পাসাউয়ের ‘ডাখসহুন্ড মিউজিয়ামে’ ইস্টার
খরগোশ ও তার ডিম ইস্টারের বহুল ব্যবহৃত প্রতীক৷ এ বছর জামার্নির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বাভারিয়ার পাসাউ শহরে ‘ভিনার-ডগ’ যেন ইস্টারের প্রতীক হয়ে উঠেছিল! পৃথিবীর প্রথম ‘ডাখসহুন্ড মিউজিয়ামে’ ইস্টারের এবারের আকর্ষণ ছিল এটি৷
রকমারি সংগ্রহশালা
সোনার অলঙ্কার নেই এ জাদুঘরে৷ কিন্তু রয়েছে মুকুট পরা সোনার ডাখসহুন্ড কুকুরের মূর্তি৷ পাসাউ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ডাখসহুন্ড কুকুর নিয়ে এরকম ছোট-বড় দুই হাজার জিনিসের একটি সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছে৷ ভিনার বা সসেজ ডগ সম্পর্কিত ফেলে দেওয়া, পরিত্যক্ত জিনিসের বাজার বা দোকান থেকে নানা উপকরণে তৈরি, বৈচিত্র্যময় জিনিস কিনে কর্তৃপক্ষ জাদুঘরটি সাজিয়েছে৷ যেমন, ডাখসহুন্ড কুকুরের থিমের লবণদানি, মগ, প্লেট ইত্যাদি৷
বাইরে বিনোদন
ডাখসহুন্ড শিকারি কুকুর৷ এই প্রজাতির কুকুর খেঁকশিয়াল বা অন্যান্য গর্তজীবী প্রাণি শিকারে জার্মানদের সঙ্গী হাজার বছর ধরেই৷ এরা বাইরে ঘুরতে পছন্দ করে৷ আর এ কারণে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ পোর্সেলিন দিয়ে তৈরি এই ক্ষুদ্র প্রাকৃতিক দৃশ্যের ভাস্কর্যটি সংগ্রহশালায় যোগ করেছে৷
বাবলহেড কিৎশ
বলের মতো গোলাকার মাথার এই বাচ্চা কুকুরের প্রতিকৃতিকে ‘বাবলহেড কিৎশ’ বলে৷ জার্মান মধ্যবিত্তের অন্যতম প্রিয় জিনিস৷ গাড়ি থেকে টয়লেট পেপার পর্যন্ত এটি তারা ব্যবহার করে৷ ষাটের দশক ও সত্তরের দশকে এটি খুব জনপ্রিয় ছিল৷ পরে আবার নব্বই দশকে একটি বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে ‘বাবলহেড কিৎশ’ আবার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে৷ পাসাউ জাদুঘরে ‘বাবলহেড কিৎশ’-এর দারুণ একটি নিদর্শন সংযুক্ত করা হয়েছে৷
অলিম্পিকের মাসকট ভালদি
১৯৭২ সালে মিউনিখে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সময় ডাখসহুন্ড গোত্রের কুকুরকে মাসকট হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যার নাম রাখা হয় ‘ভালদি’, অর্থাৎ উপরে৷ জার্মানির তখনকার অলিম্পিক কমিটির প্রধান ভিলি দাউমে নিজেও একটি ডাখসহুন্ড প্রজাতির কুকুর পুষতেন৷ এ জাতের কুকুর কর্মচঞ্চল আর লড়াকু মনোভাবের, যা অলিম্পকের মূল স্পিরিটের সাথে যায়৷
বিয়ারের সাথে সসেজ ডগ
৩০ বছর আগেও বাভারিয়ার সবচেয়ে পরিচিত দৃশ্য ছিল ডাখসহুন্ড কুকুরের গলায় শেকল ধরে তার নেকারবুকার পরা জার্মান মনিব রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছেন৷ অন্যান্য প্রজাতির কুকুর জনপ্রিয় হওয়ায় এ দৃশ্য এখন বিরল৷ কিন্তু এখনও বাভারিয়ায় সসেজ, এক টুকরা প্রেৎসেল (এক ধরনের রুটি) এবং বিয়ার অর্ডার দেওয়ার সময় সেটি স্মরণ করা হয়৷ জাদুঘরে তারই এক স্মারক রাখা হয়েছে৷
খাবার-দাবার তৈরি
ডাখসহুন্ড জাদুঘর শুরুর আগেই কিছু বেকারি ধনুকের মতো পা বাঁকানো কুকুরের আকৃতির নানা স্ন্যাকস বিক্রি করতো৷ যেহেতু এটি ডাখসহুন্ড জাদুঘরের কুকুর নিয়েই কারবার, তারাও বিক্রি করছে সেই আকৃতির মিছরি বা পিজা৷ ভবিষ্যতে ডাখসহুন্ড বিয়ার বিক্রির পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের৷
ডাখসহুন্ড প্যারেড
পৃথিবীর অনেক দেশেই কুকুরেরা প্যারেডে অংশ নেয়৷ ডাখসহুন্ডেরও প্যারেড হয় পোলান্ডের ক্রাকো-তে৷ উপরের ছবিটি সেখান থেকেই তোলা৷ কিন্তু সত্যি কী কুকুর পোশাক পরে প্যারেড করতে পছন্দ করে? ডাখসহুন্ডের প্যারেডের অনেক ছবি রয়েছে জাদুঘরে৷
জাদুঘরের উদ্যোক্তা
ইউসেফ কুবলবেক (বামে) এবং অলিভার স্টোরজ পাসাউতে জনপ্রিয় মুখ৷ অনেক বছর এই দু’জন একসাথে একটি কফিশপ চালিয়েছে৷ তাঁরাই এ জাদুঘরের উদ্যোক্তা৷ তাঁদের কখনোই কুকুর ছাড়া দেখা যায়নি৷ কুবলবেকের কুকুরের নাম সেপ্পি এবং স্টোরজের কুকুরের নাম মনি৷