1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে মোটরসাইকেল!

১৯ অক্টোবর ২০১৬

আস্ত একটা যান৷ কারখানায় নয়, থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি৷ হালকা কাঠামো ও ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের কারণে বেশ চটপটে ও পরিবেশবান্ধব৷ জার্মানির একটি সংস্থা এমন এক যান তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে৷

https://p.dw.com/p/2RPUL
DW euromaxx Das erste Motorrad aus dem 3D-Drucker
থ্রিডি প্রিন্টারের সাহায্যে তৈরি ‘লাইট রাইডার’ছবি: DW

‘লাইট রাইডার' ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলে, ওজন মাত্র ৩৫ কিলো৷ কাঠামোর ওজন শুধু ৬ কিলো৷ পুরোটাই থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি৷ ইলেকট্রিক ইঞ্জিনে চলে৷ মোটরসাইকেল চালক ব্যার্নহার্ড গ্রুবার হাতেনাতে পরীক্ষা করে বলেন, ‘‘সত্যি অসাধারণ৷ দারুণ৷ দারুণ মজা লাগে৷ হালকা ওজনের কারণে খুবই চটপটে, স্বাভাবিক৷''

অন্যদিকে ব্যার্নহার্ড গ্রুবার-এর হার্লি ডেভিডসন মোটরসাইকেলের ওজন ৩২০ কিলো৷ ই-মোটরসাইকেল সে তুলনায় প্রায় ১০ গুণ হালকা৷ কাকতালীয়ভাবে তিনি জানতে পারেন, যে এয়ারবাস-এর সহযোগী কোম্পানি এপি ওয়ার্কস-এ তাঁর সহকর্মীরা এমন এক যান সৃষ্টি করেছেন৷ প্রথমে খেলাচ্ছলেই এই আইডিয়া কার্যকর করা হয়েছিল৷ এর উদ্ভাবক নিলস গ্রাফেন পেশায় এভিয়েশন ইঞ্জনিয়ার৷ তিনি বলেন, ‘‘বড়দিনের পার্টির সময় খেলাচ্ছলে এই আইডিয়া উঠে এসেছিল৷ এক সহকর্মী ও আমি ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে প্রশ্ন তুলেছিলাম, ই-বাইক বা মোটরবাইক নিয়ে কিছু করা যায় কিনা৷ সংস্থার প্রধান কথাটা লুফে নিয়ে একটা প্রকল্প শুরু করে দিলেন৷ তার ফল এই লাইট রাইডার৷''

কম্পিউটারেই এই যান সৃষ্টি করা হয়েছে৷ চলার সময় মোটরবাইকের উপর কোন কোন চাপ পড়ে, তার ভিত্তিতে এক অ্যালগোরিদম লাইট রাইডারের মাপজোক স্থির করেছে৷ নিলস গ্রাফেন বলেন, ‘‘আমরা ভেবে দেখলাম, মোটরসাইকেলের মধ্যে কোথায় কী থাকে৷ সেটা কত বড় হয়, হুইলবেস কেমন, অথবা মোটরসাইকেল চলার সময় কী ঘটে – এ সবের ভিত্তিতে কম্পিউটার এই জ্যামিতি সৃষ্টি করেছে৷ যে সব অংশের কোনো কাজ নেই, সে সব বাদ পড়েছে৷''

এভিয়েশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এক অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় থেকে থ্রিডি প্রিন্টারে কাঠামোর অংশগুলির হুবহু মডেল তৈরি হয়েছে৷ অ্যালুমিনিয়ামের মতই হালকা, অথচ প্রায় টাইটেনিয়ামের মতো স্থিতিশীল৷ তবে থ্রিডি প্রিন্টারে ধাতু সৃষ্টির ক্ষেত্রে এখনো যে সীমা রয়েছে, তার ফলে ডেভেলপরারা সমস্যার মুখে পড়েছিলেন৷ নিলস গ্রাফেন বলেন, ‘‘তথাকথিত ওয়েল্ডিং সিম সৃষ্টি করতে আমাদের কাঠামোটিকে অনেকগুলি ছোট অংশে ভাগ করতে হয়েছিল৷ অথচ এই মুহূর্তে প্রিন্টারে এমন আকারের একটির বেশি বড় অংশ প্রিন্ট করা যায় না৷ অংশগুলির বিন্যাস ভেবে নিয়ে, শেষে সেগুলি জোড়া দেওয়ার কাজ নিশ্চিত করা ছিল এক চ্যালেঞ্জ৷''

