ব্যাটারিতে চলবে রিকশা
১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৮এ বছরের শেষ নাগাদ নতুন ধরনের এই রিকশা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷
এই প্রকল্পের প্রধান মেজর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বার্তা সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, নতুন রিকশা দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে৷ দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে যাওয়া রঙিন এই বাহনের আকার-আকৃতি একই থাকবে৷ তবে চলবে রিচার্জেবল ব্যাটারিতে৷ মোবাইল সেটের মতো৷ সারারাত চার্জ দিলে দিনভর অনায়াসেই চলবে এটি৷ এই প্রযুক্তির রিকশা চালু হলে লাখ লাখ শ্রমিকের জীবিকার উপর কোন রকম আঘাত না হেনেই দেশের ভয়াবহ যানজট থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি৷
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ রিকশা রয়েছে৷ যার অধিকাংশই চলে রাজধানী ঢাকার রাস্তায়৷ রিকশা চালকদের প্রায় সবাই জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে এসেছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে৷ রোদ, বৃষ্টিতে হাড় ভাঙ্গা খাটুনি হলেও তিন চাকার এই বাহনই লাখো মানুষের দুমুঠো খাবার যোগানোর ভরসা৷
এই রিকশা চালানোকে অমানবিক কাজ বলে সমালোচনা করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷ বহুবার এই রিকশা উঠিয়ে দেয়ারও চেষ্টা হয়েছে৷ কিন্তু কাজ হয়নি৷
নতুন মডেলের এই রিকশার দাম পড়বে ৩০ হাজার টাকা৷ যা প্রচলিত রিকশার দামের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ৷ কিন্তু এই রিকশার গতি হবে বর্তমানের চেয়ে চার গুণ৷ তাই রিকশার দাম সহজেই পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে মন্তব্য এর উদ্ভাবকদের৷ কারণ এখন দিনে ১২ ঘন্টা শ্রম দিয়ে রিকশাচালক যে আয় করে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আয় করতে পারবে বৈদ্যুতিক রিকশা চালিয়ে৷ আর তাতে রিকশা এবং গ্যারেজ মালিকেরও লাভ হবে বেশি৷
ব্যাটারি চালিত নতুন এই রিকশা দেশের পরিবহন সমস্যা সমাধানে বাস্তবসম্মত এবং খুবই সময়োপযোগী উপায় বলে মনে করছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা৷ তবে এজন্য প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা৷
২০০৪ সালে ঢাকা শহরের যানজট নিরসনের জন্য প্রধান সব সড়ক থেকে রিকশা উঠিয়ে দেয়ার প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্ব ব্যাংক৷ কিন্তু সমীক্ষায় দেখা যায়, এর ফলে বেকার হয়ে পড়বে দুমুঠো খাবারের আশায় ঢাকা শহরে আসা অসংখ্য মানুষ৷ আর এ কারণে ওই প্রকল্প বাতিল করে বিশ্ব ব্যাংক৷