1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি

আশীষ চক্রবর্ত্তী৪ জুলাই ২০১৫

সমাজ তাঁদের বাঁকা চোখে দেখে৷ তাঁরা যে হিজরা! সরকার বাঁকা চোখটা একটু সোজা করার চেষ্টা করছে৷ নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ৷ মানুষের সমাজে মানুষ অজ্ঞতা, অন্ধতা, কুসংস্কারের কারণে চিরকাল অবজ্ঞা, অবহেলা পাবে তা তো হয় না৷

https://p.dw.com/p/1FrYu
ছবি: picture-alliance/dpa/Monirul Alam

সাম্প্রতিক কিছু খবরে ট্রান্সসেক্সুয়াল বা ট্রান্সজেন্ডার, অর্থাৎ হিজরাদের প্রতি সরকারের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে৷ প্রথমে হিজরাদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেয়া হলো৷ তারপর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এলো হিজরাদের ট্রাফিক পুলিশে নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ৷ হ্যাঁ, একটি মাত্র কাজেই হিজরারা সুযোগ পেতে পারেন৷ উন্নত বিশ্বে এমন খবরে হাসির রোল উঠতে পারে, কেউ কেউ প্রশংসা না করে সমালোচনাও করতে পারেন৷ হিজরাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কেন সব কাজ করার অধিকার নেই – এই প্রশ্নও নিশ্চয়ই তুলবেন অনেকে৷ তবে তাঁরা না বুঝলেও আমরা জানি, বাংলাদেশে একটি ক্ষেত্রেও হিজরাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা সরকারের জন্য রীতিমতো একটা ‘জায়ান্ট স্টেপ'৷

Deutsche Welle DW Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

তৃতীয় লিঙ্গভুক্ত মানুষগুলোকে বঞ্চনার ঘেরাটোপ থেকে তুলে আনার আরেকটি উদ্যোগ শুরু হলো সপ্তাহ খানেক আগে৷ তাঁদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তার স্বীকৃতি দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ এসএমই খাতের আওতায় হিজরাদের ঋণ দেয়ার জন্য ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ এ নির্দেশ কার্যকর হলে অদূর ভবিষ্যতে হিজরাদের শিল্পোদ্যোক্তার ভূমিকাতেও দেখা যাবে৷ শুধু সুখবর নয়, বাংলাদেশের অগ্রগতির অন্যতম সোপানও হতে পারে এই উদ্যোগ৷

হিজরারা ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে দক্ষতা দেখাতে পারবেন কিনা, ঋণ পেলে শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে পারবেন কিনা – এমন প্রশ্ন এখনো কেউ তুলেছেন বলে শুনিনি৷ সাহসিকতায় তাঁরা অনেকের চেয়েই এগিয়ে – হিজরারা বড় বড় ঘটনায় এমন প্রমাণ রাখার পর এ সব প্রশ্ন তোলার সুযোগ খুব একটা নেই৷ বইমেলায় ব্লগার অভিজিৎকে কুপিয়ে মারার ঘটনা শত শত নারী-পুরুষ চেয়ে চেয়ে দেখেছেন, অভিজিতের স্ত্রী চিৎকার করে সাহায্য চাইলেও শত লোকের ভিড় থেকে একজনও এগিয়ে যাননি৷ অথচ মনে করে দেখুন, আরেক ব্লগার ওয়াশিকুর রহমানকে কুপিয়ে মারার সময় কাছে ছিলেন একজন লাবণ্য৷ লাবণ্য হিজরা৷ কী সাহসিকতায় তিনি এক হামলাকারীকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তা তো আমরা জানি৷

লাবণ্য নামটি এলে রবীন্দ্রনাথের ‘শেষের কবিতা'-র লাবণ্যের কথা মনে পড়ে৷ শেষের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ অবশ্য সম্পূর্ণ অন্য প্রসঙ্গে, অন্য অর্থেই লিখেছিলেন, ‘‘পরমায়ু নিয়ে বেঁচে থাক প্রবীণ অধ্যাপক, প্রবীণ পলিটিশিয়ান, প্রবীণ সমালোচক৷'' সাহসী লাবণ্য সম্পর্কে জানার পর আমি হিজরাদের আরো বেশি করে পরমায়ু কামনা করি৷ নীরব, নিষ্ক্রিয়, আত্মকেন্দ্রিক মানুষের চেয়ে সোচ্চার, সক্রিয়, সাহসী, দরদি মানুষই তো আমাদের বেশি দরকার!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান