বার্লিনের নতুন স্ট্রিট আর্ট মিউজিয়াম
স্ট্রিট আর্ট, মানে দেয়াল অঙ্কণ৷ বার্লিনের সংগ্রহশালাটির নাম ‘আর্বান নেশন’, যেখানে সমসাময়িক নাগরিক শিল্পকলা প্রদর্শিত হয়ে থাকে৷
বাড়িটাই চিত্রপট
‘আর্বান নেশন মিউজিয়াম’ তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের মে মাসে৷ বার্লিনের শ্যোনেব্যার্গ এলাকার প্রায় ১৩০ বছরের পুরনো একটি বাড়ি নতুন করে সাজায় জার্মান স্থাপত্য স্টুডিও ‘ক্রাফ্ট’৷ স্ট্রিট আর্ট শুধু বাড়ির ভিতরেই নয়, বাড়ির গায়েও৷ বাইরের দেয়ালের কোনো কোনো অংশ সরানো যায়, কাজেই সেখান থেকে ‘দেয়াল অঙ্কণ’ মিউজিয়ামের ভিতরে নিয়ে যাওয়া যায় – পরিবর্তে আসে নতুন স্ট্রিট আর্ট৷
বাড়ির ভিতরেও যেন রাস্তা!
দু’তলা উঁচু মিউজিয়ামের সব কক্ষের ভিতর বা উপর দিয়ে চলে গেছে দর্শকদের জন্য একটি সেতু বা বারান্দা, যেখান থেকে লম্বা দেয়ালগুলোর গায়ে প্রদর্শিত সুবিশাল ছবিগুলি দেখা সম্ভব৷
ব্রিটিশ শিল্পীর প্রেরণা: জাপানি গেইশা
গেইশাদের জাপানি বাইজি বলা যেতে পারে, কেননা, তাঁদের মূল কাজ হলো, পুরুষদের মনোরঞ্জন৷ ব্রিটিশ শিল্পী ‘হাশ’ তাঁর গেইশাদের প্রতিকৃতিগুলি সৃষ্টির জন্য গ্র্যাফিটি, কোলাজ, স্টেন্সিল, সব ধরণের পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন৷
বার্লিন মানে হোটেলের পর হোটেল...
মারিয়ুস ভারাস বার্লিনের স্কাইলাইনকে সেভাবেই দেখিয়েছেন৷ ওয়ারশ বা ডানজিগ থেকে শুরু করে রিও ডি জানেইরো অবধি নানা শহরের দেয়াল ও বাড়ির গায়ে এঁকেছেন এই পোলিশ বংশোদ্ভূত শিল্পী৷ নামকরা থিয়েটার কিংবা রেলওয়ে স্টেশন, সবই হারাতে বসেছে এই হোটেলের ভিড়ে৷
ধূসর পৃথিবী আসলে রঙিন...
সেটাই হয়তো বলতে চেয়েছেন নরওয়ের স্টেনসিল শিল্পী মার্টিন হোয়াটসন৷ শহরের গ্রাফিতি, পুরনো বাড়ি, পলেস্তারা খসা দেয়াল, এ সবের মধ্যে বা পিছনে সৌন্দর্য খুঁজে পান হোয়াটসন৷ তাঁর ছবি সাধারণত শুরু হয় ছাই রঙ দিয়ে, পরে তাতে রঙের বন্যা ছোটে৷
বেড়ালের হাসি
স্ট্রিট আর্টিস্ট রন ইংলিশ তাঁর শিল্পকর্মকে বলেন ‘পপাগান্ডা’ – অর্থাৎ পপ আর্ট ও প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার সংমিশ্রণ৷ পপ বা পপুলার অর্থাৎ সাধারণের সংস্কৃতি, ও মার্গসংস্কৃতির মধ্যে তফাৎ করেন না ইংলিশ৷ ছবিতে তাঁর ‘ফেলিক্স দ্য ক্যাট’-কে নিয়ে একটি কোলাজ৷ ফেলিক্স হুলোবেড়াল মার্কিন নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের একটি কমিক চরিত্র৷
‘ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড’
ব্রিটিশ মিক্স মিডিয়া আর্টিস্ট আয়ান ফ্রান্সিস সিনেমা থেকে তাঁর প্রেরণা নেন, যার মূলমন্ত্র হলো ‘যৌনতা, মৃত্যু ও যশাকাঙ্খা’৷ কাজেই তাঁর মিডিয়া ফ্যানটাসিগুলিতে নগ্নতার দেখা পাওয়ায় আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷ অপরদিকে এই শিল্পীর দৃষ্টিতে সৌন্দর্য ও সহিংসতা পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত৷
সুপারউওম্যানের কপোলে সুপারম্যান
ক্যানাডার শিল্পী স্যান্ড্রা শেভ্রিয়ার নিঃসন্দেহে নারীবাদী৷ তাঁর ‘কেজেস’ বা ‘খাঁচা’ পর্যায়ের স্ট্রিট আর্টগুলিতে নারীর মুখ বা শরীরের উপর সুপারম্যানের মতো পুরুষালি পুরুষদের দেখা যাবে৷ কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, পুরুষদের মোহমুগ্ধ করাই নারীর একমাত্র অস্ত্র – বরং নারী এখানে বিদ্রোহী৷
নারীমুখচ্ছবি ও বার্তা
স্ট্রিট আর্টিস্ট ‘ট্যাঙ্কপেট্রোল’ পোল্যান্ড থেকে যুক্তরাজ্যে যান৷ তাঁর নারীমুখের প্রতিকৃতিগুলির মধ্যে গির্জায় মা মেরির ছবিগুলির আভাস পাওয়া যাবে, যদিও শিল্পী বিভিন্ন মডেলদের নিয়ে কাজ করেন৷ ছবির মর্ম বুঝতে গেলে জ্যোতিশ্চক্রের লেখাটি পড়তে হবে, ‘‘অন্যদের সাথে নিজের তুলনা করলে তুমি অহঙ্কারী বা তিক্ত হয়ে পড়তে পারো, কেননা, পৃথিবীতে চিরকালই তোমার চেয়ে ছোট ও তোমার চেয়ে বড় মানুষেরা থাকবে৷’’
মায়ামি সৈকতে নভশ্চর
‘দ্য লন্ডন পুলিশ’ নামের ব্রিটিশ শিল্পী গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠিত হয় বছর বিশেক আগে৷ গোষ্ঠীর শিল্পীরা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন তাঁদের সাদা, গোল-মাথা, ‘ল্যাড’ নামধারী চরিত্রগুলির জন্য৷ গোষ্ঠীতে বহু শিল্পী এসেছেন ও গেছেন, কিন্তু আদত দুই প্রতিষ্ঠাতা আজও এঁকে চলেছেন৷ আর্ট বাসেল মায়ামি আর্ট ফেয়ার-এর জন্য তারা এই নভোশ্চরের ছবিটি সৃষ্টি করেন ২০১৪ সালে৷