প্রজাপতি সব কোথায় গেল?
প্রজাপতি কার না পছন্দ? সুন্দর এই প্রাণী কাউকে কামড়ায়ও না, হুলও ফুটায় না৷ কিন্তু গত কয়েক দশকে পৃথিবীতে নাটকীয়ভাবে কমেছে প্রজাপতির সংখ্যা৷ কারণগুলো আরো কষ্টদায়ক৷
বিলুপ্তির পথে প্রজাপতি
পৃথিবীজুড়েই হুমকির মুখে প্রজাপতি৷ জার্মান ওয়াইল্ড লাইফ অ্যানিমেল ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী গত ৩০ বছরে শুধু জার্মানিতেই প্রজাপতি এবং মথের প্রজাতির সংখ্যা অর্ধেক হয়েছে৷ দিনের বেলায় যেসব প্রজাপতি বাইরে বের হয়, তাদের সংখ্যা কমেছে ৭০ শতাংশ৷ ছবিতে কলিয়াস হ্যালে নামের এক প্রজাতির প্রজাপতি দেখা যাচ্ছে৷ ২০১৭ সালের জার্মানির বর্ষসেরা প্রজাপতি হয় এই প্রজাতি৷
মিষ্টি রস
ফুল থেকে মিষ্টি রস খেতে ভালোবাসে প্রজাপতি৷ কিন্তু উদ্ভিদের বৈচিত্র্যও ধীরে ধীরে কমছে৷ বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ ধরনের ফসল উৎপাদনের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷ ফলে প্রজাপতির খাদ্যাভাসেও আসছে পরিবর্তন৷
কীটনাশকের থাবা
শস্য রক্ষা করতে গিয়ে জোর দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের কীটনাশক, আগাছানাশকের ওপর৷ এতে ফসলের উৎপাদন সাময়িকভাবে বাড়ছে ঠিকই৷ কিন্তু জমি এবং স্বাস্থ্যের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির আশংকা থেকেই যাচ্ছে৷ বিভিন্ন উদ্ভিদে কৃত্রিম এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ, প্রজাপতিকেও করছে বিপন্ন৷
পতঙ্গরাজ্যে হাহাকার
শুধু প্রজাপতি না, জমিতে রাসায়নিক ব্যবহারে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো কীটপতঙ্গের রাজ্যই৷ গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কিছু এলাকায় ৩০ বছর আগের তুলনায় পোকামাকড়ের সংখ্যা কমেছে ৮০ শতাংশ৷ এর মধ্যে আছে মৌমাছি, ভোমরা, ফড়িং, বোলতা এবং মাছিও৷ যারা বেঁচে আছে, তারাও চালিয়ে যাচ্ছে অস্তিত্বের লড়াই৷
খাদ্যচক্রে অস্থিরতা
পোকামাকড়ের সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে পাখিদের ওপরও৷ জার্মানির কোনো কোনো এলাকায় ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে পাখির সংখ্যা কমে গেছে ৮০ শতাংশ৷
শহর বনাম গ্রাম
স্বাভাবিক ধারণা বলে, শহরের তুলনায় গ্রামে প্রকৃতির পরিমাণ বেশিই হবে৷ কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে জার্মানির শহরগুলিতে প্রজাপতির সংখ্যা গ্রামের তুলনায় বেশি৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামে কৃষিকাজে জোর দিতে গিয়ে কমছে উদ্ভিদের বৈচিত্র্য৷ অন্যদিকে, শহরের পার্ক, বাসাবাড়ির বাগান, এমনকি কবরস্থানেও নানা ধরনের উদ্ভিদ থাকায়, এদিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে আরো বেশি সংখ্যক প্রজাপতি৷