ব্রিটিশ আমল থেকেই মসজিদের শহর কলকাতা
নবাব সিরাজৌদোল্লা যখন কলকাতা দখল করতে আসেন, টিপু সুলতানের বংশধরদের যখন নির্বাসনে পাঠানো হয় আর সিপাহি বিদ্রোহের পর বাদশা ওয়াজিদ আলি শাহকে যখন বন্দি করে এ শহরে পাঠানো হয় – এই তিন সময়ই মুসলিমদের জন্য প্রয়োজন পড়ে মসজিদের৷
টিপু সুলতানের মসজিদ
কলকাতার ধর্মতলার মোড়ের উত্তর ধার ঘেঁষে এই মসজিদটি পরিচিত মহীশূরের নবাব টিপু সুলতানের মসজিদ নামে, যেটি ১৮৪২ সালে বানিয়েছিলেন টিপুর ছোট ছেলে গোলাম মহম্মদ শাহ৷
হারিয়ে গেছে জলাশয়
একসময় এই মসজিদের লাগোয়া জমিতে একটি বড় জলাশয় ছিল৷ নমাজ পড়ার আগে যেখানে হাত পা ধুতেন লোকে৷ এই জলাশয়টি এখন আর নেই, কিন্তু প্রশস্ত উঠোনটি এখনও রয়েছে৷
দশ মিনার
ছোট বড় মিলিয়ে দশটি মিনার আছে মসজিদের মূল গম্বুজকে ঘিরে৷ তাদের গায়ে পঙ্খের প্রাচীন কারুকার্য এখনও অটুট৷
নাখোদা মসজিদ
কলকাতার সবথেকে বড় আকারের মসজিদ চিৎপুর রোডের নাখোদা মসজিদ, যা বঢ়ি মসজিদ নামেও পরিচিত৷ ১৯২৬ সালে নির্মাণ শুরু হয়, শেষ হয় ১৯৪২ সালে৷
বুলন্দ দরোয়াজা
নাখোদা মসজিদের মূল প্রবেশপথটি ফতেপুর সিক্রির বিখ্যাত বুলন্দ দরোয়াজার আদলে বানানো, উচ্চতায় চারতলা বাড়ির সমান৷
তাজমহলের আদল
নাখোদা মসজিদের বাইরের অংশ লাল বেলেপাথরে তৈরি, মুঘল সম্রাট আকবরের সমাধি সেকেন্দ্রার অনুকরণে৷ আর শ্বেতপাথরে তৈরি এর অন্তর্মহলে তাজমহলের আদল৷
বাদশাহি মেজাজ
নাখোদা মসজিদ লাগোয়া চিৎপুর রোডের প্রতিটা কোণে যেন বাদশাহি মেজাজ৷ সুতোর কাজ করা জামাকাপড় থেকে শুরু করে সুর্মা, আতর, অম্বুরি তামাক, মোগলাই খানা – যেন সময় থমকে আছে৷
বর্ণময় মাজার
কলকাতার অনেক জায়গাতেই পীরদের মাজার আছে৷ অনেকসময়ই তাদের অলঙ্করণ বেশ বর্ণময়৷ আবার নির্জন এলাকাতেও দেখা যায় অনেক সমাধিস্থল৷
ইতিহাসের অংশ
টিপু সুলতানের ছোটছেলে গোলাম মহম্মদ শাহ যেখানে নির্বাসিত জীবন কাটাতেন, দক্ষিণ কলকাতার সেই টালিগঞ্জেও একটি মসজিদ বানিয়েছিলেন৷ সৌন্দর্যে এবং ঐতিহাসিকভাবেও সেটি গুরুত্বপূর্ণ৷
সেই ট্র্যাডিশন
বাবা সযত্নে ছেলের চোখে সুর্মা পরিয়ে দিচ্ছেন৷ গোলাম মহম্মদ শাহ মসজিদ চত্বরে৷ সত্যিই কিছু জিনিস বদলায় না৷
প্রথা, ঐতিহ্য
যেমন জুম্মাবারের নমাজ পড়তে আসা৷ ছোট্ট ছেলেরাও সুন্দর পোশাকে সেজেগুজে মসজিদে আসে বাবার সঙ্গে৷
আধুনিকতার ছোঁয়া
পুরনো মসজিদগুলো ছাড়াও কলকাতা শহরে বেশ কিছু নতুন মসজিদ তৈরি হয়েছে, যেগুলো স্থাপত্যরীতিতে একেবারেই আধুনিক৷