1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারীদের ব্যবসা-বাণিজ্যে সহায়তার অভিনব উদ্যোগ

কাটিয়া কেপনার/এসবি১৫ জুন ২০১৭

ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নারীদের পা রাখা বা সম্প্রসারণ করা আজও অনেক ক্ষেত্রে সহজ কাজ নয়৷ ভারতের এক নারী উদ্যোক্তা এক নেটাওয়ার্কের মাধ্যমে বাকিদের উৎসাহ দিতে অভিনব এক কাজ শুরু করেছেন৷

https://p.dw.com/p/2ejaP
Indien Reisanbau
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

নারীদের ব্যবসা-বাণিজ্যে সহায়তা

সুচরিতা এশ্বর ব্যাঙ্গালোর শহরে এক ব্যবসায়ীর কাছে এসেছেন৷ তিনি জানতে চান, মসলাপাতি কীভাবে প্রস্তুত করা হয়, মোড়ক কীভাবে গ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা হয় – এই সব৷ সুচরিতার সাহায্যে গায়েত্রী রাও তাঁর তৈরি মশলা গোটা দেশে বিপণন করতে চান৷ সুচরিতা বলেন, ‘‘গায়েত্রী স্টার্টআপ উদ্যোগ শুরু করেছেন৷ এঁরাও আমাদের কাছে আসেন৷ নতুন আইডিয়া বলে আমাদেরও খুব উৎসাহ রয়েছে৷ একেবারে শুরুর স্তরে থাকার ফলে আমরাও যাত্রাপথের শুরু থেকে তাদের সঙ্গে থাকতে পারি৷'' 

সুচরিতা এশ্বরেরও প্রথম দিকে একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে, যদিও তিনি অনেক আগেই পেশাগত জীবন বেছে নিয়েছিলেন৷ প্রায় ১৬ বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদের ফলে তিনি আচমকা সংকটে পড়েছিলেন৷ একা দুই মেয়েকে মানুষ করতে তাঁর অর্থের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল৷ সুচরিতা বলেন, ‘‘এই সব দেখে-শুনে বুঝতে পারলাম যে, মেয়েদের এভাবে স্বাধীনচেতা হিসেবে বড় করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে৷ এখানকার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে মেয়েদের যেভাবে মূলত গৃহবধু ও মা হিসেবে দেখা হয়, সেই প্রভাব থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে৷''

বছরখানেক আগে সুচরিতা যখন শিল্পপতিদের এক নেটওয়ার্কের পাশাপাশি নিজস্ব এক কোম্পানি শুরু করলেন, তখন তাঁর অনেক বন্ধুবান্ধব খুব অবাক হয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘নারীদের বিরুদ্ধে এই হিংসা, হামলা, শ্লীলতাহানি – বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের এসবের শিকার হতে হয়৷ তাঁরা স্বাধীন জীবন বেছে নিয়েছেন৷ অন্যদিকে ছেলেদের মানুষ করার সময় শেখানো হয়, মেয়েদের অবস্থান তাঁদের নীচে৷ মেয়েদের চিরায়ত ভূমিকায় ফিরিয়ে আনতে তাঁদের উপর হামলা চালানো দোষের কিছু নয়৷ এ কারণে আমরা সমাজে আরও বেশি সংঘাত দেখতে পাচ্ছি৷''

সুচরিতা তাঁর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে নারীদের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে সহায়তা করছেন, নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে তাঁদের সাহায্য করছেন৷ তরুণী উদ্যোক্তারাও এমন মিটিংয়ে নিজেদের পণ্য তুলে ধরেন৷ তারপর তাঁদের সুচরিতা ও অন্যান্যদের নানা কঠিন প্রশ্নের জবাব দিতে হয়৷ তারপর নেটওয়ার্কের সাহায্যে তাঁরা পরবর্তী পর্যায়ে পা রাখার সুযোগ পান৷ সুচরিতা এশ্বর বলেন, ‘‘অর্থের নাগাল পাওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জ৷ তারপর বাজারের নাগাল পাওয়া৷ তাই তাঁরা প্রথমে কাজ শুরু করে পরে যখন সম্প্রসারণ করতে চান, তখন তাঁদের বিপণন, বাড়তি গ্রাহক, নতুন বাজার ধরা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হয়৷ তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হলো প্রযুক্তির ব্যবহার৷''

এই নেটওয়ার্ক নারীদের সাহায্য করে, উৎসাহ দেয় এবং তাঁদের নিয়মিত একত্র করে৷ যেমন এক সন্ধ্যায় ব্যাঙ্গালোরের এক পানশালায় মিটিং বসেছে৷ তাঁদেরই একজন বললেন, ‘‘আমরা এক জনসংযোগ সংস্থা, তাই আমরা এমন কোম্পানি খুঁজছি, যারা সংবাদমাধ্যমে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছে৷ এমন এক মিটিংয়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি দারুণ স্টার্টআপ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, যাদের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে৷''

তবে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়৷ এক উদ্যোক্তা বললেন, ‘‘উঁচু পদে পুরুষরাই রয়েছে৷ তাই তাঁদের কাছে গিয়ে ব্যবসা শুরু করার কথা বললে তারা বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখে না, ভাবে– নারীরা আবার আমাদের কাজ কী বুঝবে!''
অনেকের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ যদিও তাঁরা ভারতের বর্ধিষ্ণু, খোলা মনের মধ্যবিত্ত শ্রেণির নারী৷ সুচরিতা বিলক্ষণ জানেন, নারী উদ্যোক্তারা পৃথিবীটাকে আরেকটু ভালো করে তুলছে৷ তিনি ও তাঁর নেটওয়ার্ক একজন নারীকেও সাহায্য করতে পারলে, নিজেদের কাজকে সার্থক মনে করেন৷