পরিযায়ী পাখির স্বর্গরাজ্য
শীতকালে বিশ্বের বিভিন্ন শীত প্রধান দেশ থেকে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে বাংলাদেশে৷ দেশের বেশ কিছু জায়গাকে এসময়ে তারা বেছে নেয় নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে৷ পরিযায়ী পাখির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে, এমন কিছু জায়গা দেখুন ছবিঘরে৷
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
শীতের শুরু থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে৷ গাছপালায় ঢাকা সবুজ এই ক্যাম্পাসের জলাশয়গুলোকে এ সময়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয় পাখিরা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও পেছনের দু’টি জলাশয়, জাহানারা ইমাম হল, প্রীতীলতা হল এবং আল বেরুনী হল সংলগ্ন জলাশয়ে পাখিদের আনাগোনা বেশি থাকে৷
বাইক্কা বিল
চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলের পাশেই পাখির অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল৷ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরের পূর্ব পাশের প্রায় একশ হেক্টর আয়তনের জলাভূমি শীতে ভরে যায় পরিযায়ী পাখিতে৷ বাইক্কা বিল প্রায় ১৬০ প্রজাতির পাখির অভয়াশ্রম৷ শীতে জায়গাটিতে আরো অনেক পদের পাখির আগমন ঘটে৷ পাখিদের ভালোভাবে দেখার জন্য এখানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারও আছে৷
হাকালুকি হাওর
এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ হাওরেও শীতে আসে প্রচুর অতিথি পাখি৷ এই হাওরের বিলগুলো শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণে মুখর হয়ে উঠে৷ হাকালুকি হাওরের কালাপানি, বাইয়াগজুয়া, কৈয়ারকোনা বিলে অতিথি পাখি বেশি দেখা যায়৷
টাঙ্গুয়ার হাওর
শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টাঙ্গুয়ার হাওরে বসে পাখিদের মিলনমেলা৷ সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুরের দশটি মৌজা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের বিস্তৃতি৷ প্রতি বছর শীত মৌসুমে এ হাওরে প্রায় ২০০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির সমাগম ঘটে৷ টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রধান দু’টি পাখির অভয়ারণ্য হলো লেউচ্ছামারা ও বেরবেড়িয়ার বিল৷ এছাড়াও রৌয়ার বিল, গজারিয়ার বিল, আলমের ডোয়ার, ফইল্লার বিল, রূপাভুই বিলে পাখিদের আনাগোনা বেশি থাকে৷
মুহুরী সেচ প্রকল্প
ফেনী জেলার সোনাগাজী ও চট্টগ্রামের মিরসরাই সীমান্তে ফেনী নদীর ওপর মুহুরী সেচ প্রকল্পটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৮৪ সালে৷ সামুদ্রিক জোয়ার ঠেকানো ও বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখার জন্য এ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়৷ শীতে এ প্রকল্প এলাকায় আসে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি৷ পাখির কলরবে গোটা এলাকা মুখর হয়ে ওঠে৷
রাজশাহীর পদ্মার চর
রাজশাহী শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে পদ্মা নদী৷ এ নদীর চরেও শীত মৌমুমে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি৷ বাংলাদেশর পাখিপ্রেমীদের এখন নতুন গন্তব্য এই পদ্মার চর৷ গত কয়েক বছর ধরে এ নদীর চরে অতি বিরল সারস পাখি কালো মানিকজোড়’সহ আরো অনেক বিরল প্রজাতির পাখির দেখা মিলছে৷
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীর বিভিন্ন চরে শীত মৌসুমে আসে নানান অতিথি পাখি৷ চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ সব চরাঞ্চলে বিরল অতিথি পাখিদের দেখা মিলছে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে৷
দমার চর
নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের পাশেই দমার চর৷ বঙ্গোপসাগরের কোলে অবস্থিত এ চরেও শীতে বসে পাখিদের মেলা৷ শীত মৌসুমে দমার চরে নানান পাখিদে সাথে প্রচুর দেথা যায় দেশি গাঙচষা৷