বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালি সেই দিনগুলি
তখনো ফুটবলই ছিল দেশের প্রধান খেলা৷ ফুটবল ম্যাচে দর্শক উপচে পড়া গ্যালারি দেখে কেউ অবাক হতো না৷ আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের দিনটি যেন ছিল অঘোষিত এক জাতীয় দিবস৷ ছবিঘরে থাকছে বাংলাদেশের ফুটবলের সেসব আলোকোজ্জ্বল দিনের কথা৷
সালাউদ্দীন ও আবাহনী
এক সময় ঢাকা লিগ ছিল দেশের ফুটবলের প্রাণ আর আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ছিল প্রাণভ্রমরা৷ দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলেও এই দুটি ক্লাব ছিল সমীহ জাগানো নাম৷ ওপরে স্বর্ণ যুগের আবাহনী ক্রীড়া চক্রের একটি ছবি৷ পেছনের সারিতে (ডান থেকে দ্বিতীয়) দেখা যাচ্ছে কাজী সালাউদ্দিনকে৷ বাফুফের বর্তমান সভাপতি সালাউদ্দিন তখন এশিয়ার ফুটবলেরও উজ্জ্বল নাম৷ দেশের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে হংকংয়ের পেশাদার লিগে খেলেছেন তিনি৷
কলকাতার মাঠ কাঁপাতেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা
এখন যা অবস্থা তাতে বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার কলকাতায় খেলতে যাবেন এ কথা ভাবাই যায় না৷ অথচ এক সময় বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় কলকাতা লিগে দাপটের সঙ্গেই খেলেছেন৷ তাঁদের মধ্যে সবার আগে বলতে হবে প্রয়াত মোনেম মুন্নার কথা (ছবিতে যাঁর পায়ে বল)৷ বাংলাদেশ জাতীয় দল ও আবাহনী ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড় তিন মৌসুম (১৯৯১, ১৯৯৩ ও ১৯৯৫) খেলেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে৷ ওই তিনবারই কলকাতা লিগ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল৷
বছর জুড়ে মাঠে থাকত ফুটবল
ক্রিকেটের জোয়ার শুরুর আগ পর্যন্ত ফুটবলই ছিল বাংলাদেশের প্রধান খেলা৷ শহরে, গ্রামে-গঞ্জে মাঠে-মাঠে খেলা হতো ফুটবল৷ গ্রীষ্মের বিকেলে গরমে ঘামতে ঘামতে প্রিয় দলের সমর্থনে চেঁচিয়ে স্টেডিয়াম সরগরম রাখত দর্শক৷ বর্ষায় ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে, কাদায় মাখামাখি হয়ে আনন্দে ভাসতো সব বয়সের ফুটবলামোদী৷ ঢাকায় শীতের রাতেও ফ্লাড লাইটের আলোয় হতো ফুটবল ম্যাচ আর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট৷
যখন পালিত হতো ‘আবাহনী-মোহামেডান দিবস’
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের দিনে গ্যালারি তো দর্শকে ভরে যেতোই, ম্যাচের দু-তিন দিন আগে থেকে সারা দেশে শুরু হতো ওই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা৷ দৈনিক আর সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে থাকতো ওই ম্যাচ নিয়ে বিশেষ আয়োজন৷ প্রতি ঘরের সামনে উড়ত আবাহনী বা মোহামেডানের পতাকা৷ আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ নিয়ে গানের ক্যাসেটও বের হয়েছে তখন৷
বাংলাদেশ যখন দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন
ওপরের ছবিটি আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের৷ তখনো ফুটবলের সুদিন শেষ হয়নি৷ ছবির দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে ডানেরটি জাতীয় দল ও মোহামেডানের সাবেক অধিনায়ক জুয়েল রানার৷ ১৯৯৯ সালে তাঁর অধিনায়কত্বেই সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ৷ এখন দেশের ফুটবলের এমন হাল যে সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে উঠতেই হিমশিম খায় বাংলাদেশ৷