1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে নতুন হাতিয়ার

মারটিন রিবে / এসবি৫ জুলাই ২০১৪

মানুষ হাসপাতালে যায় শরীর সারাতে৷ সেখানে গিয়েই যদি নতুন জীবাণু শরীরে ঢোকে এবং কোনো ওষুধ কাজে না লাগলে কী করা যায়! এমন মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া খতম করতে নতুন এক প্রক্রিয়ার পথে এগোচ্ছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/1CVZa
ছবি: picture-alliance/OKAPIA KG, Germany

ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে নতুন হাতিয়ার

অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ যে সব জীবাণুর ক্ষতি করতে পারে না, হাসপাতালে সেগুলি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ জীবাণু কোথায় নেই! বিশেষ করে ঠিকমতো হাত না ধুলে সেগুলি আরও ছড়িয়ে পড়ে৷ শুধু জার্মানিতেই বছরে এমন রেজিস্টেন্ট ব্যাকটেরিয়ার কারণে আনুমানিক চল্লিশ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে৷ এই প্রবণতা আরও বাড়ছে৷ ড্যুসেলডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাইকে ব্র্যোৎস-ওস্টারহেল্ট বলেন, ‘‘রেজিস্টেন্ট বা প্রতিরোধক বেড়েই চলেছে৷ এমন মাল্টি-রেজিস্টেন্ট ব্যাকটেরিয়া-কে আমরা এমআরএসএ নামে চিনি৷ এরা খুবই বিপজ্জনক ও শক্তিশালী এবং বিশেষ করে হাসপাতালের মাধ্যমে চারিদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে৷''

ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে নতুন হাতিয়ার

এক গবেষক দল সম্প্রতি এমন এক নতুন অ্যান্টিবায়োটিক-এর কাজের বিশ্লেষণ করেছে, যা এমনকি মাল্টি-রেজিস্টেন্ট ব্যাকটেরিয়াও মেরে ফেলতে পারে৷ আডেপ নামের এই প্রাকৃতিক ছোট আকারের প্রোটিন মলিকিউল অনেক রেজিস্টেন্ট ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে৷ ড. সাস বলেন, ‘‘আডেপ এক প্রাকৃতিক উপাদান, যা ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি৷ তারা আবার উৎসের আশেপাশে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে৷''

গবেষকদল তাই এই অ্যান্টিবায়োটিক-এর কার্য-প্রক্রিয়া খুঁটিয়ে দেখছেন৷ প্রথমেই জানা গেছে, যে আডেপ ব্যাকটেরিয়ার কোষের মধ্যে এমন একটি প্রোটিন ধ্বংস করে দেয়, যা কোষের বংশবৃদ্ধি ঘটায়৷ ড. সাস বলেন, ‘‘এখানে যেমনটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের প্রোটিন সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার কোষ-বিভাজন স্তরে, অর্থাৎ মাঝখানে থাকে৷ আমরা ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে আডেপ ঢুকিয়ে দিই৷ এর ফলে বংশবৃদ্ধির প্রোটিন আর সেই স্তরে থাকতে পারে না৷ তখন কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে, কোষ মরে যায়৷''

কিন্তু এই প্রক্রিয়া ঠিক কী ভাবে ঘটে? সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার কোষের মধ্যে সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া ঘটায়৷ এডিইপি তা না করে ব্যাকটেরিয়ার সার্বিক মেটাবলিজমের উপর প্রভাব ফেলে৷ এমন প্রোটিন নির্গত হয়, যা মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া ঘটায়৷

বিশেষ এই প্রোটিন-এর নাম ক্লিপ-পি৷ সুস্থ ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে সেটি সহায়ক প্রোটিনের সঙ্গে মিলে ত্রুটিপূর্ণ প্রোটিন রিসাইকেল করে৷ খারাপ প্রোটিনগুলি টুকরো করে ফেলা হয়৷ এই রিসাইক্লিং-এর মাধ্যমে কোষের মধ্যে বেশি বর্জ্য প্রোটিন তৈরি হতে পারে না৷

এই আডেপ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ঢোকালে সেটি ক্লিপ-পি-র সঙ্গে জুড়ে যায়, তার আকারও বদলে যায়৷ অধ্যাপক ব্র্যোৎস-ওস্টারহেল্ট বলেন, ‘‘আডেপ ক্লিপ-পি-র স্বাভাবিক অবস্থা পুরোপুরি বদলে দেয়৷ তখন সে আর তারা স্বাভাবিক সহযোগীর সঙ্গে কাজ করতে পারে না, তার কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না৷ ফলে সেটি মারণাত্মক অস্ত্র হয়ে ওঠে৷''

আডেপ এমন অনেক রেজিসটেন্ট ব্যাকটেরিয়া-কে কাবু করে, যারা কান, ফুসফুস বা হৃদযন্ত্রের পেশির ক্ষতি করে৷ ভবিষ্যতেও যাতে আডেপ নির্ভরযোগ্যভাবে বিপজ্জনক জীবাণু ধ্বংস করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে নতুন রেজিসটেন্ট তৈরি বন্ধ করতে হবে৷ অন্য অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে তা মেশালে চলবে না৷ অধ্যাপক ব্র্যোৎস-ওস্টারহেল্ট বলেন, ‘‘আপাতত আমরা এমন আদর্শ সহযোগীর খোঁজ করছি, যার সঙ্গে কাজ করলে হাসপাতালে আডেপ-এর কোনো প্রতিরোধক তৈরি হবে না৷''

পশুপাখির উপর আরও পরীক্ষা চালাতে হবে, যাতে তারপর মানুষের উপরেও আডেপ-এর পরীক্ষা সম্ভব হয়৷ এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফল হলে তখনই এডিইপি ওষুধ হিসেবে বাজারে আনার অনুমতি পাওয়া যাবে৷

বিশেষ ঘোষণা: এই সপ্তাহের অন্বেষণ কুইজে অংশ নিতে ক্লিক করুন এখানে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য