জার্মানির সবচেয়ে দর্শনীয় আটটি গ্রন্থাগার
গ্রন্থাগার বলতে শুধু বই রাখার জায়গা নয়৷ একটি সমাজ বা সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটে দেশের বড় বড়, নামকরা গ্রন্থাগারগুলিতে, যেমন জার্মানিতে৷
স্টুটগার্টের মিউনিসিপাল লাইব্রেরি
২০১১ সালে তৈরি একটি সুবিশাল, এগারো তলা উঁচু কিউব৷ বাইরে ধূসর কংক্রিট, তার ওপর বসানো সারি সারি কাচের ইট৷ ভেতরটা শুধু সাদা৷ আলোয় ভাসা পাঁচতলা গ্যালারির তাক জুড়ে বই আর বই৷ রাত্রে লাইব্রেরি বিল্ডিংটির ওপর নানা রঙের আলো ফেলা হয়৷
ডাচেস আনা আমালিয়া লাইব্রেরি
ভাইমার শহরের এই ছোট্ট রত্নটি পুরনো বই, মানচিত্র, সংগীতের স্বরলিপি আর পুরনো বংশলতিকায় ভর্তি৷ ১৭৬৬ সালে রাজকীয় পুস্তক সংগ্রহটি এই রকোকো শৈলীর গ্রন্থাগারে আনার ব্যবস্থা করেন ডাচেস আনা আমালিয়া৷ তাঁরই নামে লাইব্রেরি৷ ২০০৪ সালে একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে মূল্যবান সংগ্রহটির একাংশ বিনষ্ট হয়৷ সারানোর পর গ্রন্থাগারটি আবার খোলা হয় তিন বছর পরে৷ লাইব্রেরিটি ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত৷
হ্যার্ৎজোগ আউগুস্ট লাইব্রেরি
জার্মানির ভোল্ফেনব্যুটেল শহরের বিবলিওথেকা আউগুস্তা, অর্থাৎ ডিউক অগাস্টের লাইব্রেরি বিশ্বের প্রাচীনতম গ্রন্থাগারগুলির একটি, অথচ এই গ্রন্থাগারের সুবিখ্যাত সংগ্রহের কোনোদিন কোনো ক্ষতি হয়নি৷ ডিউক অগাস্ট (১৫৭৯-১৬৬৬) বই সংগ্রহ করতে ভালোবাসতেন৷ এভাবে তাঁর সংগ্রহ ইউরোপের তৎকালীন গ্রন্থাগারগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে৷
ফস্টার লাইব্রেরি
দেখতে মানুষের মস্তিষ্কের আকারের হওয়ায় বার্লিনের মানুষ ভবনটির নাম দিয়েছে ‘দ্য ব্রেন’৷ বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির দর্শন ও কলাবিদ্যা বিভাগগুলির গ্রন্থাগার এই ফস্টার লাইব্রেরিতে৷ ভবনটি শীঘ্রই রাজধানীর একটি দর্শনীয় বস্তুতে পরিণত হয়৷ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি নরম্যান ফস্টার লাইব্রেরি ভবনটির নকশা করেন৷ উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালে৷
ওবারলাউসিট্জ লাইব্রেরি অফ সায়েন্সেস
পোল্যান্ডের সীমান্তের কাছে গ্যোরলিট্জ শহরে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি নির্মিত হয় ১৮০৬ সালে৷ প্রাচীন গ্রিক-রোমক স্থাপত্যের অনুকরণে অষ্টাদশ শতাব্দীর ক্লাসিসিজম নামের শৈলীর একটি চমকপ্রদ নিদর্শন হলো লাইব্রেরি অফ সায়েন্সেস-এর হলগুলি৷ ড্রেসডেন থেকে পুবের ব্রেসলাউ বা ভ্রকসুয়াভ অবধি এলাকাটির ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও সমাজ সংক্রান্ত এক লক্ষ চল্লিশ হাজার বই রাখা আছে এই লাইব্রেরিতে৷
ইয়াকব অ্যান্ড ভিলিয়াম গ্রিম সেন্টার
প্রখ্যাত রূপকথা সংগ্রাহকদের নামে সৃষ্ট এই কেন্দ্রটি বার্লিনের হুমবোল্ট ইউনিভার্সিটির অঙ্গ, তৈরি হয় ২০০৯ সালে৷ এখানে আছে একটি লাইব্রেরি ও হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার ও মিডিয়া পরিষেবা৷ রিডিং রুমটি (ছবিতে) ভবনের কেন্দ্রস্থলে৷ সুবিশাল, সুউচ্চ, যেন পাঠকরা খোলা আকাশের নীচে অধ্যয়ন করছেন৷
বাভেরিয়ান স্টেট লাইব্রেরি
মিউনিখের এই লাইব্রেরিটি বস্তুত বাভেরিয়া রাজ্যের গ্রন্থাগার৷ ষোড়শ শতাব্দী থেকে শুরু করে আজ অবধি দশ লাখেরও বেশি বই সংগৃহীত হয়েছে এই প্রামাণ্য সংগ্রহে৷ বর্তমান ভবনটি উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে নির্মিত হয়, তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ লাইব্রেরিটি সারিয়ে তুলতে বহু বছর সময় লেগে গেছে৷
প্রতিবেদন: ডাগমার ব্রাইটেনবাখ/এসি
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী