‘বিলবাও’ কেন যাবেন?
অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের তীরে পাহাড়বেষ্টিত একটি শহর উত্তর স্পেনের বিলবাও৷ বাস্ক ঐতিহ্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এ শহরকে দিয়েছে অনন্যতা৷ এছাড়াও গুগেনহাইম জাদুঘর দেখতে অসংখ্য পর্যটক প্রতি বছর আসেন বিলবাও ভ্রমণে৷
‘গুগেনহাইম জাদুঘর’
১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু হয় গুগেনহাইম জাদুঘরের৷ ক্যানাডার স্থপতি ফ্র্যাঙ্ক গেরির অনন্য ডিজাইনে তৈরি এ জাদুঘর নেরভিয় নদীর তীরে অবস্থিত৷ টিটানিয়াম, বেলেপাথর আর কাঁচ দিয়ে তৈরি এ জাদুঘর এরপর থেকেই হয়ে ওঠে বিলবাও-এর ল্যান্ডমার্ক৷
রেলওয়ে স্টেশন
‘আবান্দো ইন্দালেসিও প্রিয়েতো’ হলো বিলবাও-এর প্রধান রেল স্টেশন যেখানে ২৫০ স্কয়ার মিটার গ্লাস পেইন্টিংয়ে আঁকা আছে বাস্কদের ইতিহাস৷ ছবিতে যে আবক্ষ মূর্তিটি দেখা যাচ্ছে তা প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও সমাজতান্ত্রিক ইন্দালেসিও প্রিয়েতোর, যিনি স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময় নির্বাসনের দণ্ড এড়াতে মেক্সিকোতে পালিয়ে যান৷
মেট্রো স্টেশন
টিউবাকৃতির গ্লাস টানেলের ভেতর দিয়ে সিটি সেন্টারকে অন্যান্য এলাকার সাথে সংযুক্ত করছে বিলবাও শহরের মেট্রো বা পাতালরেল৷ এর ডিজাইনার ব্রিটিশ স্থপতি নরম্যান ফস্টারের নামে এই গ্লাস টানেলের নামকরণ করা হয়েছে ‘ফস্তেরিতোস’৷ বিলবাও-এর বিমানবন্দর থেকে খুব সহজেই আপনি গুগেনহাইম জাদুঘরে পৌঁছে যেতে পারেন৷
‘সুবিৎসুরি’ ব্রিজ
স্প্যানিশ স্থপতি সান্তিয়াগো কালাত্রাভার নকশায় নির্মিত এই সাদা রঙের সেতুটি বিলবাও-এর অন্যতম সুন্দর ব্রিজ৷ ১৯৯৭ সালে পথচারি চলাচলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে এ ব্রিজ৷ এর পৃষ্ঠভাগ কাঁচের তৈরি, যদিও বৃষ্টিতে যাতে পিছল না হয়ে যায় তার জন্য এর ওপর ল্যামিনেট করা হয়েছে৷
পলিশ্ড ব্ল্যাক ডায়মন্ড
বাস্ক হেল্থ ডিপার্টমেন্টের হেডকোয়ার্টারটি কাঁচ দিয়ে এমনভাবে প্রস্তুত, যাতে তা অনেকটা পলিশ্ড ব্ল্যাক ডায়মন্ডের মতো দেখায়৷ এই দালানটি কোলাহল ও সৌরশক্তি শোষণ করতে পারে৷ ২০০৮ সালে নির্মাণের পরপরই বিলবাও-এর অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয় এটি৷
‘আস্তে নাগুসিয়া’ উৎসব
ন’দিনব্যাপী এ উৎসব বাস্ক ঐতিহ্যের অন্যতম প্রদর্শনী৷ এ উৎসবের সময় রাস্তা, চত্ত্বরজুড়ে মানুষ নাচে৷ উৎসবে থাকে পানাহারের বিশাল আয়োজন, প্রদর্শিত হয় অতিকায় সব পাপেটও ৷ আগামী বছর আগস্টের ১৮ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসব৷
ন্যাশনাল পার্ক
‘পিকোস দে ইউরোপা’ জাতীয় উদ্যান এই বিলবাও শহর থেকেই শুরু৷ ১৯১৮ প্রতিষ্ঠিত স্পেনের এ ন্যাশনাল পার্কটি প্রায় ২ হাজার মিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত৷ হাইকিংয়ের জন্য আদর্শ এ উদ্যানে রয়েছে অন্তত ২০০টি উঁচু-নীচু শৃঙ্গ৷ সান্তিয়াগো দে কমপোস্তেলায় সেইন্ট জেমসের পূণ্যভূমি দর্শন করতে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এ উদ্যানের ভেতর দিয়েই সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়৷
অ্যাটলান্টিক উপকূল
উত্তর-পূর্ব বিলবাও-এ প্রায় ৩০ কিলোমিটার জুড়ে থাকা অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলটি কখনো পাথুরে, কখনো বা শান্ত৷ দু’শোরও বেশি ধাপ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় উপকূলবর্তী খ্রিষ্টীয় উপাসনালয় সান খুয়ান দে গাস্তেলুগাচে৷
সন্ধ্যার আলোকসজ্জা
সন্ধ্যা নাগাদ মহাসাগরের তীর থেকে বিলবাও-এর এক নম্বর মেট্রো লাইন ধরে মাত্র ৩০ মিনিটেই পৌঁছে যেতে পারেন একেবারে শহরের প্রাণকেন্দ্রে৷ এরপর হাঁটতে পারেন নদীর তীর ধরে৷ অন্ধকারে গুগেনহাইম জাদুঘর ও হোয়াইট ব্রিজের জাদুকরী আলোকসজ্জা মুগ্ধ করবে আপনাকে৷