1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে বিশ্বকাপ

রাজীব হাসান
৩১ মে ২০১৮

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সমর্থক আর্জেন্টিনার৷ সাফল্য না পেলেও সমর্থক সংখ্যা বেড়েছে৷ কেন ভালেবাসি, এর যুক্তিগ্রাহ্য কোনো ব্যাখ্যা হয়তো আসলে থাকেই না৷ ভালোবাসা অকারণ!

https://p.dw.com/p/2ygsb
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/V. R. Caivano

আপনি আর্জেন্টিনা ফুটবলের পাগল সমর্থক? তাহলে আগে ক্রিকেটকে বলুন ধন্যবাদ!

ভাবছেন ফুটবল ভানতে ক্রিকেটের গীত কেন গাইছি? মশাই, আর্জেন্টিনায় ফুটবল এসেইছিল ক্রিকেটের হাত ধরে৷ আর্জেন্টিনার ইতিহাসে প্রথম ফুটবল ম্যাচটা হয়েছিল ক্রিকেট মাঠে৷ আর্জেন্টিনা আগে ক্রিকেট শিখেছিল, তারপর ফুটবল৷ বললে কেমন দেখাবে জানি না, ভারতে প্রথম আনুষ্ঠানিক ক্রিকেট ম্যাচের ৩০ বছর আগে আর্জেন্টিনার মাটিতে প্রথম কোনো ক্রিকেট ম্যাচ হওয়ার রেকর্ড আছে!

ভাগ্যিস ক্রিকেটের জ্বরটা তাদের পেয়ে বসেনি! প্যাড-হেলমেট পরে লিওনেল মেসি ব্যাট করতে নামছেন, সার্জিও আগুয়েরা করছেন স্পিন, আর পেস বোলিং করতে গিয়ে গঞ্জালো হিগুয়েইন একের পর এক ওয়াইড দিচ্ছেন (কেন, বুঝছেন তো!)...ভাবতেই কেমন জানি লাগছে৷

ব্রিটিশরা যেখানেই গেছে, সঙ্গে করে নিয়ে গেছে ফুটবল আর ক্রিকেট৷ এক সময় আর্জেন্টিনায় ঢল নেমেছিল ব্রিটিশদের৷ আর্জেন্টিনার বাণিজ্য সম্ভাবনা হাতছানি দিয়ে ডাকছিল সেই সুদূর দক্ষিণ আমেরিকায়, জাহাজে করে যেখানে যেতে লেগে যেত কয়েক মাস৷ ১৮৩০-এর দিকে বাকি সব কমনওয়েলথ রাষ্ট্রের চেয়ে আর্জেন্টিনায় ব্রিটিশদের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি৷ আর্জেন্টিনার কাছ থেকে তারা ট্যাঙ্গো শিখেছেন৷ আর আর্জেন্টিনাকে শিখিয়েছেন ক্রিকেট-ফুটবলের কায়দা-কানুন৷

বুয়েনস আইরেসে চাকরি করতেন এমন কিছু সাহেব-সুবো ক্রিকেট শুরু করে দেন, সেটা ১৮০০ সালের শুরুর দিকের কথা৷ তার কিছুকাল পরে শুরু হয় ফুটবল৷ আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে ক্রিকেটকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷ কারণ, ব্রিটিশরা যখন প্রথম ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের উদ্যোগ নিলো, দেখা গেল, খেলার মতো মাঠই নেই৷ ক্রিকেট সংস্থাকে অনুরোধ করা হলো, তারা কি খেলা স্থগিত রেখে ফুটবলকে এক দিনের জন্য মাঠটা ছেড়ে দেবে? ক্রিকেট সানন্দে রাজি হলো৷ তখন কি আর ক্রিকেট জানতো, এই এক দিনের জন্য ছেড়ে দেওয়া মাঠটি আসলে চিরদিনের জন্যই আর্জেন্টিনায় ফুটবল উন্মাদনা গ্রাস করবে প্রলয়-বেগে!

