1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিকল্প জ্বালানি

২৮ জুন ২০১৩

পুরনো বইখাতা থেকে অর্গ্যানিক গুল নেপালের এক এতিমখানায় কাজে লাগছে৷ অভিনব এই উদ্যোগের ফলে অর্থ ও জ্বালানি সাশ্রয় এবং পরিবেশ সংরক্ষণ – এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/18vhu
Nepal
ছবি: DW/Wolf Gebhardt

কাটমান্ডুর কাছে অনাথাশ্রমের বাচ্চারা শুকনো পাতার ওপর লাফালাফি করে, যতক্ষণ না সেগুলো গুঁড়া গুঁড়া হয়ে যায়৷ পুরনো স্কুলের খাতারও একই দশা৷ ঝারুয়ারাশি অনাথাশ্রমের অধ্যক্ষা নির্মলা খাতি বললেন, ‘‘এগুলোয় লেখা, হোমওয়ার্ক সব করা হয়ে গেছে৷ খাতাগুলো এ বছরের নয়৷''

পুরনো থেকে নতুন সৃষ্টি৷ কাগজ আর পানি মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়৷ পরে তাতে ঝরা পাতা মেশানো হয়৷ কোনো হাইটেক ব্যাপার নয়, কিন্তু সাঙ্গালি আর সীমা এখানে যা তৈরি করেন, তা খুবই কাজের৷ বলা যেতে পারে অর্গ্যানিক গুল, কিংবা গুলের ইট৷ অনাথাশ্রম চলে দানের টাকায়, ওদিকে কাঠের দাম চড়া৷ অনাথাশ্রমের প্রধান সুরেশ খাতি বলেন, ‘‘খাবার কিনতেই অনেক টাকা লাগে৷ রান্নার জন্য গোটা গাছ বা কাঠ কেনাটা অপচয়৷ আমরা কাঠের একটা বিকল্প খুঁজছিলাম৷'' উল্লেখ্য, গত ২৫ বছরে নেপালের বনজঙ্গলের প্রায় এক-চতুর্থাংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে৷

Nepal
নেপালের অনাথাশ্রমের শিশুদের জীবনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছেছবি: DW/Wolf Gebhardt

অনাথাশ্রমে প্রায় ষাটজন শিশু বসবাস করে৷ তারা হয় বাপ-মা হারিয়েছে, নয়তো রাস্তাঘাটে মানুষ হচ্ছিল৷ ছাদের ওপর মজা করে স্লিপ খাওয়া যায়৷ আবার সূর্যের আলোয় পাইপের মধ্যে পানিও গরম হয়৷ সবে কিছুদিন হলো, দুটো মজার বাক্স বসানো হয়েছে৷ এগুলো আসলে সোলার প্যানেল৷ শিশুরা বলে, এগুলো থাকায় তারা সন্ধ্যায় পড়তে পারে, টেলিভিশন দেখতে পারে৷ এখনও কাঠের চুলা ছাড়া পুরোপুরি কাজ চলে না, ফলে রাতের রান্না তা দিয়েই করতে হয়৷ তবে ছেঁড়া কাগজ আর গুঁড়া পাতার গুল দিয়ে দুটো ছোট চুলা চালানো যায়৷

অর্গ্যানিক গুলের নানা সুবিধে আছে৷ রাঁধুনি তারা সিঞ্জলি বললেন, ‘‘এই গুল দিয়ে আগুন ভালো হয়, আঁচও বেশি হয়৷ অথচ ধোঁয়া হয় কম৷''

রাতের অন্ধকারে স্কুলের জন্য পড়তে হয়৷ তবে যেখানে এক ঘরে চোদ্দজন মেয়ে থাকে, সেখানে পড়াশুনো করা খুব সহজ নয়৷ অন্তত সন্ধ্যায় নিয়মিত বিদ্যুৎ থাকে, যা আগে সবসময় থাকতো না৷ আজ আলো আসে সোলার প্যানেলগুলো থেকে৷ ব্যাটারিতে দিনের আলো ধরে রেখে পরে তাই দিয়ে রাতের আলো জ্বলে৷

অনাথাশ্রমের প্রধান সুরেশের মাথায় নিত্যনতুন আইডিয়া খেলছে৷ অনাথাশ্রমের মাঠে চারটে মোষ পোষা রয়েছে৷ তারা প্রচুর গোবর তৈরি করে৷ অনাথাশ্রমের প্রধান সুরেশ খাতি বলন, ‘‘ওরা রোজ পঞ্চাশ কিলো গোবর দেয়৷ তাই দিয়ে আমরা বায়োগ্যাস তৈরি করতে পারি৷ সেই বায়োগ্যাস দিয়ে রান্না হতে পারে৷''

অনাথাশ্রমের এই খুদে বাসিন্দাদের অবশ্য প্রাণশক্তির কোনো অভাব নেই৷ একদিন তারা নিজেদের পথ নিজেরাই খুঁজে নেবে৷

এসি / এসবি