বাড়ি ছাড়লেন খালেদা, প্রতিবাদে রবিবার দেশজুড়ে হরতাল
১৩ নভেম্বর ২০১০শনিবার বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ পাহারায় বাড়ি ছাড়েন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া৷ তিনি প্রথমে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে যান, সেখান থেকে রাতে যান বারিধারায় তাঁর ভাই সাঈদ ইস্কান্দারের বাসায়৷ সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, খালেদা জিয়াকে জোর করে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে৷ ওই সময় তাঁর বাড়ি ভাঙচুরও হয়৷
খন্দকার দেলোয়ার হোসেন জানান, খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে বিএনপি৷ এই ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সামনে হাজির হননি৷ তবে রাতে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তাঁকে জোর করে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে৷ এসময় তাঁর বেডরুমের দরজা ভাঙচুর এবং তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়৷ তবে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বেগম খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন৷ তাঁকে জোর করে উচ্ছেদ করা হয়নি৷
এর আগে ভোররাত থেকে খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হবে এই খবরে ক্যান্টনমেন্টের প্রবেশ পথ জাহাঙ্গির গেটে ভিড় করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা৷ এরপর দিনভর রাজধানীসহ সারাদেশে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মিছিল হয়৷ বিক্ষোভকারীরা রাজধানীতে অন্তত: ২০টি যানবাহনে আগুন দেয় এবং ভাঙচুর করে৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী৷
সামরিক অভ্যুত্থানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়া নিহত হওযার পর ইজারা দলিলের মাধ্যমে ১৯৮১ সালের ১৩ই জুন খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের ১৬৫ কাঠা জমির ওপর বাড়িটি দেওয়া হয়৷২০০৯ সালের ২০শে এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেয় সামরিক ভূমি ও ক্যন্টনমেন্ট অধিদফতর৷ পরে আরো দু'বার নোটিশ দেওয়া হয়৷ খালেদা জিয়া ওই নোটিশকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে নোটিশকে বৈধ বলে ঘোষণা করে৷ একমাসের মধ্যে তাঁকে ক্যন্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ারও নির্দেশ দেয় আদালত৷ এই এক মাস শেষ হয়ে যায় শুক্রবার৷ খালেদা জিয়া এর বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল' করেছেন৷ কিন্তু বাড়ি ছাড়ার আদেশের ওপর কোন স্থগিতাদেশ পাননি৷ ৩৮ বছর পর তিনি এই বাড়ি ছাড়লেন৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়