শুধু আর্জেন্টিনা নয়, ফুটবল নামের এক চর্ম গোলকের এই খেলা পরে সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ আর এর পেছনে দক্ষিণ অ্যামেরিকা মহাদেশটির অবদান অনেক৷ ফুটবল ইউরোপে জন্মেছে, বেড়ে উঠেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকায়৷ আর আর্জেন্টিনা গর্ব করতে পারে, দক্ষিণ অ্যামেরিকায় ফুটবলটা শুরু হয়েছিল তাঁদের দেশেই৷

আপনার ব্রাজিল সমর্থক বন্ধুরা সব সময় হলুদ জার্সির ইতিহাস আর ঐতিহ্য নিয়ে খোঁচায়? চুপি চুপি আপনাকে কিছু দারুণ তথ্যের অস্ত্র দিয়ে রাখি৷ ব্রাজিলে প্রথম ফুটবল ম্যাচ হয়েছিল ১৮৯৪ সালে, আর আর্জেন্টিনায় ১৮৬৭ সালে৷ ১৮৯১ সালেই আর্জেন্টিনায় ফুটবল লিগ শুরু হয়ে যায়৷ সারা বিশ্বেই এর আগে মাত্র চারটি ফুটবল লিগ ছিল, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড আর হল্যান্ডে৷ ব্রাজিলে প্রথম ফুটবল ম্যাচ হওয়ার এক বছর আগেই আর্জেন্টিনায় ফুটবল সংস্থা (এএফএ) প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়৷ বয়সের দিক দিয়ে এএফএ ইতিহাসে অষ্টম৷

দ্রুত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলও গড়ে ওঠে৷ ১৯০১ সালের ১৬ মে আর্জেন্টিনা তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে৷ প্রতিপক্ষ ছিল উরুগুয়ে, যে নামটির সঙ্গে আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাস এর পরের কয়েক বছরেও হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে৷ ১৯১৬ সালে চালু হয় কোপা অ্যামেরিকা৷ আন্তর্জাতিক ফুটবলের সবচেয়ে প্রাচীন টুর্নামেন্ট৷ আর্জেন্টিনার স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এই টুর্নামেন্ট৷ কিন্তু স্বাগতিক আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় উরুগুয়ে৷ এই দুই দেশের ফুটবলীয় সম্পর্ক রীতিমতো শত্রুতায় রূপ নিতে থাকে তখন থেকেই৷ অথচ তখনো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ সেভাবে জমেই ওঠেনি৷

ব্রাজিল যে পরে ফুটবল শুরু করেও আর্জেন্টিনাকে টপকে যেতে শুরু করেছে, এ ব্যাপারে প্রথম আঁচ আর্জেন্টাইনরা পায় ১৯১৯ কোপা আমেরিকায়৷ তত দিনে দু'টি কোপা আমেরিকার আসর হয়েছে৷ দুবারই আর্জেন্টিনাকে রানার্স আপ বানিয়েছে উরুগুয়ে৷ আর আর্জেন্টিনার বুকে প্রতিশোধের লাভা জমেছে বিষ্ফোরিত হবে বলে৷ কিন্তু কোপার তৃতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় ব্রাজিল৷ চতুর্থ আসরে আবার উরুগুয়ে৷ অবশেষে ১৯২১ সালে আর্জেন্টিনা প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফির স্বাদ পায়৷ কিন্তু ১৯২২ সালে ব্রাজিল আর ১৯২৩ সালে উরুগুয়ে আবার কোপা অ্যামেরিকার ট্রফি জিতে নেয়৷

শুধু দক্ষিণ অ্যামেরিকা নয়; উরুগুয়ে যে সারা বিশ্বের ফুটবল পরাশক্তি হয়ে উঠেছে, সেটা দেখানোর সুযোগ তাদের সামনে ছিল না৷ তখন আন্তর্জাতিক ফুটবল তো আর এত সহজ ছিল না! উরুগুয়ে বাকি পৃথিবীকে নিজেদের ফুটবল জাদু দেখানোর সুযোগ পেলো ১৯২৪ অলিম্পিকে, ১৯২৩ কোপা অ্যামেরিকার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে৷ আর প্রথমার অংশ নিয়েই সোনা জিতলো উরুগুয়ে৷ সোনা জিতলো ১৯২৮ অলিম্পিকেও৷

