পাকিস্তানের বন্যার জন্য মানুষও দায়ী!
৫ সেপ্টেম্বর ২০১০পাকিস্তানে বন্যার যে ভয়াবহতা, সেটার জন্য মানুষের করা কিছু কিছু কাজ দায়ী৷ এবং তার পরিমাণ শতকরা প্রায় বিশ-ত্রিশ ভাগ৷ মন্তব্য সালিম উল্লাহের৷
কিন্তু সেটাইবা কম কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নব্বইয়ের দশক থেকে পাকিস্তানে চলছে গাছ কাটা অর্থাৎ বন উজাড়৷ অবস্থা এমন যে, বর্তমানে পাকিস্তানে বনাঞ্চলের পরিমাণ শতকরা মাত্র পাঁচ ভাগ৷ কিন্তু এই গাছ কাটা কীভাবে বন্যার ভয়াবহতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, সে বিষয়টি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পরিবেশ সাংবাদিক রিনা সাঈদ খান৷ তিনি বলেন, ‘‘গাছ কাটার পর সেই গাছের গুঁড়ি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেয়ার জন্য নদীকে ব্যবহার করা হয়৷ তাই বন্যার সময় নদীর পানির তোড়ে যখন সব ভেসে যাচ্ছিল, তখন এই গুঁড়িগুলোই কাজ করেছে পানির মিসাইল হিসেবে৷ অর্থাৎ এই গুঁড়িগুলোর আঘাতেই মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ ইত্যাদি ভেঙে পড়েছে৷''
এবারের বন্যায় সিন্ধু নদের নাম বেশ ছড়িয়ে পড়েছে৷ যে নদের ধারে একসময় ছিল বহু গাছের সারি৷ কিন্তু সেখানকার মাটি উর্বর হওয়ায় ভাল ফসল ফলানোর আশায় কৃষকরা কেটে ফেলেছেন সেই গাছগুলো৷ এছাড়া করেছেন নদী দখল৷ অর্থাৎ কমে গিয়েছে নদীর প্রশস্ততা৷ তাইতো অধিক পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা নেই এখন৷ ফলে যা হবার তাই হয়েছে৷ বন্যার পানিতে ছয়লাপ হয়ে গেছে এলাকার পর এলাকা৷ সাংবাদিক রিনা খান এজন্য অবশ্য সরকারকে দায়ী করেছেন৷ কারণ নদীর ধারের জমিগুলো মানুষের কাছে বিক্রি করেছে সরকারই৷
কিন্তু এবারই তো শেষ নয়৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরণের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে ভবিষ্যতেও৷ তাই এবারের বন্যা থেকে কিছু বিষয়ে শেখার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁরা বলছেন বেশি করে গাছ লাগাতে৷ এবং সিন্ধু নদের আশেপাশে থাকা জমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে৷ এছাড়া বন্যা সতর্কীকরণ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার ওপরও জোর দেয়া হয়েছে৷ আর ইউএনডিপির কর্মকর্তা সালিম উল্লাহ পরামর্শ দিয়েছেন ছোট ছোট আরও বাঁধ নির্মাণের ওপর৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন