1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফাটল বেয়ে পাহাড় চড়ার রোমাঞ্চ

আন্টিয়ে বিন্ডার/এসবি২৩ আগস্ট ২০১৪

পাহাড়ে চড়ার শখ অনেকেরই আছে৷ তাতে বিপদের ঝুঁকি কম নয়৷ কিন্তু প্রায় মসৃণ পাথর বেয়ে উপরে ওঠার প্রচেষ্টাকে কি বিদঘুটে বলা চলে? শুধু ফাটলে হাত-পা বা শরীর গলিয়ে নানা কসরত করে শীর্ষে পৌঁছানোর রোমাঞ্চই যে আলাদা!

https://p.dw.com/p/1Cz7g
ছবি: Fotolia/Greg Epperson

পাহাড়ের এই পাথর বড়ই মসৃণ, শুধু পাতলা এক ফাটল রয়েছে, যা প্রায় দেখাই যায় না৷ ‘ওয়াইড বয়েস ২' তথ্যচিত্রে এমন এক ‘এক্সট্রিম স্পোর্টস'-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে শারীরিক শক্তি ও দম ছাড়াও চাই ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা৷ ক্র্যাক ক্লাইম্বার টম রানডাল বলেন, ‘‘বাকিরা যা করছে, তার থেকে আলাদা কিছু করতে বড় ভালো লাগে৷ অন্যরা যদি মনে করে এটা খারাপ আইডিয়া, আমার মনে হয় এটা ভালো আইডিয়া৷''

প্রশিক্ষণ বন্ধ হয় না৷ ইংল্যান্ডের উত্তরে পিক ডিসট্রিক্ট ন্যাশনাল পার্কে পিট উইটেকার ও টম ব়্যান্ডাল নিজেদের সরঞ্জাম পরীক্ষা করেন৷ অভিযানের আগে হাতে ভালো করে ব্যান্ডেজ বেঁধে নিতে হয়, যাতে তা অক্ষত থাকে৷

বাসস্থান শেফিল্ড শহরের কাছে এই পাহাড় তাদের খুবই পরিচিত৷ এখানেই তাঁরা অনুশীলন করেন আর পর্বতারোহণের কায়দা পরখ করে দেখেন৷ ক্র্যাক ক্লাইম্বার পিট উইটেকার বলেন, ‘‘সবার মনে হয় এটা খুব কঠিন৷ প্রথমবার এ সব করার সময় তারা কায়দাগুলো জানে না৷ খুব কষ্ট হতে পারে৷ হাত, কনুই, হাঁটুর অনেক ছাল উঠে যেতে পারে৷ তখন সেটা তাদের কাছে ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে৷ মনে হয়, বড়ই কঠিন৷ কিন্তু আসলে কিছুদিন এটা চালিয়ে গেলে এবং সঠিক কায়দাগুলি রপ্ত করলে পুরোটা সাধারণ পর্বতারোহণের মতো হয়ে পড়ে৷''

ক্র্যাক ক্লাইম্বিং-এর ক্ষেত্রে মূলত পাহাড়ের ফাটল বরাবর উঠে যেতে হয়৷ ইংল্যান্ডের এমন সব পাহাড় চড়ে দুই পর্বতারোহীর সামনে আর কোনো চ্যালেঞ্জ না থাকায় তাঁরা এখন বিদেশে নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজছেন৷

যেমন অ্যামেরিকার উটা রাজ্যে৷ সেখানকার ‘সেঞ্চুরি ক্র্যাক'-কে বিশ্বের অন্যতম কঠিন পথ হিসেবে ধরা হয়৷ পিট ও টম-ই প্রথম বার সেই পর্বতে উঠতে পেরেছিলেন, সেটা তিন বছর আগের ঘটনা৷ ‘ওয়াইড বয়েস' তথ্যচিত্রে সেই অ্যাডভেঞ্চার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ এই ফাটলের প্রস্থকে ‘অফউইডথ' বলা হয়, যা পর্বতারোহীদের জন্য ভীষণ কঠিন৷

হাতের জন্য এই ফাটল খুব চওড়া, তবে শরীরের জন্য অত্যন্ত সরু৷ টম ব়্যান্ডাল বলেন, ‘‘ফাটলের প্রস্থের মাপ একেবারেই ভালো নয়৷ তাতে শরীরের কোনো অংশ ঢোকানোর চেষ্টা করলে কিছুই ঠিকমতো ঢোকে না৷ তখন অনেক রকমের কসরত করতে হয়, যা শুরুতে কেউ শেখে না৷ সে কারণেই এটা বড় কঠিন৷ অনেক বার উঠলেও খুবই কষ্ট হয়৷''

এই অভিযানের জন্য দুই বন্ধু দেশেই অনুশীলন করে এসেছিলেন৷ বাড়ির সেলারে তাঁরা ‘সেঞ্চুরি ক্র্যাক'-এর আদলে কাঠ দিয়ে ফাটল তৈরি করেছিলেন৷ দু'বছর ধরে তারা এখানে অনুশীলন করেছেন৷ প্রতিবার ১৫০ মিটারেরও বেশি উঠেছেন৷ পিট উইটেকার বলেন, ‘‘অন্য কোথাও রক ক্লাইম্বিং এ রকম কঠিন নয়৷ তাই সেই পাহাড় একেবারে হুবহু নকল করে সেখানে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে৷ অন্য কেউ সেখানে ওঠেনি, তাই আমাদেরই নতুন এক স্টাইল তৈরি করে রপ্ত করতে হয়েছে৷ তাই আমরা এটা তৈরি করেছিলাম৷''

তাঁরা সেখানে প্রয়োজনীয় রদবদল করে অন্যান্য অভিযানের জন্যও নিজেদের তৈরি করে নেন৷ বাড়ির বাগানে তাঁরা আরেকটি কঠিন প্রক্রিয়া প্র্যাকটিস করেন৷ এই ফাটলে কোনোরকমে একটি আঙুল ঢোকে৷ ক্যানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যের বিখ্যাত ‘কোবরা রক' আরোহণের প্রস্তুতি চলছে সেখানে৷ ‘ওয়াইড বয়স ২' তথ্যচিত্রে এই অভিযান তুলে ধরা হচ্ছে৷

বেশ কয়েকবার চেষ্টা চালিয়ে তাঁরা ৩০ মিটার উঁচু ফাটলটি বেয়ে উঠতে পেরেছেন৷ টম ব়্যান্ডাল বলেন, ‘‘অনুশীলনের সময় বেশ কয়েকবার মনে হচ্ছিলো, এবার বোধহয় নিজেরাই ভেঙে যাবো৷ তারপর বাইরে গিয়ে মনে হলো, সব ঠিক আছে৷ কারণ ট্রেনিং-এর সময় নিজেকে এত ভিতরে ঠেলে দিতে হয়, যে বাইরের সব কিছু মজার লাগে৷ তারপর সাফল্য আসে৷''

পরের লক্ষ্যবস্তু হলো অ্যামেরিকার ইয়োসেমাইট ন্যাশানাল পার্ক-এর ‘এল কাপিটান' টিলা৷ পরপর বেশ কয়েকবার তাঁরা প্রায় ১,০০০ মিটার উঁচু দেয়াল বেয়ে উঠতে চান এবং রক ক্লাইম্বিং-এর নানা কায়দার মেলবন্ধন ঘটাতে চান৷ অতএব আবার রেকর্ড-এর হাতছানি দেখা যাচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য