1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রাংকফুর্ট বইমেলাকে কেন্দ্র করে তুরস্কে বয়কট

দেবারতি গুহ৯ অক্টোবর ২০০৮

আগামী ১৫-ই অক্টোবর জার্মানিতে শুরু হচ্ছে ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা৷ এবারের অতিথি দেশ-তুরস্ক৷ অর্হান পামুকের জন্মভূমির জন্য এটা গর্বের বিষয় তো বটেই !

https://p.dw.com/p/FXEO
ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা (ফাইল ফটো)ছবি: AP

বইমেলা শুরুর আগেই, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই পুস্তক মেলাকে কেন্দ্র করে তুরস্কে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বয়কট, ধর্মঘট আর বিক্ষোভ৷

বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা বলতেই চলে আসে জামার্নির ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার নাম৷ এই বইমেলার ইতিহাস প্রায় ৫০০ বছর পুরোনো৷ প্রতি বছর অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ আর এ-বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অতিথি দেশ তুরস্কও প্রস্তুত ফ্রাংকফুর্টে আসার জন্য৷ ২০০৬ সালে ভারতের যেমন অবস্থা হয়েছিল, তেমনি এবার তুরস্কেও পড়ে গেছে সাজ-সাজ রব৷ নারীর অধিকার থেকে শুরু করে সঙ্গীত - কোন বিষয়ই বাদ পড়েনি এই অংশগ্রহণে৷ অথচ, এরই মধ্যে কেমাল আতাতুর্কের অনুসারী একদল তুর্কি লেখক বয়কট করেছেন এই বইমেলাকে৷ তাদের বক্তব্য - ক্ষমতাসীন AK পার্টি বা প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের শাসনামলে তুরস্ক একটি রক্ষণশীল দেশে পরিণত হয়েছে৷ যার প্রভাব পড়েছে এই মেলাতেও৷

তুরস্কের অন্যতম সাহিত্য-সমালোচক ফ্যুসুন আকাটলি এর কথায় : এর্দোয়ানের রক্ষণশীল সরকারের পক্ষে তুরস্কের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা সম্ভব নয়৷ গত ৮০ বছর ধরে তুরস্কে সব রকম আধুনিকতার অবসান ঘটিয়েছে এই দলটি৷ এরা ধর্মীয় ইস্যুগুলিকে কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারে নি৷ তাই এরা যখন কোন আন্তর্জাতিক বইমেলাতে অংশ নেওয়ার মতো একটি সৃজনশীল কাজে যুক্ত হয়, তখন তার সঙ্গে আমি কখনই নিজেকে জড়িত করতে পারি না৷

১৯৫০-এর দশক থেকে রাজনীতিতে ধর্মের ভূমিকা তুরস্কে একটি বিতর্কিত ইস্যু৷ এমনকি তুরস্কের সামরিক বাহিনী, যারা নিজেদেরকে কেমালবাদের রক্ষী বলে মনে করে, তারা ১৯৬০, ১৯৭১, ১৯৮০ এবং ১৯৯৭ সালে মোট চারবার তুরস্কের রাজনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে হস্তক্ষেপ করেছে৷ তাই দেশের বুদ্ধিজীবীদের এহেন ধর্মঘটে হয়ত অবাক হওয়ার কিছুই নেই৷

কিন্তু, তুরস্কের সর্বস্তরের লেখক ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় অংশগ্রহণের এই বিষয়টিকে নিয়ে সরকার-বিরোধী ইস্যু তৈরী করতে চান না৷ যেমন বলেন লেখক আহমেট উমিট : AK পার্টি তো আর ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার আয়োজন করে নি৷ সুতরাং, এ-ধরনের বয়কটের কোন অর্থ নেই বলে আমি মনে করি৷ প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লেখক, প্রকাশক, দর্শক, সাংবাদিকসহ আরও অনেকে এই আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলায় অংশগ্রহণ করেন৷ তাই আমার মতে বিশ্ব দরবারে নিজেদের সংস্কৃতি, সাহিত্য এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরা তুরস্কের কাছে এটা একটি অন্যতম সুযোগ৷

কেমালপন্থীরা অবশ্য এ-যুক্তি মেনে নিতে রাজি নন কিছুতেই৷ তাদের কথায়, একটি আন্তর্জাতিক বইমেলায় কোন কোন প্রকাশক অংশ নেবেন, কি ধরনের বিষয় সেখানে আলোচিত হবে, কারা সেখানে প্রতিনিধিত্ব করবেন - সবটাই নির্ভর করে সে দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের উপর৷ তাই এই অংশগ্রহণ কিছুতেই রাজনীতি বহির্ভূত হতে পারে না৷ কি বলবেন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষেরা ?