1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ হচ্ছে বার্লিনের ব্যালে কোম্পানি

১৮ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যের শহর হিসেবে পরিচিত শহর বার্লিন৷ সেখানকার স্টেট ব্যালে কোম্পানিও ‘ডাইভার্সিটি' ও আধুনিকতার মতো বিষয়কে আরো গুরুত্ব দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4evcQ
Euromaxx Still / Staatsballett
ছবি: DW

নতুন পরিচালক নানাভাবে সেই চ্যালেঞ্জ কার্যকর করার চেষ্টা করছেন৷

বার্লিনের স্টেট ব্যালে কোম্পানি প্রথা ভেঙে ক্লাসিক ব্যালে নৃত্য নতুন রূপে তুলে ধরে৷ চলতি মরসুমে নতুন স্বাদের দুটি কোরিওগ্রাফির গীতিনাট্যের মাধ্যমে সেই প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতধর্মী ও আধুনিক প্রবণতা ধরে রেখেছে৷

নতুন শিল্প নির্দেশক ক্রিস্টিয়ান স্পুক বলেন, ‘‘অত্যন্ত সৃজনশীল কোম্পানিই আমার স্বপ্ন৷ সব বিশ্ববিখ্যত কোরিওগ্রাফাররা আনন্দের সঙ্গে আমাদের কাছে এসে সৃষ্টির কাজ করবেন, সেটাই আমি চাই৷ ব্যালে ও নৃত্যের সব সম্ভাবনা আমরা দেখিয়ে দিতে চাই৷''

জার্মানির ৫৪ বছর বয়সি কোরিওগ্রাফার ক্রিস্টিয়ান স্পুক বার্লিনের স্টেট ব্যালেতে তাজা বাতাসের ব্যবস্থা করছেন৷ জুরিখ শহরের ব্যালের প্রাক্তন এই প্রধান নতুন পথে অগ্রসর হতে চান৷ বার্লিনের ব্যালে কোম্পানিতে ২৮টি দেশের ৭৯ জন নর্তকী সক্রিয় রয়েছেন৷ ফলে এটিই জার্মানির সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও সবচেয়ে খ্যাতিসম্পন্ন ব্যালে কোম্পানি৷

দক্ষিণ আফ্রিকার লেরয় মোকগাতলে চলতি মরসুমের অন্যতম সেরা নর্তকী৷ তিনিই সেই গোষ্ঠীর প্রথম ‘নন বাইনারি' সদস্য৷ নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই অবস্থায় আসতে এবং নিজেকে নন-বাইনারি হিসেবে আবিষ্কার করতে বেশ কিছু সময় লেগেছে৷ আমার মতে, বিশেষ করে নর্তকী হিসেবে আমরা এমন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিতে থাকতে চাই, যেখানে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, যেখানকার সংস্কৃতি সত্যি আমাদের ক্ষমতার পরিপূরক হয়৷ এ ক্ষেত্রে আস্থাও বড় বিষয়৷ পরিচালকের সত্যি বড় স্বপ্ন থাকা জরুরি৷''

সেই ‘ভিশন'-এর আওতায় লেরয়কে এমন চরিত্র দেওয়া হয়, যা চিরায়ত ব্যালের সঙ্গে খাপ খায় না৷

জার্মানির বৈচিত্র্যের শহরে ব্যালে

এমন বৈচিত্র্যে ভরা গোষ্ঠীর আর এক সদস্য হলেন ইরানি-সুইডিশ নর্তকী ভিভিয়ান আসাল কুনাভার্ড৷ তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে বার্লিন স্টেট ব্যালেতে নাচছেন৷ সেখানে তিনি নিজস্ব সত্তা বজায় রাখতে পেরে খুবই সন্তুষ্ট৷ ভিভিয়ান বলেন, ‘‘সোভাগ্যবশত আমার উপর মানিয়ে নেওয়ার তেমন চাপ ছিল না৷ আমার সত্যি কিছুটা আত্মবিশ্বাস আছে৷ আমার মনে হয় আমিও সে সব কাজ করতে পারি৷ আমাকে কেমন দেখতে, তাতে কিছু এসে যাওয়া উচিত নয়৷''

২০২০ সালে বার্লিন স্টেট ব্যালে গোটা বিশ্বের সংবাদ শিরোনামে স্থান পেয়েছিল৷ এক কৃষ্ণাঙ্গ নর্তকী বলেছিলেন, নির্দিষ্ট চরিত্রের জন্য নাকি তাঁর ত্বকের রং কিছুটা উজ্জ্বল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷

নতুন নেতৃত্ব টলারেন্স ও ডাইভার্সিটির মতো মূল্যবোধ শুধু শূন্য প্রতিশ্রুতি হিসেবে না রেখে কার্যক্ষেত্রে সেই মূল্যবোধ প্রয়োগ করতে চায়৷ ক্রিস্টিয়ান স্পুক বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছি৷ প্রত্যেকেরই ভিন্ন পরিচয়, ভিন্ন যৌন অভিমুখিতা, ভিন্ন ধর্ম রয়েছে৷ নৃত্যের ভাষায় সবকিছু সুন্দরভাবে চলে৷ আমার মতে ‘ডাইভার্সিটি' বিষয়টি বার্লিনের সঙ্গে অত্যন্ত মানানসই৷ আমি অন্য কোনো শহর চিনি না, যেখানে এত বৈচিত্র্য রয়েছে৷ এই শহরের জন্য বৈচিত্র্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ বার্লিনের ব্যালে কোম্পানি হিসেবে আমরা এভাবেও শহরের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই৷''

অন্য কোনো ক্লাসিকাল ব্যালে কোম্পানির ঝুলিতে বার্লিন স্টেট ব্যালের মতো এত প্রোডাকশন নেই৷ সোয়ান লেক ও ওনেজিনের মতো রূপকথার ব্যালে থেকে শুরু করে ‘মেসা দা রেকুইয়েম' ও ‘বোভারি'-র মতো সমসাময়িক কাহিনিও সেখানে মঞ্চায়ন করা হয়৷ গুস্তাভ ফ্লোবার-এর উপন্যাস অবলম্বনে ক্রিস্টিয়ান স্পুক সর্বশেষ প্রোডাকশন সাজিয়েছেন৷

ক্রিস্টিয়ান স্পুক পূর্ণ অঙ্গীকারের সঙ্গে সমসাময়িক প্রেক্ষাপট ও সাফল্যের ভিত্তিতে বার্লিন স্টেট ব্যালেকে ভবিষ্যতের দিশায় নিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন৷

মেগিন লেই/এসবি