জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দলের পঁচিশ বছর
১৩ জানুয়ারি ২০০৫��শংকা ব্যর্থ প্রমাণ করে দলটি এখন বর্তমান কোয়ালিশন সরকারের ক্ষুদ্র অংশীদার৷
১৯৮০ সালের জানুয়ারী মাসে জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দল প্রতিষ্ঠিত হয়৷ তাই এই মাসের প্রথমদিকে বর্তমান কোয়ালিশন সরকারের শরীক দলটি একটি রুটিন বৈঠকে মিলিত হল৷ মাসের শেষের দিকে দলটি তার পঁচিশতম বর্ষপূর্তি স্মরণ করবে একটি আলোচনা সভার মাধ্যমে৷
পঁচিশ বছর আগে সবুজ দলটি প্রতিষ্ঠা করেন তদানীন্তন তরুন সবুজবাদী চরমপন্থীরা, অতি বামপন্থীরা৷ কিন্তু পঁচিশ বছর পর দলটির সেই পরিচয় এখন আর নেই৷ দলটি এখন কোয়ালিশন সরকারের অংশীদার৷
সবুজ দলের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে৷ এর প্রমাণ পাওয়া যায় বিভিন্ন সমীক্ষায়৷ ঐসব সমীক্ষায় দেখা গেছে, সবুজ দলের প্রতি রয়েছে দশ শতাংশ মানুষের সমর্থন৷ সবুজ দলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশকা ফিশার গত বেশ কয়েক বছর ধরে জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ৷ পরিবেশবাদী দলটি ইতিমধ্যে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে৷ প্রতিষ্ঠার সময় যা কেউ কল্পনাই করে নি৷
জার্মানির আর কোন পার্টিতে সবুজ দলের মত এত অল্প সময়ের মধ্যে এত পরিবর্তন ঘটে নি৷ বিদেশে জার্মান সৈন্য মোতায়েনের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিল দলটি৷ কিন্তু বর্তমানে দলটি এর পক্ষে৷ এক সময় এই পার্টি পরিচিত ছিল পার্টি-বিরোধী পার্টি হিসেবে৷ কিন্তু সেই পরিচয় মুছে ফেলেছে এখন দলটি৷
সবুজ দলের জন্মলগ্নে যাঁরা ছিলেন তরুন তাঁদের এখন বয়স বেড়েছে৷ তাই তাঁদের চরমপন্থী মনোভাবেরও পরিবর্তন ঘটেছে৷ এর ফলে দলটি লাভবান হয়েছে৷ সবুজ দল বেশ দ্রুততার সঙ্গেই সংসদে প্রবেশ করে৷ দলটি জার্মানির বাস্তবতা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে থাকে প্রথম দিকের নীতিমালা বিসর্জন দিয়ে৷ ফলে সবুজ দল তার প্রতি বহু সহানুভূতশীল সমর্থক হারায়৷ অবশ্য বেশ কিছু সমর্থক অর্জনও করে আবার দলটি৷
সবুজ দলের আমুল পরিবর্তনের পেছনে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন ইয়োশকা ফিশার৷ এক সময়ের পথ সংগ্রামী, বিকল্প পুস্তক ব্যবসায়ী এবং ট্যাক্সী চালক আজ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর সবচেয়ে প্রবীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
সবুজ দলের জন্মের আগে জার্মানিতে ছিল বেশ কিছু গোষ্ঠী৷ যেমন মহিলা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও শান্তিগোষ্ঠী৷ এই গোষ্ঠীগুলোর সদস্যরা সবুজ দলের সদস্য হন এবং পরে তাঁরা জার্মান সমাজের সঙ্গে মিশে যান এমনভাবে- যা প্রথমে ভাবা যায় নি৷ আর এঁরা সবাই হলেন প্রকৃত গণতন্ত্রী৷ এর ফলে দলটি বিশেষ লাভবান হয়েছে৷ দলটির অব্যাহত জনপ্রিয়তার কারণ এটাই৷