1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংসের মহোৎসব’

আরাফাতুল ইসলাম১৮ এপ্রিল ২০১৬

বাংলাদেশ সরকার উন্নয়নের নামের প্রকৃতি ধ্বংসের মহোৎসবে নেমেছে, এমনটাই দাবি একজন অ্যাক্টিভিস্ট৷ সুন্দরনের কাছে রামপালে এবং বাঁশখালিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাই চলছে আন্দোলন৷

https://p.dw.com/p/1IXXc
Bangladesch Demo vor dem Klimagipfel in Paris
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Abdullah

ভারতের সহায়তায় সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার৷ ক্ষমতাসীনরা মনে করে, মুসলিম প্রধান দেশটির উন্নয়নে অনেক বিদ্যুৎ প্রয়োজন৷ তাই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে তৈরির প্রাথমিক উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে৷ যদিও এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন ক্রমশ জোরালো হচ্ছে, তাসত্ত্বেও সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম৷

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রামপালে যে প্রযুক্তিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, সেই একই পদ্ধতিতে ভারতের তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ এবং উড়িষ্যায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় জনগণের বাধার মুখে সেসব উদ্যোগের একটিও সফলতার মুখ দেখেনি৷

বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্ট্যাডিসের প্রধান নির্বাহী আতিক রহমান মনে করেন, সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইস্যুতে জনগণের উদ্বেগকে উপেক্ষা করছেন৷ এমনকি সরকারের পরিবেশ বিভাগও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, জানান তিনি৷

রাজপথে সক্রিয় অ্যাক্টিভিস্টরা

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগকে আমলে নিয়ে আন্দোলনরত অ্যাক্টিভিস্টরা মনে করেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে তা পানি ও বায়ু দূষণ এবং বনের মধ্য দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দেবে৷ আর তাই রামপালের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন তারা৷ এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যতম অ্যাক্টিভিস্ট লাকি আক্তার ডয়চে ভেলেকে জানান, তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ব্যানারে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে একমাত্র ছাত্র সংগঠন হিসেবে বরাবরই ছাত্র ইউনিয়নের সরব উপস্থিতি আছে৷

তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় কমিটির ব্যানারে এ পর্যন্ত দুটি লংমার্চের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি – সাধারণ মানুষ প্রকৃতি বিনাশী এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে৷ ২০১৩ সালের লংমার্চের সময় দেখেছি, বাগেরহাটের দ্বিগরাজে সমাবেশস্থলে আগে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সাধারণ মানুষ রাস্তার দু'পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের স্বাগত জানিয়েছিল৷''

তবে বড় রাজনৈতিক দলগুলো এই আন্দোলনের সঙ্গে নিজেদের সেভাবে সম্পৃক্ত করছে না বলে জানিয়েছেন লাকি৷ তিনি বলেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে দু-একটি বক্তৃতা-বিবৃতি শোনা গেলেও এ বিষয়ে তাদের কোনো কর্মসূচি নেই৷ তারা ক্ষমতায় থাকাকালেও এধরনের জনবিরোধী প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিল৷''

লাকি আক্তার মনে করেন, ‘‘উন্নয়নে নামে প্রকৃতি ধ্বংসের মহোৎসবে নেমে পড়েছে সরকার৷ রামপাল কিংবা বাঁশখালীর মতো জনবিরোধী প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করাকেই নিজেদের ব্রত হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা৷''

অনলাইনেও চলছে প্রতিবাদ

লাকি আক্তারদের রাজপথের আন্দোলনকে অনলাইনে সহায়তা করছে একটি ফেসবুক পাতা৷ ২০১৩ সাল থেকে সক্রিয় ‘‘সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই না'' পাতাটিতে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করা হচ্ছে৷ এই পাতার মডারেটর অনিরুদ্ধ কিরন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত আমার কাছে মনে হয়েছে রীতিমত নিজের পেটে নিজে ছুরি চালানোর সামিল৷''

মূলত দু'টি উদ্দেশ্য নিয়ে পাতাটি পরিচালনা করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ কিরন৷ প্রথমত, সুন্দরবন বাঁচানোর আন্দোলনকে অনলাইনে দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখা৷ আর দ্বিতীয়ত এ বিষয়ে অনলাইনে যত ডকুমেন্ট তৈরি হচ্ছে তা এক জায়গায় করে রাখা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আরেকটা বড় উদ্দেশ্য ছিল যত বেশি মানুষকে বিষয়টা জানিয়ে মাঠের আন্দোলনে মানুষকে সম্পৃক্ত করা যায়৷''

দ্য বব্স প্রতিযোগিতায় ‘সুন্দরবন বাঁচাও আন্দোলন'

ডয়চে ভেলের ‘‘দ্য বব্স – বেস্ট অফ অনলাইন অ্যাক্টিভিজম'' প্রতিযোগিতার সামাজিক পরিবর্তন বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে ‘‘সুন্দরবন বাঁচাও আন্দোলন''৷ অনিরুদ্ধ কিরন এ জন্য ডয়চে ভেলের প্রতি কৃতজ্ঞ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম এই আন্দোলনকে যেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্ধকারে রেখেছে, সেখানে জার্মান আর্ন্তজাতিক রেডিও যখন বিশ্বপরিমণ্ডলে এ রকম একটি জায়গায় আমাদের তুলে ধরেছে, তখন আসলেই আমরা হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞ৷''

দ্য বব্স প্রতিযোগিতায় সুন্দরবন বাঁচাও আন্দোলনকে ভোট দিতে ক্লিক করুন এখানে৷ খেয়াল রাখবেন, ভোট দেয়ার আগে প্রথমে ওয়েবসাইটটিতে ‘লগ-ইন' করতে হবে৷ আর ‘লগ-ইন' অপশন পাবেন সাইটটির উপরের দিকে৷ সেখানে থাকা ফেসবুক বা টুইটার বাটনে ক্লিক করে লগ-ইন করুন৷ এরপর ‘সামাজিক পরিবর্তন' বিভাগ এবং ‘সুন্দরবন বাঁচাও আন্দোলন' বাছাই করে টিপে দিন ভোট বাটন৷ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার ভোট দেয়া যায়৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান