টিনএজাররা যখন যৌননিপীড়ক
১৬ জুন ২০১৭গবেষণায় অংশ নেয়া এক ছাত্রী নিজের অসহায়ত্বের কথা লিখেছে এভাবে, ‘‘কেউ আমাকে এ থেকে রক্ষা করো৷'' ফিলিপ ইউনিভার্সিটি মারবুর্গের গবেষক সাবিনে মাশকে ‘স্পিক' শিরোনামের এই গবেষণাটি করেছেন৷ তিনি ও তাঁর সহযোগীরা ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সি ২,৭০০ শিক্ষার্থীর কাছে যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা জানতে চান৷ যৌন নিপীড়নকে তারা সংজ্ঞায়িত করেন অপমানজনক ইশারা বা অঙ্গভঙ্গী, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যৌন হয়রানি, পর্ণ ছবি বা মুভি দেখতে বাধ্য করা অথবা অযাচিত স্পর্শ– এসবের মাধ্যমে৷
মাশকে বলছেন, ‘‘আমরা আশ্চর্য হয়েছি যে, এরা প্রতিদিনই এসবের শিকার হচ্ছে৷'' তিনি মনে করেন, এসব হয়রানির কারণ ও প্রতিকারের উপায় বের করা দরকার৷
গবেষণায় দেখা যায়, মেয়েরাই বেশি যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে৷ প্রতি তিন জনের এক জন মেয়ে অভিযোগ করেছে তাদের সহপাঠীরা জোর করে চুমু খেয়েছে৷ শতকরা ৫ ভাগেরও বেশি মেয়ে অভিযোগ করেছে যে, তাদের জোর করে নগ্ন ছবি বা ভিডিও তুলতে বাধ্য করা হয়েছে, জোর করে স্পর্শ করা হয়েছে, যা থেকে নিজেদের বাঁচাতে তাদের নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে৷ ছেলেদের মধ্যে প্রতি চার জনের একজন মৌখিকভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে৷
মাশকে মেয়েদের মধ্যে এই গবেষণায় অংশ নেয়ার বেশ আগ্রহ দেখেছেন৷ তারা ৯০ মিনিট সময় নিয়ে ৪০ পৃষ্ঠার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে৷
গবেষণাটি রাজ্য সরকারকেও নাড়া দিয়েছে৷ তারা মাশকে ও তাঁর দলকে ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু সচেতনতামূলক পাঠ তৈরি করতে বলেছে৷ এমনকি ছেলেমেয়েরাও এ বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছে, যা চমৎকৃত করেছে গবেষকদের৷ ‘‘এমনকি যারা এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারাও বলছে তাদের সাহায্য দরকার'' বললেন মাশকে৷
মের্সেবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হাইনৎস-য়্যুর্গেন ফস মনে করেন যে ‘মজা' ও নিপীড়নের মাঝে ফারাকটা ছেলেদের জানা দরকার৷
গবেষকরা মনে করছেন, পর্নোগুলো পুরুষতান্ত্রিক৷ তাই এগুলো ছেলেমেয়েদের মানসিকতায় সেভাবেই প্রভাব ফেলে৷ ফস বলছেন, যেহেতু এই বয়সে ৮০ ভাগ ছেলে ও ৪০ ভাগ মেয়ে অনলাইনে পর্ণ দেখে, তাই এসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলা দরকার৷
প্রতিবেদন: সাবরিনা পাব্স্ট/জেডএ