1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ট্যাবলেট যুদ্ধ’ শুরু হয়ে গেছে

১৮ জানুয়ারি ২০১১

যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে হয়ে গেল কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শো বা সিইএস৷ প্রতি বছর জানুয়ারিতে বসে এই মেলা৷ সারা বছর ধরে যেসব ইলেকট্রনিক পণ্য মানুষের নজর কাড়বে, সেগুলোর একটা ঝিলিক দেখা যায় এই মেলায়৷

https://p.dw.com/p/zz1C
লাস ভেগাসে কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শোছবি: AP

এতদিন পর্যন্ত মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল টেলিভিশন সেট৷ কে কতো সুন্দর আর প্রযুক্তি সমৃদ্ধ টিভি বানাতে পারে - সেটাই দেখানো হতো মেলাতে৷ কিন্তু সেই দিন আর নেই৷ এখন চলছে ইন্টারনেট প্রযুক্তির যুগ৷ হবেই বা না কেন ? আমাদের জীবনটাকেতো ইতিমধ্যেই অনেক সহজ করে দিয়েছে ইন্টারনেট৷ সেটাকে আরও সহজ করা যায় কীভাবে, সেই জিনিসই দেখিয়েছে কোম্পানিগুলো৷

Flash-Galerie Time Magazin Best Inventions of 2010 Square
স্মার্ট ফোনছবি: Square, Inc

যেমন ধরুন আপনি বাজার করছেন৷ কিন্তু ফ্রিজে দুধ বা ডিম আছে কি না, সেটা আপনার মনে নেই৷ আবার বাসায় কেউ নেই যে দেখে আপনাকে জানাতে পারবে তথ্যটি৷ তখন নিরূপায় হয়ে আপনাকে আন্দাজের উপর ভর করে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ যেটা ভুলও হতে পারে, আবার সঠিকও হতে পারে৷ কিন্তু আপনাকে এই সমস্যা থেকে রেহাই দিতে ‘এলজি' নিয়ে আসছে একটি ফ্রিজ, যেটা ঘরে থাকলে আপনি বাজার থেকেই খবর নিতে পারবেন ফ্রিজে কী কী আছে৷ অবশ্য এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটা স্মার্ট ফোনের আর তার সঙ্গে বাড়িতে থাকতে হবে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক৷ শুধু তাই নয়, ফ্রিজের কোন অংশে আপনি কী জিনিস রেখেছেন, ফ্রিজ না খুলেই সেটা জানতে পারবেন৷

এবার স্মার্ট ওভেনের গল্প৷ এটা যুক্ত থাকবে একটা কম্পিউটার সার্ভারের সঙ্গে৷ তাহলে সে নিজে নিজেই কম্পিউটার থেকে বিভিন্ন রেসিপি ডাউনলোড করে রাখবে৷ ফলে আপনি যখন রান্না করতে যাবেন, তখন ওভেনের গায়ে থাকা মনিটরে ভেসে উঠবে আপনার কী কী প্রয়োজন সেই লিস্ট বা তালিকা৷ আর রান্না শেষ হলে ওভেন নিজে নিজেই আপনার স্মার্টফোনে বার্তা পাঠিয়ে দেবে৷ কী স্বপ্ন স্বপ্ন মনে হচ্ছে না তো?

এবার গাড়ির গল্প শোনাবো আপনাদের৷ জার্মান কোম্পানি ‘আউডি' একটি গাড়ি দেখিয়েছে মেলায়, যেটাতে বসে চালক তার চোখের সামনে থাকা কাঁচেই দেখতে পারবে গাড়ির গতি কতো এবং কোন দিকে যেতে হবে৷ এতদিন যে তথ্যগুলো জানার জন্য চালককে চোখ নীচে করে ড্যাশবোর্ডের দিকে তাকাতে হতো৷ এছাড়া মার্কিন কোম্পানি ‘ফোর্ড' এনেছে সম্পূর্ণ বিদ্যুতে চলবে এমন গাড়ি৷ আরেক মার্কিন কোম্পানি ‘জেনারেল মোটরস' এনেছে দুই সিটের এবং দুই চাকার গাড়ি৷ যেটা নিজে নিজেই পার্কিং করতে পারে৷ এমনতি স্মার্ট ফোন দিয়েই যাকে ডেকে নেয়া যাবে৷

এতক্ষণে নিশ্চয় সবার মনে একটা শব্দ গেঁথে গেছে৷ আর সেটা হলো স্মার্ট ফোন৷ আসলে সিইএস মেলার অন্যতম বড় আকর্ষণ ছিল স্মার্ট ফোন৷ বিশেষ করে ‘মটোরোলা' কোম্পানির ‘অ্যাট্রিক্স' নামের স্মার্ট ফোনটি নজর কেড়েছে সবার৷ এই ফোনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটা দিয়ে ল্যাপটপে চার্জ দেয়া যায়৷ মেলা শেষে দেখা গেল, স্মার্ট ফোন ক্যাটাগরিতে অ্যাট্রিক্সই সেরা বলে বিবেচিত হয়েছে৷

এক সময়ের নামকরা কোম্পানি মটোরোলা যেন এই মেলার মধ্য দিয়ে আবার সাফল্যের ধারায় ফিরে আসার ঘোষণা দিল৷ কারণ স্মার্ট ফোনের মতো তাদেরই তৈরি ট্যাবলেট কম্পিউটার ‘জুম' মেলার সেরা ট্যাবলেট কম্পিউটার বলে গণ্য হয়েছে৷

এবারের মেলায় ‘ট্যাবলেট যুদ্ধ' শুরু হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন৷ কারণ বেশ কয়েকটি কোম্পানির ট্যাবলেট কম্পিউটার এসেছে মেলায়৷ গত বছর আইপ্যাড বাজারে আসার পর, সেটার বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে কোম্পানিগুলো ট্যাবলেট কম্পিউটার বানাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ আর তারই ফল দেখা গেছে এবারের সিইএস-এ৷

এবার একটু ভিন্ন খবর৷ ‘গ্রিনপিস' নামের পরিবেশবাদী সংগঠনটি মেলা উপলক্ষ্যে একটি তালিকা তৈরি করেছে৷ যার মাধ্যমে কোন পণ্যটি কেমন জ্বালানি-বান্ধব সেটা জানানো হয়েছে৷ তালিকা বলছে, ‘আসুস'এর তৈরি একটি কম্পিউটার মনিটর সবচেয়ে বেশি জ্বালানি-বান্ধব৷ মোট ২১টি কোম্পানিকে জরিপে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানায় গ্রিনপিস৷ এর মধ্যে ‘অ্যাপল' ও ‘ফিলিপস' সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে সংগঠনটি৷

উল্লেখ্য, চার দিনব্যাপী এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে সারা বিশ্বের প্রায় ২,৭০০ কোম্পানি৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