও তিনি তাঁর শত্রুর সংখ্যা বাড়িয়েছেন৷ অর্থাৎ, তাঁর প্রতিবাদ শেষ হলেও, তার ফলশ্রুতি শেষ হতে এখনও অনেক বাকি৷

তবে শ্রী রেড্ডির কাপড় খুলে প্রতিবাদ জানানোর ভিডিও সব মাধ্যম মিলিয়ে কোটি বারেরও বেশি দেখা হয়েছে৷ ইউটিউবে ওপরের ভিডিওটিই দেখা হয়েছে ২৮ লক্ষ ৭১ হাজার বার৷

এসি/এসিবি