ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে শুধু দুই প্রার্থীর মোকাবিলা হচ্ছে না, দুই সম্পূর্ণ ভিন্ন ভবিষ্যতের স্বপ্নের মধ্যে সংঘাত ঘটছে৷ ফলাফলের প্রভাব ফ্রান্সের সীমা ছাড়িয়ে ইউরোপ তথা গোটা বিশ্বের উপর পড়তে পারে৷
মুক্ত, উদার, ইউরোপপন্থি
মধ্যপন্থি প্রার্থী এমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেই ফ্রান্সের অবস্থান আরও মজবুত করতে চান৷ দেশের জর্জরিত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তিনি কোম্পানিগুলির উপর করের হার কমানো এবং বিপুল রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছেন৷
ইউরোপের সামনে চ্যালেঞ্জ
মারিন ল্য পেন যেভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তথা অভিন্ন মুদ্রা ইউরো ত্যাগ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা গোটা ইউরোপে স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি৷ চূড়ান্ত নির্বাচনের আগে তিনি এ বিষয়ে কিছুটা সুর নরম করলেও এমন ইউরোপ-বিদ্বেষ নিয়ে দুশ্চিন্তার বড় কারণ থেকে যাচ্ছে৷
অভিন্ন মুদ্রার সংকটের আশঙ্কা
ইউরোপের দক্ষিণের কয়েকটি দেশে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের পর ইউরো এলাকায় স্থিতিশীলতা আনতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ ইউরোপের চালিকা শক্তি হিসেবে জার্মানি ও ফ্রান্স এই কাঠামোর মূল ভিত্তি৷ ল্য পেন ক্ষমতায় এলে ইউরো এলাকায় চরম অরাজকতার আশঙ্কা রয়েছে৷
রাশিয়ার ‘কালো ছায়া’
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের জোরালো অভিযোগ নিয়ে যখন তদন্ত চলছে, তখন ইউরোপেও রাশিয়ার ‘কালো ছায়া’র বিষয়টি বারবার উঠে আসছে৷ মারিন ল্য পেন মস্কোর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি গোপন করেন না৷ এমনকি রাশিয়া থেকে আর্থিক সাহায্যও পেয়েছেন তিনি৷
অভিবাসন নিয়ে মতপার্থক্য
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের পর শরণার্থীদের ঢল নিয়ে ইউরোপের রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছিল৷ তার সুযোগ নিয়ে মারিন ল্য পেন বিদেশি, শরণার্থী ও অভিবাসীদের ক্ষেত্রে কঠোর নীতির অঙ্গীকার করেছেন৷ ফ্রান্সের সীমা আর উন্মুক্ত রাখতে চান না তিনি৷ অন্যদিকে মাক্রোঁ শরণার্থীদের প্রতি উদার নীতিতে বিশ্বাসী৷
জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ফ্রান্সের কাঠামো ঢেলে সাজাতে চান মারিন ল্য পেন৷ সামরিক জোট ন্যাটোয় ফ্রান্সের ভূমিকা থেকে শুরু করে আরও পুলিশ নিয়োগ করতে চান তিনি৷ বিদেশি বংশোদ্ভূত অপরাধীদের বহিষ্কারের পরিকল্পনাও আছে তাঁর৷ মাক্রোঁ নিরাপত্তা জোরদার করতে চাইলেও নাগরিক অধিকার খর্ব করার বিরোধী৷