1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরো সংকটে আশার দোলা

৩০ জুন ২০১২

ইউরো অঞ্চলের দেশসমূহে ঋণ সংকট মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার পর থেকে ১৮টি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা৷ সেসব সম্মেলন অনেকটা হতাশায় পর্যবসিত হলেও ১৯তম সম্মেলনে বেশ সাফল্য পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন ইউরোপের নেতৃবৃন্দ৷

https://p.dw.com/p/15OGy
ছবি: Reuters

বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস বৈঠকে বেশ কিছু স্বল্পকালীন পদক্ষেপ এবং দীর্ঘকালীন পরিকল্পনার ব্যাপারে একমত হয়েছেন ইউরো অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ৷ ঋণ সংকটে থাকা দেশগুলোর সরকারকে আরো বেলআউট প্রদান এবং সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোর জন্যও সরাসরি অর্থ সহায়তার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে ব্রাসেলসে৷ সিদ্ধান্ত অনুসারে, ইউরো অঞ্চলের সংকটে জর্জরিত ব্যাংকগুলোকে সরাসরি ৫০০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা প্রদান করা হবে৷ ফলে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের বাজেটে এর কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না৷ আর সহজ করে বললে, সরকারের ঋণের খাতায় এই বেলআউটের বোঝা নথিভুক্ত হবে না৷ তবে এই সহায়তার আগে ইউরো অঞ্চলের ব্যাংকগুলোর উপর নজরদারির জন্য একটি পরিষদ গঠন করতে হবে৷

ইউরো চালু নেই এমন দেশ যুক্তরাজ্য এবং পোল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের সবাই ব্রাসেলস বৈঠকে একমত হয়েছে যে, একটি জোরালো অর্থকাঠামো এবং রাজনৈতিক ইউনিয়ন গড়ে তোলা হবে৷ তবে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে বর্তমান চুক্তি সংশোধন করার প্রয়োজন হবে এবং তাতে বেশ কিছু বছর গড়িয়ে যাবে৷

এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক উল্লেখ করে ইইউ নেতারা বলছেন, ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক চাপে থাকা সরকারগুলোকে ব্যাংক বেলআউটের ফলে অতিরিক্ত ঋণের বোঝা যেভাবে সংকটের ‘দুষ্ট চক্রে' আটকে ফেলার ভয় ছিল সেটি এখন দূর হবে৷ ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হ্যারমান ফান রাম্পয় এটিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ' বলে মন্তব্য করেন৷ কারণ এর ফলে ‘ব্যাংকগুলোকে সরাসরি অর্থ সহায়তা প্রদান সম্ভব হবে' এবং এর দায় সরকারের উপর বর্তাবে না৷ বর্তমান সংকটের মুখে স্পেন ও ইটালি নিজেদের সরকারি খাত ও শ্রম খাতে কাটছাঁটের পরও যেভাবে ঋণের বোঝা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছিল – সেই প্রেক্ষিতে ব্রাসেলসের এই সিদ্ধান্তকে তাদের জন্য একটি বড় জয় বলে মনে করা হচ্ছে৷

EU-Gipfel - Angela Merkel
জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলছবি: picture-alliance/dpa

অবশ্য জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এখনও অর্থসহায়তার জন্য সংকটে থাকা দেশগুলোর খরচের খাতায় যথেষ্ট মাত্রায় সংস্কারের উপর জোর দিয়েছেন৷ ব্রাসেলসে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘আমরা পুরোপুরি আমাদের কর্মপন্থার মধ্যেই সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেছি৷ সেগুলো হলো সহায়তা, ন্যায্য বিনিময়, শর্তসাপেক্ষতা এবং নিয়ন্ত্রণ৷ ফলে আমি মনে করি আমরা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ সহায়তার ক্ষেত্রে আমাদের দর্শন ঠিকই রয়েছে যে, ন্যায্য বিনিময় ছাড়া কোন অর্থ সহায়তা নয়৷''

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসিবি'র প্রধান মারিও দ্রাগি ইইউ নেতাদের বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ইউরোপিয়ান স্টেবিলিটি মেকানিজম তথা ইএসএম নামক উদ্ধার তহবিলের মাধ্যমে ইউরো অঞ্চলের সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে আরো অর্থ সহায়তার চুক্তি একটি ভালো ফল৷ দুই দিন ব্যাপী ইইউ সম্মেলন শেষে দ্রাগি বলেন, ব্যাংকগুলোর জন্য এই পন্থায় আরো পুঁজি সরবরাহের ব্যাপারে ইসিবি'ও বলে আসছিল৷

এদিকে, অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা ব্রাসেলস বৈঠকের সিদ্ধান্তকে স্বল্পকালীন সমাধানসূত্র বলে উল্লেখ করে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন৷ কমার্সব্যাংক এর অর্থনীতিবিদ ক্রিস্টফ ভাইল আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন যে, ইএসএম এর মাধ্যমে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সরাসরি পুঁজি প্রদান এবং ঋণগ্রস্ত সরকারগুলোর বন্ড কিনতে গিয়ে কিছুদিন পরেই তহবিলে টান পড়তে পারে৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘স্প্যানিশ ব্যাংকগুলোর জন্য এখন প্রায় ১০০ বিলিয়ন ইউরো চাওয়া হচ্ছে এবং সাইপ্রাসও সাহায্য চেয়েছে৷ শীঘ্রই এরকম জরুরি সহায়তার ডাক অন্যান্য প্রান্ত থেকেও আসতে পারে৷''

তবুও ব্রাসেলস বৈঠকের সিদ্ধান্ত ইউরো বাজারে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে এবং ইউরো বাজারকে কিছুটা চাঙ্গা করেছে বলেই পুঁজি বাজারের হালখাতায় পরিলক্ষিত হয়েছে৷

এএইচ / এসবি (এপি, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য