ধর্ম, টুপি এবং মাথা ঢাকার ঐতিহ্য

ইউরোপের ইহুদিরা ১৭ এবং ১৮ শতকে টুপি পরতে শুরু করে, যার নাম ইয়ারমুকে৷ ইহুদিদের ধর্মীয় আইন অনুযায়ী পুরুষ এবং ছেলেদের জন্য প্রার্থনা, সিনাগগ ও কবরস্থানে অবস্থানকালে এবং ধর্মীয় বিষয় পড়ার সময় এ টুপি মাথায় দেওয়া বাধ্যতামূলক৷

রোমান-ক্যাথলিক চার্চের বিশপদের বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিধান করা হয় মাইটার নামের টুপি৷ লম্বা এ টুপির প্রচলন ১১ শতকে৷ এটি পেছনের দুটি রিবন দিয়ে বাঁধা থাকে, যা ওল্ড টেস্টামেন্ট আর নিউ টেস্টামেন্টের প্রতীক৷

১৫ শতকে চালু হওয়া ভারতের পাঞ্জাবের শিখ ধর্মের অনুসারীরা ‘দাসতার’ নামের এই পাগড়ি ব্যবহার করেন৷ এটি সাধারণত পুরুষেরা তৈরি করে৷ ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী শিখ পুরুষেরা পাগড়ির নীচে তাদের চুল বাড়তে দেয়৷

ফারসি ভাষায় চাদর শব্দের অর্থ তাঁবু৷ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমান মেয়েদের একটি বড় অংশ চাদর দিয়ে মাথা ঢাকেন৷

সন্ন্যাসীনিরা সবসময় মাথাবন্ধনী পরে থাকেন৷ নবীন সন্ন্যাসীনিরা সাদা এবং প্রবীণরা কালো মাথাবন্ধনী ব্যবহার করেন৷ ধর্মীয় অবস্থান অনুযায়ী এই মাথাবন্ধনীর আকার বিভিন্ন রকমের হয়৷ কারোটা বেশ বড় হয়, যা মুখমণ্ডলসহ পুরো মাথা ঢেকে রাখে৷ আবার কারোটা খুব ছোট হয়, স্রেফ মাথার উপরের অংশ ঢেকে রাখে৷

মূলত একটি ধর্মীয় পোশাক হিসেবে পরিচিত, যা নিয়ে পুরো পৃথিবীতেই এখন তর্ক হচ্ছে৷ তুরস্ক বা আরবের মেয়েরা ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে এটির ব্যবহার করতো৷ পরে পুরো পৃথিবীতেই এটি ছড়িয়েছে৷

মূলত হাসিডিক মতাদর্শের ইহুদিরা এ ধরনের টুপি ব্যবহার করেন৷ হাসিডিক মতাদর্শের ইহুদিদের পশ্চিম ইউক্রেনে উত্থান হয় ১৭ থেকে ১৮ শতাব্দীর গোড়ায়৷

কাপড়, কার্ডবোর্ড এবং এক টুকরো রেশমি কাপড় দিয়ে তৈরি ‘বিরাশা‘ ১২ শতাব্দীর রোমান ক্যাথলিক যাজকরা ব্যবহার করা শুরু করেন৷ জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে এই টুপিটি চার কোণা ৷ তবে অনেক জায়গায় এটি তিনকোণা৷

বিশেষ ধরনের মাথা ও মুখবন্ধনী৷ ১৫ মিটার লম্বা সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি এই মুখবন্ধনী উত্তর আফ্রিকার মুসলমান পুরুষরা পরতেন৷

উত্তর অ্যামেরিকার রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত অ্যামিশরা এই ধরনের টুপি ব্যবহার করেন৷ সুইজারল্যান্ড এবং দক্ষিণ জার্মানির অ্যানাব্যাপ্টিস্ট আন্দোলনের পর অ্যামিশদের প্রথম প্রজন্ম ধর্মীয় সহিংসতার জের ধরে ১৮ শতকে অ্যামেরিকায় পালায়৷ তাঁদের মেয়েরা ঘরে বসে বনেট বুনেন৷ অ্যামিশ পুরুষেরা খড় বা অন্যকিছুর তৈরি হ্যাট পরেন৷