এবার আর্জেন্টিনার দুঃখ হয়ে এলো উরুগুয়ে৷ এই অলিম্পিকে সুযোগ পেয়ে আর্জেন্টিনা উঠে গিয়েছিল ফাইনালে৷ এবার সুযোগ সোনা জেতার৷ কোপা অ্যামেরিকার চেয়েও বড় গর্বের হয়ে থাকবে এই সোনার মেডেল৷ কিন্তু কোথায় কী! প্রথম ম্যাচটা ১-১ ড্র হওয়ায় তিন দিন পর ফিরতি ম্যাচ হলো৷ সেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গেল ২-১ গোলে৷ আর্জেন্টিনা কি তখনো ভেবেছিল, এর চেয়েও বড় দুঃখ তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে!

১৯৩২ অলিম্পিকে ফুটবল বাদ দেওয়া হলো৷ আর খেপে গিয়ে ফিফা ঠিক করলো, দরকার নেই অলিম্পিকের৷ আমরা নিজেরাই সারা বিশ্ব থেকে দল নিয়ে আয়োজন করবো টুর্নামেন্ট৷ এভাবেই জন্ম নিলো বিশ্বকাপ, ১৯৩০ সালে৷ আর তখনকার টানা দুবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ছিল বলে আয়োজক দেশ হওয়ার মর্যাদা পেলো উরুগুয়ে৷

ফাইনালে মুখোমুখি হলো সেই উরুগুয়ে আর আর্জেন্টিনাই৷ দুই দেশের ফুটবল-সম্পর্ক ততদিনে সাপে-নেউলে চেহারা নিয়েছে৷ ফাইনালে কোন দলের বল নিয়ে খেলা হবে, এ নিয়ে শুরু হয়ে গেল ঝগড়া৷ আর্জেন্টিনা উরুগুয়ের দেওয়া বল দিয়ে খেলতে রাজি নয়৷ নিজের দেশে বিশ্বকাপ হচ্ছে, আর উরুগুয়ে খেলবে আর্জেন্টিনার বল দিয়ে? আপোশ হলো৷ দুই অর্ধে খেলা হবে দুই দলের বল দিয়ে৷

প্রথম অর্ধে খেলা হয়েছিল আর্জেন্টিনার বল দিয়ে৷ প্রথমার্ধ শেষে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে এগিয়েও ছিল৷ কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তিনটা গোল হজম করে বসে তারা৷ বলটা যে উরুগুয়ের ছিল!

আর্জেন্টিনার এই যে  বিশ্বকাপ দুঃখ শুরু হলো, তা ঘোচেনি ১৯৭৮ সালের আগ পর্যন্ত৷ তত দিনে ব্রাজিল তিনবার আর উরুগুয়ে দু'বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে বসে আছে! মজার ব্যাপার হলো, আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতার ৪৪ বছর আগেই বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গিয়েছিল ‘আর্জেন্টিনার’৷ ১৯৩৪ বিশ্বকাপ জয়ী ইতালি দলের চারজন খেলোয়াড় ছিল আর্জেন্টিনার৷ এর মধ্যে লুইস মন্টি ছিলেন ফুটবল বিশ্বের প্রথম দিকের তারকাদের একজন৷

১৯৭৮ বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল আরও একটি কারণে৷ সেবারই প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল দেশটি৷ আর এর দুই বছর আগে ক্ষমতায় আসা আর্জেন্টিনার স্বৈরশাসক বিশ্বকাপটিকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে চেয়েছিল৷ পেরেওছিল কিছুটা৷ তবে ফুটবল ব্যাপারটা আর্জেন্টিনার মানুষের কাছে কতটা পাগলামীর, সেটা বিশ্ববাসী জানলো ৮ বছর পর৷

সামরিক শাসনের ক্ষত হিসেবে পুরো আর্জেন্টিনা তখন অস্থিতিশীল৷ চারদিকে ঠাসা নিদারুণ হতাশা৷ সেই সময় দিয়েগেো মারাদোনা হয়ে উঠেছিলেন শেষ আশ্রয়স্থল৷ সেই ক্ষতের একমাত্র প্রলেপ; মহামারির একমাত্র ওষুধ৷ ব্যাপারটাকে আরও বেশি রাজনীতিক মসলা মাখালেন মারাদোনা নিজেই৷ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হলো আর্জেন্টিনা৷ ফকল্যান্ড যুদ্ধের স্মৃতি তখনো টাটকা৷ টাটকা সেই যুদ্ধে আর্জেন্টিনার সেনাবাহিনীর নিদারুণ পরাজয়ের লজ্জামাখা স্মৃতি৷

