1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বাঙালি সমস্যা' দীর্ঘদিনের: মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গত এক সপ্তাহে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২৬০০ বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার৷ গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত চারশ'রও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2jFeY
ছবি: picture-alliance/dpa/M.Alam

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে ৫৮ হাজার রোহিঙ্গা৷ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অভিযোগ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা এআরএসএ রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে৷ তবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বলছেন, সেখানকার সেনাবাহিনী তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিতেই বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে, নির্বাচরে হত্যা করছে রোহিঙ্গাদের৷ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, ‘‘তিনটি গ্রামের ২৬২৫টি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী এআরএসএ''৷
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়েছে৷


বাংলাদেশের নাফ নদীর পাশে শরণার্থী শিবিরে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা৷ স্থানীয়দের অনেকে দয়াপরবশ হয়ে নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন কয়েকজনকে৷ ইউএনএইচসিআর এর স্থানীয় মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেখানে যে কয়টি শরণার্থী শিবির রয়েছে তাতে আর তিল পরিমাণ জায়গা নেই৷

শুক্রবার শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৬০ বছরের বৃদ্ধ জালাল আহমেদ৷ যিনি জানালেন, ‘‘২০০ মানুষ নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে তাদের গ্রামে চড়াও হয় এবং বাড়িঘর সবকিছুতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ আমরা যদি ফিরে যাই, দেখামাত্র আমাদের গুলি করবে সেনাবাহিনী৷''


মিয়ানমারের সেনা প্রধান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘রাখাইনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে তারা একটি ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন৷ ‘বাঙালি সমস্যা' একটা দীর্ঘদিনের সমস্যা, যেটা সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷''

সহিংসতার শিকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা



এদিকে, রাখাইনে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডাব্লিউএফপি সহ অনেক দাতা সংস্থা কাজ করছিল, যারা সহিংসতা শুরু হওয়ার পর তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন৷ মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র জানালেন, ‘‘মাউংদোতে শিশুরা এমনিতেই অপুষ্টিতে ভুগছিল, তাদের জন্য জরুরি খাদ্য দরকার ছিল৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের কোনোরকম খাদ্য সহায়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷''


রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে ৮০ হাজারেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছিল, যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জুলাইতে রিপোর্ট করেছিল ডাব্লিউএফপি৷ এছাড়া যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের মধ্যে অনেক নারী অন্তঃসত্ত্বা, অনেকে সেখানে গিয়ে কেবল সন্তান জন্ম দিয়েছে, কারো একেবারে ছোট সন্তান রয়েছে, তাদের অবিলম্বে খাদ্য সহায়তা না দিলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷
এদিকে, শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তাদের সতর্ক করে দিয়েছে৷ আকাশসীমা লঙ্ঘন করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ঢুকে পড়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ৷ গত ২৭ ও ২৮ আগস্ট এবং শুক্রবার মিয়ানমারের কয়েকটি হেলিকপ্টার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে৷


এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য