1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমতীরকে ইসরায়েলে নিতে চান নেতানিয়াহু

৪ অক্টোবর ২০১৭

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার আবারও গাজায় কয়েক হাজার নতুন বসতি নির্মাণের কথা বলেছেন৷ পাশাপাশি বলেছেন, পশ্চিমতীরকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করতে চান তিনি৷

https://p.dw.com/p/2lCNQ
ছবি: picture-alliance/AP Images/R. Zvulun/Pool Photo

পশ্চিমতীরের একটি এলাকা সফরকালে এ কথা বলেছেন তিনি৷

মঙ্গলবার জেরুসালেম থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে পশ্চিমতীরের শহর মালেহ আদুমিম সফর করছিলেন তিনি৷ সেখানেই ইসরায়েলের বসতি বাড়ানোর ঘোষণা দেন৷ বর্তমানে সেখানে ৪০ হাজার মানুষ বসবাস করছে৷ তার এই ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন৷ এই ঘোষণা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল, গত আট মাস ধরে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন৷

কেবল নতুন বসতিই নয়, পশ্চিমতীরে নতুন ‘শিল্প এলাকা’ গড়ে তোলারও অঙ্গীকার করেছেন নেতানিয়াহু৷ সেখানকার উন্নয়নের জন্য যা প্রয়োজন তার সব করা হবে এবং পশ্চিমতীরকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি৷ তবে ঠিক কবে থেকে এই উন্নয়ন কাজ শুরু হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী৷

সম্প্রতি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলছে৷ তাই গণমাধ্যমের রোষের মুখে পড়েছেন তিনি৷ এ অবস্থায় জনসমর্থন আদায়ে গত কয়েক সপ্তাহে তিনটি স্থানে দেয়া বক্তব্যে এই প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন নেতানিয়াহু৷

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা নাবিল শাদ বলেছেন, ‘‘এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য৷ এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনা উদ্যোগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলেন নেতানিয়াহু৷’’

ফিলিস্তিনের দাবি, ১৯৬৭ সালে যুদ্ধের সময় ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নেয়৷ ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা বি'টিসেলেম এর হিসেবে, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেমে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ ইহুদি বাস করছেন৷ ১৯৯৩ সালে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিতে যে পরিমাণ বসতি থাকার কথা বলা হয়েছিল এখন সেখানে তার প্রায় তিনগুণ বসতি আছে৷

ফিলিস্তিনে জাতীয় ঐক্যের সরকার:

ফাতাহ ও হামাস সমর্থিত ফিলিস্তিনি জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের আলোচনার জন্য গাজা সফর করছেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ৷ কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দু'দেশের মধ্যে কোন চুক্তির জন্য এই সরকারে হামাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে দলটিকে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে৷

নেতানিয়াহু বলেন, তাঁর সরকার তখনই এই ঐক্য সরকার মেনে নেবে, যদি হামাস রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়, অস্ত্র প্রত্যাহার করে এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে ছিন্ন করে৷ ‘‘আমরা কোনো ধরণের ভুয়া ঐক্য সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত নই৷’’ নিজের দল লিকুদ দলের সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন তিনি৷

বলাবাহুল্য, হামাস এবং ফাতাহ'র মধ্যে দীর্ঘকাল ধরেই রাজনৈতিক বিরোধ চলছিল৷ ২০০৭ সালে দুই পক্ষের মধ্যকার এই বিরোধ সহিংস রূপ নেয়৷ ২০০৭ সাল থেকে গাজায় এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে৷ সেই সময় থেকে ইসরায়েল গাজাকে প্রায় অবরুদ্ধ করে দিয়েছে এবং অভিযোগ করে আসছে হামাস একটি জঙ্গি সংগঠন এবং ইরানের সঙ্গে যাদের যোগসূত্র রয়েছে৷

হামাস অস্ত্র ত্যাগ করবে না

এদিকে, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী সোমবার হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং ইয়েহিয়ে সিনওয়ার এর সঙ্গে বৈঠকের আগে বলেছেন, ‘‘ঐক্যের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব৷’’

ফাতাহ'র নেতৃত্ব ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের হাতে৷ দলটি হামাসের সঙ্গে ঐক্য সরকার গঠন করলে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনা সম্ভব হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই গাজা এবং পশ্চিমতীরে নতুন নির্বাচন হতে পারে৷ তবে হামাস নেতা হানিয়াহ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘গাজা থেকে সামরিক নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়ার ব্যাপারে এখনও তিনি নিশ্চিত নন৷ তার দল কোনো ধরনের অস্ত্র ত্যাগ করবে না, কেননা, নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য তাদের কাছে অস্ত্র রাখতে হবে৷’’ অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ঐক্য সরকারে আসতে হলে হামাসের অস্ত্র পরিত্যাগ করতে হবে৷ তিনি চান, ‘‘এক রাষ্ট্র, এক রাষ্ট্রব্যবস্থা, এক আইন এবং এক অস্ত্র৷’’

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...