অনেক ডিজাইনার ও সৃষ্টিশীল মানুষ থ্রিডি প্রিন্টিং নিজেদের মতো করে আবিষ্কার করেছেন৷ প্রিন্টার দিয়ে তৈরি একটি চেয়ার তৈরি করা কোনো সমস্যা নয়৷ এমনকি কম্পিউটারে গয়নার ডিজাইন করে প্রিন্ট করা সম্ভব৷ ভাবতে অবাক লাগলেও এ ভাবে জুতোও তৈরি করা সম্ভব৷

নতুন স্টার্ট-আপ হোক, অথবা বড় সংস্থা – সবাই তাদের আইডিয়া আরও দ্রুত ও কম খরচে কার্যকর করতে পারে৷ মিউনিখের ‘পপ আপ ল্যাব'-র এক বিশেষজ্ঞ সবচেয়ে বড় সিরিজ থ্রিডি প্রিন্টারের সুবিধাগুলি বুঝিয়ে বললেন৷ থ্রিডি প্রিন্টিং বিশেষজ্ঞ ইয়োহান ফন হেয়ারভার্ট বলেন, ‘‘আমরা এখন আরও দ্রুত কোনো পণ্যের উন্নতি করতে পারি৷ আমার জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনি যদি ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট না হতে পারেন, তখন আমি বলি, সেটি নষ্ট করে ফেলুন৷ ফেলে দিয়ে নতুন করে শুরু করুন৷ হারাবার তো কিছু নেই! বড়জোর ৩৫, ৫০ বা ১০০ ইউরো লোকসান হয়েছে৷ কিন্তু সীমা ভেঙে সৃজনশীল হয়ে উঠতে পেরেছেন৷''

থ্রিডি প্রিন্টারে লাইট রাইডার-এর হালকা কাঠামো প্রিন্ট করে এভিয়েশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখছেন নিলস গ্রাফেন৷ এভিয়েশন ইঞ্জনিয়ার নিলস গ্রাফেন বলেন, ‘‘আকাশে প্রতি কিলোগ্রাম বিমান সংস্থা ও যাত্রীদের জন্য ব্যয় অনেক বাড়িয়ে দেয়৷ থ্রিডি প্রিন্টিং-এর মাধ্যমে উৎপাদন করতে পারলে অংশগুলি অনেক হালকা হতে পারে৷ সহজে বলতে গেলে শেষ পর্যন্ত গ্রাহকদের অনেক কম অর্থ গুনতে হবে৷''

এই মোটরসাইকেলের ডিজাইনও বেশ সমাদর পাচ্ছে৷ বিশেষ করে সংস্থার পুরুষ কর্মীরা খুবই উৎসাহী৷ হার্লি ডেভিডসন চালক ব্যার্নহার্ড গ্রুবার-ও এক গুণমুগ্ধ ভক্ত হয়ে উঠেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘কম দূরত্বের জন্য এমন মোটরসাইকেল দারুণ হতে পারে৷ চট করে অফিস যেতে হলে এর জুড়ি মেলা ভার৷ তার উপর এত কম শব্দ৷ প্রতিবেশীরা বিরক্ত হবে না৷ দারুণ!''

থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি এই মোটরসাইকেলের মূল্য ৫০,০০০ ইউরো৷ এর মধ্যে ৩০টি অর্ডার এসে গেছে৷ রাজপথে নামাতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেবার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে৷

প্রতিবেদন: লিন্ডা পাউল/এসবি

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান