1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দলিত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা

গাব্রিয়েল ডমিনগেজ/এপিবি২৪ নভেম্বর ২০১৪

গণধর্ষণের পর এক কিশোরীকে গাছের সাথে ঝুলিয়ে হত্যার ঘটনার পর থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফুঁসছে ভারতীয়রা৷ আইন বিশেষজ্ঞ ইন্দিরা জয়সিং বলেছেন, আইনি এবং রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা না থাকাই এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটার কারণ৷

https://p.dw.com/p/1DraR
Symbolbild Gewalt gegen Frauen in Indien
ফাইল ফটোছবি: picture alliance/Dinodia Photo Library

এ ঘটনার পর এ বছরই উত্তর প্রদেশের একটি গ্রামে ১৪ ও ১৫ বছরের দুই কিশোরী মাঠে প্রস্রাব করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়৷ বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় তারা সেখানে যেতে বাধ্য হয়৷ টিভি ফুটেজে দেখা যায় গ্রামবাসীরা নিহত একটি মেয়ের মরদেহ নিয়ে বসে আছে, যতক্ষণ না হত্যার বিচার হবে তারা লাশ সৎকার করবে না৷ এ ঘটনায় দুই পুলিশসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ মেয়ে দুটি নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের বাবা মা থানায় গিয়ে রিপোর্ট লেখাতে চাইলেও তারা দলিত বলে রিপোর্ট নেয়নি পুলিশ৷ ভারতে নিম্ন শ্রেণির দলিতরা বরাবরই এমন বৈষম্যের শিকার হয়৷ এ বিষয়েই ডয়চে ভেলের মুখোমুখি আইন বিশেষজ্ঞ ইন্দিরা জয়সিং৷

ডয়চে ভেলে: নারীদের বিরুদ্ধে এমন সহিংস আচরণের কারণটা কি?

ইন্দিরা জয়সিং: ভারতে নারীদের যতটুকু সম্মান বা মর্যাদা দেয়া হয়, দলিতরা তার একটুকুও পায়না৷ আর গ্রামে মেয়েদের জন্য কোন শৌচাগার নেই৷ তাই তারা মাঠে যেতে বাধ্য হয়৷ সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো বরাবরই এড়িয়ে যায় কর্তৃপক্ষ৷ এছাড়া এসব গ্রামে কিছু অপরাধী চক্র আছে যারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রতিপালিত হয় এবং এদের উপর কর্তৃপক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷ আর যখন তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তখন ঐ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেন, ‘‘ছেলেরা তো এমন করতেই পারে৷'' তাই এদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা রাজনীতিবিদরা, যাদের এ বিষয়ে কোনো দায়বদ্ধতা নেই৷

দলিতদের অবস্থানটা সমাজে কেমন?

ভারতে সমাজের সব থেকে নীচু জাতি, যারা দলিত নামে চিহ্নিত, তাদের সংখ্যা ১৬ কোটির মতো৷ মহাত্মা গান্ধী দলিতদের হরিজন বা ঈশ্বরের সন্তান নাম দিলেও, তাতে এদের অবস্থার ইতর বিশেষ কিছু হয়নি৷ আজও এরা অচ্ছুত৷ এদের মন্দিরে যাবার অধিকার নেই, উচ্চবর্ণের স্কুলে যাবার অধিকার নেই, উঁচু জাতের সঙ্গে এক কুঁয়ো থেকে জল নেবার অধিকার নেই৷ এমন কী একই শশ্মানে দাহ করারও অধিকার নেই৷ তাই জাতিভেদ দলিত নারীদের সহিংসতার অন্যতম প্রধান কারণ৷

যে পুলিশদের আটক করা হয়েছে তাদের যৌন সহিংসতার নতুন আইনে কী ধরনের শাস্তি হওয়ার কথা?

Indira Jaising
ইন্দিরা জয়সিংছবি: Indira Jaising

নতুন আইনে ভারতীয় পেনাল কোডের ১৬৬এ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা কোনো মামলা রিপোর্ট করতে রাজি না হয়, তবে তার শাস্তি ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড৷ আর যদি সে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত প্রমাণিত হয়, তবে তার জন্য শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং গণধর্ষণে অংশ নিলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে৷

এ ধরনের ঘটনা রোধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?

এখন ভারতের জন্য আসলেই দুঃখের সময়৷ তবে আশার বিষয় হলো, নারী অধিকার কর্মীরা তাঁদের আন্দোলন বন্ধ করছেন না৷ এমনকি প্রতিটি শ্রেণি পেশার মানুষ এখন এ ধরনের বর্বর নৃশংস আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে৷ এখন প্রয়োজন রাজনীতিক ও কর্তৃপক্ষকে দায়বদ্ধতার ব্যাপারটি স্পষ্ট করা৷

ইন্দিরা জয়সিং ভারতের সুপ্রিমকোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবং ল'য়ারস কালেকটিভ এর প্রতিষ্ঠাতা৷ তিনি ভারতের প্রথম নারী ‘এডিশনাল সলিসিটার জেনারেল'৷