1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পড়ালেখায় আনন্দ দিতে বাংলাদেশে চালু হলো ‘ই-বুক’

১০ মে ২০১১

ই-বুক, মানে ইলেকট্রনিক বুক৷ নাম শুনেই বোঝা যায় এ বই পড়ার জন্য কম্পিউটার দরকার৷ উন্নত বিশ্বে ই-বুক এখন বেশ জনপ্রিয়৷ বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকতে চাইছে না৷ তাই সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বইগুলো ই-বুক’এ পরিণত করেছে৷

https://p.dw.com/p/11CmZ
ই-বুক, ebook
ই-বুক বা মানে ইলেকট্রনিক বুকছবি: AP

বাংলাদেশে ই-বুক

শিখব, যেকোনো স্থানে - যেকোনো সময়৷ সুন্দর এই বাক্যটিই বলে দিচ্ছে ই-বুক দিয়ে কী করা যায়৷ কিছুদিন আগে সরকার যে ই-বুক চালু করেছে তার ওয়েবসাইটে গেলেই বাক্যটি আপনার চোখে পড়বে৷ এর মানে হচ্ছে আপনি যেখানেই থাকুন না কেন আপনার সন্তানের জন্য বাংলা পাঠ্যবই জোগাড় করতে আর ঝামেলায় পড়তে হবে না৷ কারণ শুধু কম্পিউটার আর ইন্টারনেট থাকলেই বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে আপনি এই বইগুলো পেয়ে যাবেন৷ শুধু কম্পিউটারই নয় ল্যাপটপ, ই-বুক রিডার, মাল্টিমিডিয়া সুবিধাসম্পন্ন মোবাইল ফোনসেট কিংবা হালের ট্যাবলেট কম্পিউটার - এসবের মাধ্যমেও বইগুলো পড়া যাবে৷ ফলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন প্রবাসী শিক্ষার্থীরা৷ এমনটাই বললেন অধ্যাপক ফারুক আহমেদ৷ তিনি সরকারের ‘অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন' প্রকল্পের একজন পরামর্শক৷ আর এ প্রকল্পের মাধ্যমে ই-বুক চালু করা হয়েছে৷

তিনি বলছেন, প্রবাসে বসবাসরত কয়েক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী প্রতি বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকে৷ ফলে তাদের বাংলা পাঠ্যবই দরকার৷ এতদিন এই বই জোগাড় করতে তাদের ঝক্কি পোহাতে হতো৷ এখন থেকে সেটা আর থাকবে না৷

IFA
ল্যাপটপ, ই-বুক রিডার, মোবাইল ফোনসেট এবং ট্যাবলেট কম্পিউটারেও পড়া যাবে ই-বুকছবি: DW / Manfred Böhm

এছাড়া প্রতি বছর স্কুলগুলোতে সময়মত বই পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে একটা সমস্যা দেখা দেয়৷ কোনো কোনো স্কুলে পাঠদান শুরু হয়ে যাওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া যায় না৷ এই সমস্যারও সমাধান দেবে ই-বুক৷ কারণ এখন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের বাসায় কম্পিউটার আর ইন্টারনেট রয়েছে৷ তারা সহজেই ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে বইগুলো ডাউনলোড করে পড়তে পারবে৷ আর যাদের এই সুবিধা নেই তারা স্কুল থেকে এই সুবিধা পেতে পারে৷ কারণ ইতিমধ্যেই সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া প্রায় সাড়ে বিশ হাজার স্কুলে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ এছাড়া বছরের শুরুতে পাঠ্যবই সংকটের সুযোগ নিয়ে যারা কালোবাজারে বই বিক্রি করেন তাদেরও এবার প্রতিরোধ করা যাবে৷

এসব ছাড়াও ই-বুকের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে যারা চোখে কম দেখে তারা কম্পিউটার স্ক্রিনে ফন্ট বড় করে বইগুলো পড়তে পারবে৷

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ই-বুকের পরিধি সামনে আরও বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অধ্যাপক ফারুক আহমেদ৷ তিনি বলছেন, ভবিষ্যতে এতে আর্কাইভ সুবিধা যোগ করা হবে৷ ফলে এখন পর্যন্ত যত পাঠ্যবই বের হয়েছে সব পাওয়া যাবে এই আর্কাইভে৷ অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা, তাদের বাবা-মা'রা কেমন বই পড়েছেন, সেটা জানতে পারবে৷ এছাড়া গবেষক, নীতি নির্ধারক ও শিক্ষাবিদরাও এই আর্কাইভ থেকে অনেক কিছু জানতে পারবেন৷

Microsoft, E-Book Reader
মাইক্রোসফ্ট’এর একটি জনপ্রিয় ই-বুক রিডারছবি: AP

ফারুক আহমেদ আরেকটি পরিকল্পনার কথাও জানালেন৷ সেটা হচ্ছে অচিরেই এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের স্থির ও ভিডিও ছবি যোগ করা হবে৷ যেমন বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণ, এখনকার শিক্ষার্থীরা এই বিষয়টি শুধু বইয়ে পড়ছে আর মুখস্থ করছে৷ কিন্তু বিষয়টি যদি ভিডিও দিয়ে দেখানো যায় তাহলে শিক্ষার্থীরা সেটা যেমন সহজে বুঝতে পারবে, তেমনি আনন্দও পাবে৷

এছাড়া শিক্ষার্থীরা যেন বাংলা শব্দের উচ্চারণ সঠিকভাবে শিখতে পারে সেজন্য বিভিন্ন ছড়া ও কবিতার অডিও ফাইলও ওয়েবসাইটে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ফারুক আহমেদ৷ আর এই বিষয়গুলো ‘খুব শীঘ্রই' করে ফেলা হবে বলেও জানালেন তিনি৷

এদিকে এই ই-বুক চালু হওয়ার পর থেকে অনেকে অনেক কথা বলছেন৷ কেউ সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন৷ কেউবা কিছু কিছু সমস্যার কথাও বলছেন৷ আবার সেগুলোর সমাধান দেয়ারও চেষ্টা করেছেন অনেকে৷ আপনিও চাইলে একবার ঘুরে আসতে পারেন এই ওয়েবসাইট থেকে৷ যার ঠিকানা www.ebook.gov.bd৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই