1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নববর্ষ উদযাপনে নিয়ন্ত্রণ আরোপ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৩ এপ্রিল ২০১৩

বাঙালির প্রাণের উত্‍সব পহেলা বৈশাখ এবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে৷ অনুষ্ঠানস্থলগুলোতে কাউকে বিকেল ৫টার পর থাকতে দেবেনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ রোববার বাংলা বর্ষবরণে যখন পুরোপুরি প্রস্তুত বাঙালি, তখন এই খবরে নেমে এসেছে হতাশা৷

https://p.dw.com/p/18F65
ছবি: AP

এবারই ব্যতিক্রম হল৷ জানিয়ে দেয়া হলো, ১লা বৈশাখের উত্‍সবে সময়ের নিয়ন্ত্রণ আরোপের করার কথা৷ পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় নববর্ষের উত্‍সব আয়োজন চলবে৷ এরপর আর না৷

এই সিদ্ধান্ত কেন নেয়া হল? জবাবে মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, নিরাপত্তার কথা ভেবে৷ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তবে তাঁর দাবি, আগেও বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যেই শেষ করার অনুরোধ করা হতো, তবে কাউকে বাধ্য করা হত না৷ কিন্তু এবার বিকেল ৫টার পর রমনা বটমূল, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ নববর্ষের কোন অনুষ্ঠান আর চলবেনা৷ আর অনুষ্ঠানস্থলে কাউকে থাকতে দেয়া হবেনা৷ কেউ থাকতে চাইলে বের করে দেয়া হবে৷

Bangladesch Neujahr 2012
বাঙালি কি এই নিয়ন্ত্রণ মানবে?ছবি: Reuters

তিনি আরও জানান, এবার ঢাকায় ২৫টি জায়গায় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হয়েছে৷ এর বাইরেও অনুষ্ঠান হবে৷ আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োগ করা হচ্ছে ১০ হাজার পুলিশ, ব়্যাব ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা৷ ২০০ চেকপোস্টে তল্লাশী হবে৷ আর থাকছে ভ্রাম্যমাণ নজরদারি৷ উত্‍সবে যোগ দেয়া মানুষের জন্যই এই নিরাপত্তা৷ কিন্তু এবার পরিস্থিতি একটু আলাদা ৷ তাই নিরাপত্তা ঝুঁকিও বেশি৷ রাজনৈতিক অস্থিরতা যেমন আছে আছে মৌলবাদীদের হুমকি৷ তাই বিকেল ৫টার পর তারা কোনভাবেই বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলতে দেবেন না তাঁরা৷ পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ অবশ্য জানিয়েছেন, গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ বা অনুমোদন পাওয়া কোন রাজনৈতিক সমাবেশ এই আদেশের আওতায় পড়বেনা৷

মহানগর পুলিশের এই সিদ্ধান্তে নগরবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ কেউ বলছেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে পুলিশ নিশ্চিত হলে তাদের এছাড়া আর কিইবা করার আছে৷ তবে কেউ কেউ বলছেন, ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে উত্‍সবের আয়োজনে সহায়তা করা পুলিশের কাজ৷ যারা নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে৷

কথা সাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, বাংলা বর্ষবরণ উত্‍সবে মহানগর পুলিশের এই নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত বেদনাদায়ক৷ এর আগে এরকম আর কখনো ঘটেনি৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবাধে প্রাণের উত্‍সবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে৷ আর তা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে নয়৷ তিনি বলেন, ১লা বৈশাখ একটি সর্বজনীন উত্‍সব ৷ একটি ক্ষুদ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী এর বিরোধী৷ তাদের হুমকিতে যদি এবার বিকেল ৫টার মধ্যে সব অনুষ্ঠান শেষ করতে হয়৷ তাহলে পরের বছর দেখা যাবে অনুষ্ঠান বন্ধেরই দাবি তুলবে মৌলবাদীরা৷ অথবা বলবে, ছায়ানটের অনুষ্ঠানে হামদ-নাত গাইতে হবে৷ এটা মেনে নেয়া যায়না৷ মুরশেদ বলেন, যারাই হুমকি দিক না কেন৷ আর তাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ভয় পেলেও বাঙালি ভয় পায়না৷ তারা প্রাণের উত্‍সব বাংলা নববর্ষ উদযাপনে এই নিয়ন্ত্রণ মানবেনা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য