1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত?

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৬ জুন ২০১৪

পরমাণু শক্তির অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও ভারতকে আন্তর্জাতিক শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে এক আসনে বসার মর্যাদা দেয়া হয়নি৷ সেই বাধা দূর করতে ভারত-ভিত্তিক পরমাণু রক্ষাকবচের অতিরিক্ত খসড়া চুক্তিটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোদী৷

https://p.dw.com/p/1CPzr
40 Jahre Greenpeace Antiatom Taj Mahal
ছবি: picture-alliance/dpa

ভারতের পরমাণু নীতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নতুন মোদী সরকার আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে ভারত-ভিত্তিক পরমাণু রক্ষাকবচ চুক্তির অন্তর্গত অতিরিক্ত প্রোটোকল দ্রুতাতার সঙ্গে অনুমোদনের কথা ঘোষণা করেছে৷ এটা না করায় পরমাণু শক্তিধর দেশ হয়েও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিধর দেশুলির সঙ্গে একই বন্ধনীভুক্ত হতে পারেনি ভারত৷ পরমাণু উপকরণ সরবরাহকারী ৪৫টি দেশ-গোষ্ঠীর এক বৈঠকের আগে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ-র সঙ্গে ভারত-ভিত্তিক পরমাণু রক্ষাকবচ সংক্রান্ত অতিরিক্ত প্রোটোকলটি অনুমোদন করে মোদী সরকার সময়োচিত কাজ করেছে৷

তবে এটাও ঠিক যে, এর পুরো কৃতিত্ব মোদী সরকারের একার নয়৷ সিংহভাগ কৃতিত্ব দাবি করতে পারে পূর্বতন মনমোহন সিং সরকার৷ এর ভূমিগত যাবতীয় কাজ করে গেছে মনমোহন সিং সরকার৷ ভারত-মার্কিন বেসামরিক চুক্তি সই হওয়া থেকে তার খসড়া ও নির্ভরযোগ্য নথিপত্র তৈরি সবকিছুই করে গিয়েছেন মনমোহন সিং সরকার৷ শুধু ফলের অপেক্ষা ছিল৷ আর সেই কাজটাই সম্পন্ন করল মোদী সরকার৷ এর ফলে মোদী সরকার পরমাণু উপকরণ সরবরাহকারী দেশগোষ্ঠীর সদস্য হবার পথে এক কদম এগিয়ে গেল৷

ভারত-ভিত্তিক পরমাণু রক্ষাকবচের অতিরিক্ত প্রোটোকল অনুমোদন করা জরুরি কেন? যেহেতু ভারত পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তি এনপিটিতে সই করতে রাজি হয়নি, অর্থাৎ ভারত তার পরমাণু কেন্দ্রগুলি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার নিরীক্ষণের আওতায় রাখার অনুমতি দেয়নি, তাই বিশ্বের অন্য সব পরমাণু দেশগুলির সঙ্গে পরমাণু উপকরণের বাণিজ্য করা বা উন্নত পরমাণু প্রযুক্তি আমদানি করা ভারতের জন্য নিষিদ্ধ ছিল৷ অতিরিক্ত প্রোটোকল অনুমোদন করে ভারত বিশ্বকে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জোরাল বার্তা দিল যে, পরমাণু শক্তিধর হিসেবে ভারত এক দায়িত্বশীল এবং বিশ্বাসযোগ্য দেশ এবং ভারত-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নে দৃঢ়সংকল্প৷

শুধু তাই নয়, পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তির প্রতি দায়বদ্ধ৷ এ বিষয়ে এনএসজি-র বিশেষ ছাড় পাবার যোগ্য এবং সেই নিরিখে ভারত এনএসজি-র সদস্যপদেরও দাবি করতে পারে৷ এর জেরে আইএইএ ভারতের বেসামরিক পরমাণু কেন্দ্রগুলির জ্বালানি ও রিঅ্যাক্টরগুলি খুঁটিয়ে নিরীক্ষণ করতে পারবে৷ সেজন্য ২০টি বেসামরিক পরমাণু কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে দিল্লি৷

Kudankulam Kernkraftwerk
ভারত-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নে দৃঢ়সংকল্পছবি: AP

উল্লেখ্য, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ওয়াশিংটনে মোদী-ওবামা বৈঠকের জমি তৈরির পক্ষেও এটা সদর্থক পদক্ষেপ মোদীর৷ এ মাসে নতুন সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়িত করতে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হবে৷ তবে একটা কাঁটা এখনো রয়ে গেছে৷ সেটা হলো ভারতের পরমাণু দায়বদ্ধতা বিল৷ তাতে পরমাণু কেন্দ্রে কোনোরকম দুর্ঘটনার জন্য দায়ী থাকবে পরমাণু উপকরণ সরবরাহকারি কোম্পানিগুলি৷ পরমাণু উপকরণ সরবরাহকারী দেশকে সেই শর্ত মানতে বাধ্য করা মোদী সরকারের পক্ষে এক চ্যালেঞ্জ৷ কোনো দেশই এই শর্ত মানতে রাজি নয়৷ কিন্তু জাপানের ফুকুশিমা বা রাশিয়ার চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর এটাকে হেলাফেলা করা যায় না কোনোমতেই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য