1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় এই মুহূর্তেই সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে : জাতিসংঘ

১৮ অক্টোবর ২০১০

জাপানের নাগোয়ায় সোমবার শুরু হয়েছে কনভেনশন অন বায়ো-ডাইভার্সিটি৷ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত সংকটাপন্ন পৃথিবীর পরিবেশে কীভাবে সুস্থ্যতা ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে নীতিমালা আর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে৷

https://p.dw.com/p/PgzY
Nagoya
নাগোয়া শহরে শুরু হয়েছে কনভেনশন অন বায়ো-ডাইভার্সিটিছবি: picture alliance/dpa

সোমবার এই সম্মেলন শুরুর অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ আর প্রাচুর্য, যা মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন তাকে আমরা এভাবে হারিয়ে যেতে দিতে পারি না৷ পৃথিবীর জীব-বৈচিত্র্য, প্রাণীকুল এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষার নিমিত্তে আমাদের অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷ সম্প্রতি জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় একটি অভিন্ন নীতি প্রণয়নে জাপানের নাগোয়ায় অনুষ্ঠিত এই কনভেনশন অন বায়ো-ডাইভার্সিটি' বা সিবিডি'র মঞ্চে বিশ্বের ১৯৩ টি দেশের প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়েছেন৷

জানা গেছে, বছরের সবচেয়ে বড় আয়োজন হিসেবে নাগোয়ার এই সম্মেলনে জেনেটিক প্রোটোকল, ইকোসিস্টেম এবং জীব-বৈচিত্র্য রক্ষাই মুখ্য বিষয় থাকবে৷

সিবিডি'র নির্বাহী সচিব আহমেদ জোঘলাফ সম্মেলনের মুহূর্তটিকে মানব জাতির জন্য অবিস্মরণীয়কাল হিসেব উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ‘এখান থেকেই আমাদের কাজ শুরু করতে হবে, এবং তা এই মুহূর্ত থেকেই৷' তিনি বলেন, ‘এই জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস, বন উজাড় হওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর বিষয়গুলো যদি আমরা একটি সমন্বিত ইকো সিস্টেমের মাধ্যমে ঠেকাতে পারি সেক্ষেত্রে তা হবে অমূল্য একটি উদ্যোগ৷'

German President of the Federal Environment Agency
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২০ সালের মধ্যেই জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস ঠেকাতে সংকল্পবদ্ধছবি: picture alliance/dpa

জানা গেছে, ১২ দিনের এই সম্মেলনে মূলত বিশ্বের পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদির পরিকল্পনা প্রণয়নই প্রাধান্য পাবে৷ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ইকো সিস্টেমের ওপর ভয়াবহ চাপ পড়ছে৷ বন উজাড় হওয়া, জীব-বৈচিত্র্যের অবলুপ্তি এবং প্রাণী হত্যার কারণে পরিবেশের ইকো সিস্টেম প্রায় উবে যেতে বসেছে৷

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ২০২০ সালের মধ্যেই জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস ঠেকাতে সংকল্পবদ্ধ৷ অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ভাষ্য হচ্ছে - তারা এই সময়ের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করবে৷ এদিকে সিবিডি'র দেয়া এক তথ্যে জানা গেছে, ২০০৭ সালের মধ্যে পৃথিবীর জীব-সামর্থ্যের তুলনায় মানুষের চাহিদা পৌঁছেছিল ৫০ ভাগ বেশিতে, আর ২০৩০ সাল নাগাদ মানুষের প্রয়োজন হয়ে পড়বে আরেকটি আস্ত পৃথিবী৷ অর্থাৎ ২০৩০ সালের পৃথিবীর মানুষ-জনের চাহিদা মেটাতে মোট দুইটি পৃথিবীর জীব-সামর্থ্যের প্রয়োজন হবে!

এদিকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার বা ডব্লিউডব্লিউএফ এর প্রধান জিম লিপ জনিয়েছেন, আমাদের সমৃদ্ধি এবং অস্তিত্ব এ দুইই আদতে নির্ভর করে স্বাভাবিক ইকো সিস্টেমের ওপর৷ ইকো সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়বে৷ তিনি বলেন, আমাদের সভ্যতা, সমাজ এবং অর্থনীতির ভিত্তিই হচ্ছে- পৃথিবীর এইসব সমুদ্র, নদী আর অরণ্য৷

জিম লিপ আরো বলেন, ‘এমনকি কেবল অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করলেও কৃত্রিমভাবে পরিবেশ সৃষ্টির চেয়ে যদি আমরা ইকো সিস্টেমের সুস্থতাকে সুরক্ষিত করতে পারি এবং তা ফিরিয়ে আনতে পারি, আর্থিকভাবে সেটি ঢের বেশি সাশ্রয়ী হবে৷'

বিশ্বের পরিবেশ রক্ষায় এবং এর সুস্থতা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা তাদের এই ‘নাগোয়া পরিকল্পনা'য় ২০২০ সালের মধ্যে জীব-বৈচিত্র্যের ধ্বংস ঠেকানোর একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবেন বলেই জানা গেছে৷ এছাড়া তাদের এই নীতি নির্ধারণী আলোচনার টেবিলে দরিদ্র দেশগুলো কিভাবে তাদের জীব-বৈচিত্র্য আর পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিৎ করতে পারে সেজন্য আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর বিষয়টিও উত্থাপিত হবে৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক