পোপ ফ্রান্সিসের পাঁচ বছর
ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ করলেন পোপ ফ্রান্সিস৷ এ সময়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন, কখনো কখনো কোনো কোনো মহলের সমালোচনারও শিকার হয়েছেন তিনি৷
সেই সন্ধ্যা
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হয়েছিলেন হর্খে মারিও ব্যার্গোগলিও৷ সেন্ট পিটার্স স্কয়্যারে সেদিন ছিল লাখো ভক্তের ভিড়৷ পোপ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেয়া ভাষণ শুরু করেছিলেন দু’টি মাত্র শব্দ দিয়ে, ‘বুয়োনা সেরা ’, অর্থাৎ ‘শুভ সন্ধ্যা!’
সংস্কার কমিটি ‘কে নাইন’
পোপ হয়েই ন’জন কার্ডিনালকে নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করেন ভ্যাটিকান প্রধান৷ চার্চের সংগঠন এবং নির্দেশনায় সংস্কারের দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁদের৷
দুর্বলের পাশে
আফ্রিকা থেকে ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে তখন অনেকের প্রাণ যাচ্ছিল৷ পোপ বলেছিলেন বিষয়টি তাঁর ‘হৃদয়ে কাঁটা’ হয়ে বিঁধে৷ ২০১৩ সালে ইটালির লাম্পেডুসা সফরে গিয়েছিলেন পোপ৷ শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশী সেদিন আশা করেছিলেন, পোপের আগমন উপলক্ষ্যে হয়ত তাঁদের ইটালিতে থাকার অনুমতি দেবে সরকার৷ সে আশা অবশ্য পূরণ হয়নি৷
বিনম্রতার প্রতীক
ছবির এই গাড়িটি ৩০ বছরের পুরোনো রেনল্ট বা রেনঁ মডেলের৷ গাড়িটি তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন ভেরোনার এক যাজক৷ পোপ ফ্রান্সিস নিজে চালাতে চেয়েছিলেন গাড়িটি৷ কিন্তু নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে বলে সেই অনুমতি তাঁকে দেয়া হয়নি৷
সেলিব্রিটি ফ্রান্সিস
পোপ ফ্রান্সিসের জনপ্রিয়তা বিশ্বের অনেক সেলিব্রিটির মনেই হিংসার জন্ম দিতে পারে৷ খ্রিষ্টান নন, এমন কোটি কোটি মানুষও তাঁকে পছন্দ করেন৷ তাই তো ইতিহাসের প্রথম পোপ হিসেবে রোলিংস্টোন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছেন তিনি৷
সেতুবন্ধন
পোপ ফ্রান্সিস সবসময় সংঘাত, হানাহানির বিরুদ্ধে৷ তাই কখনো মধ্য আফ্রিকা এবং কলম্বোর বিবদমান দুই পক্ষ, কখনো যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা, কখনো বা যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর সম্পর্কোন্নয়নের উদ্যোগে দেখা গেছে তাঁকে৷
সব ধর্মে বন্ধুত্ব
সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বন্ধুত্বের মনোভাব উৎসাহিত করতে দৃষ্টান্তমূলক কিছু কাজ করেছেন তিনি৷ জেরুসালেমে গিয়ে যেমন প্রার্থনা করেছেন, একইসঙ্গে গ্র্যান্ড মুফতি মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে আসতেও ভোলেননি৷ মিশরে গিয়েও কপটিক চার্চের প্রধান এবং গ্র্যান্ড ইমাম দু’জনের সঙ্গেই দেখা করেছেন৷
জনতার পোপ
গত জানুয়ারিতে চিলি সফরে গিয়েছিলেন পোপ৷ রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে বিমানে উত্তরের শহর ইকিকে যাচছেন৷ বিমানের দুই ক্রু এসে তাঁর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এক পর্যায়ে জানালেন যে তাঁরা পরস্পরকে বিয়ে করবেন৷ পোপ তো বেজায় খুশি৷ ওই বিমানে তক্ষুণি দুই তরুণ-তরুণীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে দিলেন তিনি৷
সমালোচনা
পোপ ফ্রান্সিসের সমালোচনাও নেহাত কম নয়৷ ধর্মযাজকদের একটি অংশ তাঁকে খুব কট্টর মনে করেন৷ ওপরের পোস্টারে গির্জার ভিতরে কারো প্রতি ন্যূনতম ক্ষমা প্রদর্শন না করার জন্য সমালোচনা করা হয়েছে৷ অনেকে আবার মনে করেন, তিনি অতিরিক্তি ধর্মনিরপেক্ষ, তাঁর মানবতাবোধও অতিরিক্ত সাহসী৷ কেউ কেউ বলেন, পোপ ফ্রান্সিস খুব বেশি প্রচারমুখী, তাই যেভাবে যেখানে গেলে প্রচার জুটবে সেখানে ঠিক সেভাবেই হাজির হন তিনি৷