খেলাধুলাকে যতই সম্প্রীতির হাতিয়ার ভাবা হোক, ফুটবল মাঠ কখনো কখনো যুদ্ধক্ষেত্রই৷ ফুটবলাররা যেন গ্ল্যাডিয়েটর৷ মারাদোনা নিজের ফুটবলের সর্বোচ্চ বিন্দু নির্মাণ করতে বেছে নিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটাই৷ প্রথমে হাত দিয়ে করলেন সেই গোল যেটিকে মারাদোনা বলেছিলেন ‘হ্যান্ড অব গড’৷ কিন্তু ম্যাচটা মারাদোনা তাঁর প্রতারণার জন্য স্মরণীয় করে রাখতে চাননি৷ এরপর করলেন প্রকৃত অর্থেই বিখ্যাত হওয়ার মতো গোল, গোল অব দ্য সেঞ্চুরি৷ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত দুটি গোলের জন্ম হলো মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে! ম্যাচ শেষে মারাদোনা বললেন, ফকল্যান্ড যুদ্ধে নিহত আর্জেন্টিনার সন্তানদের হয়ে তিনি প্রতিশোধ নিলেন৷ আর এই প্রতিশোধে তাঁর পাশে ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর৷ হাত দিয়ে গোলটা তিনিই করিয়েছেন!

আর কিছু লাগে? মারাদোনা সারা আর্জেন্টিনায় চিরকালের জন্য হয়ে গেলেন মহানায়ক৷ অমর এক কিংবদন্তি, অক্ষয় এক রূপকথা৷ শুধু আর্জেন্টিনা? সারা বিশ্বেও৷ আর সেই ধাক্কা এসে লেগেছিল বাংলাদেশে৷

Rajib Hasan
রাজীব হাসান, ক্রীড়া সাংবাদিকছবি: privat

এ এক অদ্ভুত ব্যাপার৷ প্রায় কুড়ি হাজার কিলোমিটার দূরের দুটো দেশ৷ দূরত্বের চেয়েও বেশি দূরত্ব দুই দেশের ভাষায়৷ সংস্কৃতিতে৷ কিন্তু মিল আছে একখানে৷ আবেগের উথলানো জোয়ারে৷ দুই দেশের মানুষই ভীষণ রকমের আবেগপ্রবণ৷

আর সেই আবেগটাই যেন নাড়ির বন্ধন হয়ে গেছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার অনেক দূরের আর্জেন্টিনাকে এই দেশের মানুষ ভালোবেসে কাছে টেনে নিয়েছে৷ ফুটবলের সূত্রে তো বটেই, তবে তার চেয়েও বড় যোগসূত্রের নাম মারাদোনা, সেই ফুটবলার, যিনি খেলাটাকেও ছাপিয়ে গিয়েছিলেন৷ ফুটবলের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছিল একজন ফুটবলার৷

সেই ভালোবাসা আরও প্রবল হলো ১৯৯৪ সালে, ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে মারাদোনা যখন বহিষ্কৃত! এ ব্যাখ্যাতীত৷ এ-ও যেমন ব্যাখ্যাতীত, গত ২৫ বছরে আর্জেন্টিনা কোনো ট্রফিই জেতেনি৷ কোপা অ্যামেরিকা জিতেছিল সেই ১৯৯৩ সালে৷ সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ৩২ বছর আগে৷

তবে ৩২ বছরের শিরোপা খরায় ভালোবাসা কমেনি, বরং আরও প্রবলতর হয়েছে৷ কেন? সেটা অনুমান করা যায়৷ কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা না করে ভালোবেসে যাওয়াই তো বিশুদ্ধতম ভালোবাসা৷ আর আর্জেন্টিনা সেই অহংকারী প্রেমিকা, প্রেমিককে যে অনবরত কাঁদায়৷ চোখের জল কখনো শুকোতে দেয় না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান