1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিপর্যয়ের পর মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর উপায়

ক্যার্স্টিন শ্রাইবার/এসবি১৭ মে ২০১৪

মাঝে-মধ্যেই মোবাইল ফোন সাড়া দেয় না৷ পর্দায় দেখা যায় ‘নেটওয়ার্ক নেই’৷ বিরক্ত হওয়া ছাড়া তখন কীই বা করার থাকে! কিন্তু বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়ের পর মোবাইল সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে৷

https://p.dw.com/p/1C19M
ছবি: Fotolia/frog

গত নভেম্বরে ফিলিপাইন্সে ‘হাইয়ান' ঘূর্ণিঝড়ের ফলে অবকাঠামো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলো৷ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে এমনকি এমারজেনন্সি কল করাও সম্ভব ছিল না৷

ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে টোবিয়াস সিমন ঠিক এমন পরিস্থিতিতে তাঁর কোয়াড্রোকপ্টার দিয়ে প্রাথমিক সাহায্য নিশ্চিত করতে চান৷ ইলমেনাউ শহরের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি তাঁর টিমের সঙ্গে এমন সব হেলিকপ্টারের মডেল তৈরি করছেন, যেগুলি খারাপ হয়ে যাওয়া ওয়্যারলেস যোগাযোগ মেরামত করতে পারে৷ তারা নিজেরাই মোবাইল টাওয়ারে ত্রুটি খুঁজে বের করে কাজ সারতে পারে৷ টোবিয়াস বলেন, ‘‘বিপর্যস্ত এলাকায় আমাদের যন্ত্র দিয়ে অনেক কিছু করা সম্ভব৷ একদিকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কাজ, অর্থাৎ মোবাইল নেটওয়ার্ক পয়েন্টের খোঁজ করা৷ তারপর পরিষেবায় ফাঁক থাকলে তা ভরাট করা৷ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা ও মেরামত করার কাজও রয়েছে৷''

এই লক্ষ্যে টোবিয়াস ও তাঁর টিম কপ্টারে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক বসিয়েছেন, যা মোবাইল নেটওয়ার্কের ঠিক আগের পর্যায়৷ তাছাড়া কপ্টারকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হয়েছে, যাতে কখন আকাশে উড়ে নেটওয়ার্কের মেরামতির কাজ করবে, তা সে নিজেই স্থির করতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘কোয়াড্রোকপ্টারের বিশেষত্ব হলো, তার পুরোটাই লিনাক্স সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে তৈরি৷ যন্ত্রের স্থিতিশীলতা, ন্যাভিগেশন থেকে শুরু করে একাধিক কপ্টারের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ – সবকিছু কেন্দ্রীয়ভাবে করা হয়৷ এর মধ্যে অবশ্যই যোগাযোগের বিষয়টাও রয়েছে৷''

একটি পরীক্ষায় দেখানো হচ্ছে, কপ্টার খারাপ হয়ে যাওয়া নেটওয়ার্ক কী ভাবে আবার চালু করে৷ চারটি ছোট নেটবুকের মাধ্যমে একটা চালু নেটওয়ার্কের সিমুলেশন করা হয়৷ প্রত্যেকটি নেটবুক টাওয়ারের কাজ করে৷ বিপর্যস্ত এলাকায় একটি টাওয়ার খারাপ হয়ে গেলে বেস স্টেশন জানিয়ে দেয়, নেটওয়ার্কে গণ্ডগোল হচ্ছে৷ কপ্টার সেই খবর পেয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেরামতির প্রোগ্রাম চালু করে দেয়৷ মিনি হেলিকপ্টার তখন এদিক-ওদিক ঘুরে খারাপ টাওয়ার চিহ্নিত করে৷ টোবিয়াস বলেন, ‘‘খোঁজার কাজ শেষ হলে কপ্টার অঙ্ক কষে বার করে, নেটওয়ার্কে কোথায় ফাঁক তৈরি হয়েছে৷ তারপর ঠিক সেই জায়গার উপরে গিয়ে স্ক্যান মোড থেকে অ্যাড-হক মোড-এ চলে যায়৷''

অর্থাৎ কপ্টার তখন খারাপ হয়ে যাওয়া নেটওয়ার্ক টাওয়ারের কাজ করে৷ ওয়াইফাই প্রযুক্তির সাহায্যে সে পাশের টাওয়ারের সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে৷ ফলে ফাঁক ভরাট হয়ে নেটওয়ার্ক আবার পুরোপুরি চালু হয়ে যায়৷

কিন্তু কপ্টারের সমস্যা হলো, সে বেশিক্ষণ উড়তে পারে না৷ সবচেয়ে হাল্কা মডেলও মাত্র ২০ মিনিট আকাশে থাকতে পারে৷ মোবাইল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কাজ করলে সেই সময় আরও কমে যায়৷ বিপর্যস্ত এলাকার জন্য এই সময় বড় কম৷ তবে এই সময়সীমা বাড়ানোর উপায়ও রয়েছে৷ টোবিয়াস বলেন, ‘‘যেমন আশেপাশে কোনো বাড়ির ছাদ বা উঁচু কোনো জায়গায় কপ্টার নামতে পারে৷ তারপর প্রপেলার সহ অনেক কিছু বন্ধ করে দিতে হবে৷ তখন শুধু কপ্টারের কম্পিউটার কাজ করবে, যোগাযোগের কাজ করবে৷ এটা করলেই কপ্টারের কাজের মেয়াদ কয়েক দিন পর্যন্ত বেড়ে যাবে৷''

কোয়াড্রোকপ্টারকে আরও কার্যকর করে তুলতে ভারত, পাকিস্তান ও ইউক্রেনের বিশেষজ্ঞরাও টোবিয়াস সিমন-এর সঙ্গে কাজ করছেন৷ মাস ছয়েকের মধ্যেই বেশ কয়েকটি মডেল হেলিকপ্টার পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে৷ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন পড়বে না৷ অ্যান্টেনার মাধ্যমেই তাদের মধ্যে সংলাপ চলবে৷ এক বছর পর কপ্টার-বাহিনী মোবাইল নেটওয়ার্ক মেরামতির কাজও করতে পারবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য