1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দূষণ নয়, লক্ষ্য ইকো-ট্যুরিজম

১ জানুয়ারি ২০১১

মন্টেনেগ্রোর স্বপ্ন: পরিবেশ বান্ধব পর্যটনে দেশটিকে শীর্ষে নিয়ে যাওয়া৷ একসময় মন্টেনেগ্রোর ময়কোভাচ শহরটি পরিবেশ দূষণের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিল৷ সেই দুর্নাম ঘোচাতে চাচ্ছে মন্টেনেগ্রো৷

https://p.dw.com/p/zsCX
Marija, Martinovic, Tourism, Tourist, Town, Environment, Kasino, Hotel, Montenegro, Budva দূষণ, লক্ষ্য, ইকো-ট্যুরিজম, মনোরম, পরিবেশ, পর্যটক, পর্যটন, মন্টেনেগ্রো, ইউরোপ, ময়কোভাচ,
এমন মনোরম পরিবেশ পর্যটকদের তো টানবেই!ছবি: Filip Slavkovic

ইউরোপের দেশ মন্টেনেগ্রোর উত্তরে অবস্থিত ময়কোভাচ শহর৷ শহরটির কাছে ছিল একটি দস্তার খনি৷ সেখানে থেকে অব্যবহৃত বিষাক্ত পদার্থ ফেলা হতো খোলা এক জায়গায়৷ কয়েক দশক ধরে চলে এই বর্জ্য পদার্থ ফেলার কাজ৷ জমা হয়েছিল প্রায় ২.৫ টন বিষাক্ত পদার্থ৷ স্থানীয় মানুষরা একে ‘নীরব খুনি' বলে আখ্যায়িত করছে৷

পরিবেশবাদী মিল ম্রদোভিচ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বিষাক্ত পদার্থ খোলা জায়গায় ফেলে রেখে যাওয়া হচ্ছে৷ বাতাসের সঙ্গে ভেসে বেড়াচ্ছে বিষাক্ত কণা৷ আমরা সেগুলো খাবারের সঙ্গে খাচ্ছি, নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে নিচ্ছি৷ আমরা সেই খনির বর্জ্যপদার্থের প্রতিদান দিচ্ছি জীবন দিয়ে৷

১৯৯১ সালে বলকান যুদ্ধ শুরু হবার পরই খনিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ কিন্তু বর্জ্য ফেলার জায়গাটি উন্মুক্ত৷ প্রায় ১৮ হেক্টর জমি নিয়ে ঐ স্থান৷ সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত এক ধরণের তেল৷ এর পাশেই রয়েছে তিনটি বিশাল পাহাড়, দুটি ন্যাশনাল পার্ক এবং ইউরোপের একাধিক দেসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী টারা৷ টারা নদিটি একটি খাঁড়ির মধ্যে দিয়ে গেছে৷ ইউরোপের দীর্ঘতম ক্যানিয়ন বা গিরিখাতের উৎপত্তি হয়েছে সেখানে৷ ১৯৮০ সালে ইউনেস্কো এই গিরিখাত এবং টারা নদির অংশবিশেষকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছে৷

Strand in Montenegro
মন্টেনেগ্রোর একটি সমুদ্র সৈকতছবি: DW

টারার রূপ দেখতে প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক আসে মন্টেনেগ্রোয়৷ সাইক্লিস্ট, ব়্যাফটার এবং হাইকাররা দেশ বিদেশ থেকে আসে টারার কাছে৷ ফিনল্যান্ড, স্পেন এমনকি অ্যামেরিকা থেকেও দলে দলে মানুষ আসে টারার টানে৷

খুব অল্প সংখ্যাক পর্যটকই ময়কোভাচ শহরে যায়৷ এই অবস্থা পাল্টাতে চায় শহরবাসীরা৷ বিষাক্ত বর্জ্যপদার্থের সেই তেজ আর নেই৷ ২০০৭ সাল থেকে তা পরিষ্কার করা হচ্ছে৷ এখন পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক ভাল৷ ময়কোভাচের বাতাসে উড়ে-বেড়ানো ধুলো বিষাক্ত নয় বলে জানিয়েছেন, শহরের মেয়র মিলোরাদ মিত্রভিচ৷

তবে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন গিয়েছিলেন বর্জ্যস্থলের কাছে বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সবার চোখ আর নাক জ্বলা করতে শুরু করে৷ মুখে এক ধরণের তেতো স্বাদ চলে আসে সবার৷ এর কিছুক্ষণ পরেই সবাই তীব্র মাথাব্যাথার কথা বলে৷

স্থানীয় চিকিৎসক মিলোভান বোগাভাচ বলেন, এখানকার বাতাস মোটেই বিশুদ্ধ নয়৷ এটা যে কোন সুস্থ মানুষের জন্য হুমকিস্বরূপ৷ কোন ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা না চালিয়ে ময়কোভাচ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া উচিৎ নয়৷ আমার ধারণা, বাতাসে যে সব কণা উড়ে বেড়াচ্ছে তা থেকে ক্যান্সার হওয়ায়ও অস্বাভাবিক কিছু নয়৷

তবে ইউএনডিপি সাহায্য করছে সেখানকার পরিবেশকে রক্ষা করার৷ এই বিষাক্ত পদার্থ যেন নদি বা বাতাসে মিশতে না পারে সে জন্য পুরো জা.গাটা সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷ গত অক্টোবর থেকেই এই কাজ হাতে নেওয়া হয়ছে৷

এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হল, পুরো এলাকাটিকে পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত করা৷ সেখানে পার্ক থাকবে, থাকবে ছোট ছোট হোটেল৷ সবুজ আর প্রকৃতিতে সযত্নে কাছে আনা হবে৷ এছাড়া খেলাধুলার জন্য একটি স্পোর্ট্স সেন্টার তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে৷

এইতো গেল বর্জ্যস্থলের কথা৷ খনিটির কী হবে? সেখানে গড়ে তোলা হবে একটি মিউজিয়াম৷ তিন বছরের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাহায্য করছে ইউএনডিপি৷ আর্থিক সাহায্য করছে নেদারল্যন্ডস'ও৷ এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১১ মিলিয়ন ইউরো৷ বাজেট ধার্য করা হয়েছে প্রায় ২২ মিলিয়ন ইউরো৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান