জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও মিলছে না ভিসা
২৪ অক্টোবর ২০২০ক্লাস শুরু হয়ে গেছে অনেক আগেই৷ কিন্তু ভর্তি হয়েও জার্মানিতে আসতে পারছেন না অনেক মাস্টার্সের শিক্ষার্থী৷ করোনার প্রকোপ শুরুর পর বিভিন্ন দেশে জার্মানির দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে৷ ছয়-সাতমাস পেরিয়ে গেলেও অনেক দেশেই শিক্ষার্থীরা ভিসা আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না৷ যেমন, মেক্সিকোর ভেলেন্টিনা সানচেজ৷
বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী তিনি৷ তার সহপাঠিরা সবাই সশরীরে ক্লাস করলেও তিনি মেক্সিকোর পুয়েবলা শহর থেকে অনলাইনে যুক্ত হচ্ছেন৷ সানচেজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিনই দূতাবাসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি৷ কখন ভিসা সাক্ষাতের প্রক্রিয়া খোলা হবে সেটি তারা বলতে পারছে না৷’’
একই পরিস্থিতিতে পড়েছেন বাংলাদেশ, ভারত, তুরস্ক, ইরান, নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা৷ এদের মধ্যে অনেকেই জার্মানি আসবেন ভেবে চাকুরি ছেড়েছেন৷ অনেকে ভিসা পাওয়ার জন্যে নিজেদের আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার ইউরো জমা করছেন৷
‘এডুকেশন ইজ নট ট্যুরিজম' (শিক্ষা পর্যটন নয়), ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অনলাইনে এই নামে একটি হ্যাশট্যাগ চালু করেছেন৷ যার মাধ্যমে দূতাবাস, জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে তারা ভিসার ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়েছেন৷
কোন কোন ক্ষেত্রে এটি কাজেও লেগেছে৷ কয়েকটি দূতাবাস এই সংকট সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে৷ ভারতে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করে এই বিষয়ে দূতাবাসের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন৷
তবে অনেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, দূতাবাসগুলো জার্মানির সরকারের সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে অনুসরণ করছে না৷ গত আগস্টে এক বিবৃতিতে দেশটির গবেষণামন্ত্রী আনিয়া কালিজয়েক জানিয়েছিলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীরা যদি প্রমাণ করতে পারেন যে বিদেশ থেকে শিক্ষা পুরোপুরি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না বা ক্লাসে উপস্থিতি আবশ্যক, তারা জার্মানিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন৷ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এক্ষেত্রে সব দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷ যেমন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলে করোনার সংক্রমণ ব্যাপক হলেও সেখানে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাত বাতিল করা হয়নি৷
ই-মেইলে ডয়চে ভেলের প্রশ্নের জবাবে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভিসা আবেদন ও ইস্যু করার বিষয়টি স্থানীয় পরিস্থিতির উপরই নির্ভর করছে৷ মেক্সিকো ও ইরানের করোনা পরিস্থিতি প্রকট হওয়ায় সেখানকার দূতাবাসের কার্যক্রম কমিয়ে আনা হয় বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে৷ তবে শিক্ষার্থীরা যাতে ভিসা পায় সেটি নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও উল্লেখ করা হয়৷
মেক্সিকো সিটি ও তেহরানে বছরে তৃতীয় প্রান্তিকে শিক্ষার্থীদের মোট ৩১০ টি ভিসা দেয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে কতজন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
আলেক্স ম্যাথিউস/এফএস