তুরস্কে সিরিয়ার শিশু শ্রমিক
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালাতে অনেক শিশু তাদের পরিবারসহ তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে৷ সেখানে তৈরি পোশাক খাতে কাজ করছে অনেকে৷
দর্জির দোকানে
ইস্তাম্বুলের বাগসিলার এলাকায় শ্রমিক শ্রেণির মানুষের বাস৷ সেখানকার অনেক বাড়ির বেসমেন্টে রয়েছে কাপড় তৈরির ব্যবস্থা৷ সেখানে কাজ করে ১৩ বছরের সিরীয় শিশু খলিল৷ সপ্তাহে পাঁচদিন কাজ করে সে৷
ভবিষ্যৎ চিন্তা
‘‘আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিনা,’’ বলেছে খলিল৷ সিরিয়ায় থাকতে সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো৷ এরপর তুরস্কে পালিয়ে যাওয়ায় আর স্কুলে যাওয়া হয়নি৷
শিশু সহকর্মী
খলিল যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সেখানকার ১৫ জন কর্মীর মধ্যে চারজনই শিশু শ্রমিক এবং তারা সবাই সিরিয়া থেকে এসেছে৷ তাদের কোনো কাগজপত্র দেয়া হয়নি৷ ঘণ্টায় ৫০ ইউরো সেন্ট করে পায় তারা৷ তবে প্রাপ্তবয়স্করা পায় তার দ্বিগুন৷
শোষণ নাকি সাহায্য?
তুরস্কে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ৷ ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের নিয়োগ দেয়া অবৈধ৷ খলিল যেখানে কাজ করে সেি প্রতিষ্ঠানের মালিক জানেন সেটি৷ কিন্তু তারপরও খলিলদের নিয়োগ দেয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে তিনি আসলে ঐ শিশুদের আর্থিকভাবে সহায়তাই করছেন৷ ‘‘এখানে কাজ না করলে তারা বেঁচে থাকার মতো অর্থ পেতো না,’’ বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ প্রতিষ্ঠান মালিক৷
মুসা স্কুলে যেতে চায়
খলিলের সঙ্গে কাজ করে মুসা৷ তারও বয়স ১৩৷ কারখানায় কাজ করার পর যে সময়টুকু থাকে, তখন সে ফুটবল খেলতে পছন্দ করে৷ তার আশা, সিরিয়ায় একদিন শান্তি আসবে, তখন সে আবার স্কুলে যেতে পারবে৷
দিনে ১২ ঘণ্টা
ওর নাম আরা৷ বয়স ১১৷ তার মা গর্ভবতী, বাবাও আরেকটি পোশাক কারখানায় কাজ করে৷ সকাল আটটা থেকে শুরু করে কখনো কখনো রাত আটটা পর্যন্ত কাজ করে সে৷ এর মধ্যে দুবার বিরতি পায়৷ এভাবে মাসে সে ৭০০ লিরা বা ১৫৩ ইউরো (প্রায় ১৫ হাজার টাকা) আয় করে৷
সপ্তাহান্তে স্কুল
সপ্তাহের প্রতিদিন কারখানায় কাজ করতে হওয়ায় সাধারণ স্কুলে যেতে পারে না আরা৷ ফলে সিরীয় একটি ত্রাণ সংস্থার চালু করা স্কুলে সপ্তাহান্তে ক্লাস করে সে৷ গণিত, আরবি আর তুর্কি ভাষা শেখানো হয় সেখানে৷