টঙ্গীতে বয়লার বিস্ফোরণে নিহত অনেক
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬বিস্ফোরণে পাঁচতলা ভবনটি পুরোপুরি ধসে পড়েছে৷ ভবনটিতে বিস্ফোরণের সময় তিনশ'র মতো শ্রমিক ছিলেন৷ ধসে পড়া ভবনের নীচে অনেকে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে৷ গাজীপুর ও ঢাকা মেডিক্যালে প্রায় অর্ধশত আহত শ্রমিককে ভর্তি করা হয়েছে৷
এই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রত্যক্ষদর্শী এবং হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা৷ শনিবার সকাল ছয়টায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা৷ এই রিপোর্ট লেখা অবধি সেখানে ২৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিল৷
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারাখানটিতে প্রতিদিন তিন শিফটে কাজ হয়৷ প্রতি শিফটে কমপক্ষে ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করে৷ বয়লার বিস্ফোরণের সময় কারখানাটিতে পুরোদমে কাজ চলায় ধারণা করা হচ্ছে তখনও অন্তত ১৫০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন৷ তবে কতজন শ্রমিক বের হতে পেরেছেন এবং কতজন ভেতরে আটকা পড়েছেন তা এখনো নিশ্চিত নয়৷
গাজীপুরের সিভিল সার্জন আলী হায়দার খান জানান, টঙ্গী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ১৭ জনের লাশ রাখা হয়েছে৷ এছাড়াও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন কয়েকজন৷ আর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ২৩ জনকে ভর্তি করার পর পাঁচ জন মারা গেছেন বলে জানান ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান৷ তিনি জানান, নিহতরা পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছেন৷ নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে৷
ফায়ার সার্ভিসের প্রধান নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল জানান ‘‘শনিবার ভোর ৬টা ৫ মিনিটের দিকে কারখানায় নীচতলায় বয়লার বিস্ফোরণ ঘটে৷ এরপর কারখানায় আগুন ধরে যায়৷ বয়লারের তেল এবং কারখানার কেমিক্যালের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে৷ বিস্ফোরণের পর ভবনটি ধসে পড়েছে৷''
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ‘‘আশেপাশের ভবনগুলোতে আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা৷ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছে এবং উত্সুক জনতাকে সরিয়ে দিয়েছে৷ যাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায় তার জন্য সচেষ্ট রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷''
এদিকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরিচালক এসএম আশরাফুজ্জামান জানিয়েছেন, সরকারের বিধান অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় নিহতদের দুই লাখ এবং আহতদের এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে৷ তবে ব্যাংক বন্ধ থাকায় ঈদের আগে এই অর্থ হস্তান্তর করা সম্ভব হচ্ছে না৷
প্রসঙ্গত, কারখানাটির মালিক মকবুল হোসেন সাবেক সংসদ সদস্য৷ ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক রায়হানুল ইসলাম আকন্দ জানান, ‘‘দুর্ঘটনার পর কারখানার মালিক বা কর্মকর্তাদের কাউকে দেখা যায়নি৷ ১৯৭৬ সালে সালে তৈরি এই ভবনটিতে দীর্ঘদিন ধরে প্যাকেজিং কারাখানার কাজ চলে আসছিল৷''
এদিকে, পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে৷ প্রাথমিকভাবে অবহেলা ও ভবন এবং বয়লারে ত্রুটির প্রমাণ পাওয়া গেছে৷
কারখানায় কেনো এত আগুন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