1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির কাছে নির্দোষ গুয়ানতানামো বন্দিদের গ্রহণ করার আবেদন অ্যামনেস্টির

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০

গুয়ানতানামো শিবিরের যেসব বন্দি নির্দোষ প্রমাণিত এবং যারা নিজেদের দেশে ফিরতে পারছেনা, মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির কাছে তাদের গ্রহণ করার আবেদন জানিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/M1RA
’আমরা মুক্তি চাই’ - গুয়ানতানামোর বন্দিরাছবি: AP

গুয়ানতানামোর মার্কিন সামরিক ঘাঁটির বন্দি শিবিরে এখন প্রায় ২০০ বন্দি আটক রয়েছে৷ তাদের কয়েকজনের অসামরিক মার্কিন আদালতে বিচার হবে৷ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সরকার ৪৫ জন বন্দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে পাঠাতে চায়৷ কিন্তু এই বন্দিরা চীন, লিবিয়া, রাশিয়া, সিরিয়া আর তিউনিসিয়ায় তাদের দেশে ফিরে গেলে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হবে বলে তাদের আশংকা৷ মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি চায়, জার্মানিও এরকম বন্দিদের গ্রহণ করুক৷

মোয়াজ্জেম বেগ নারকীয় যন্ত্রণার মুখ দেখেছেন৷ শুধু গুয়ানতানামোর বন্দি শিবিরেই নয়, আফগানিস্তানেও৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কান্দাহার আর বাগরামে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের আটক রাখে৷ মোয়াজ্জেম বেগের বন্দিদশা স্থায়ী হয় ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত৷ বৃটিশ নাগরিক বেগ মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তাঁর স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে বার্মিংহ্যামে থাকেন৷ গুয়ানতানামোয় এখনও যারা বন্দি আছে তাদের মুক্তির জন্য কাজ করছেন তিনি৷ বন্দিদের অসহায় অবস্থার কথা তাঁর নিজের অজানা নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতাম না কোনদিন আমার পরিবারকে দেখতে পাবো কিনা, আমার ফাঁসি হবে কিনা, আরও দশ বছর আমাকে বন্দিজীবন যাপন করতে হবে কিনা৷ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন যারা তারা এমন কথাই বলেছেন৷''

Logo amnesty international
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর লোগো

সাবেক বন্দি বেগ বলেন, অন্যান্য দেশেও আছে বন্দিশালা যেখানে গুয়ানতানামোয় চালান করার আগে সন্ত্রাসী সন্দেহে মানুষকে আটক রাখা হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘সেখানে নির্যাতন করা হয়, মারধোর করা হয়৷ হুমকি দেয়া হয় পরিবার পরিজনের বিরুদ্ধে কিছু করা হবে৷ বলা হয়, দিনের আলো আর কোন দিনই দেখতে পাবেনা৷ শেষ পর্যন্ত ভুল স্বীকারোক্তিতে সই দিয়ে ফেলে মানুষ৷''

২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক দায়িত্ব নেয়ার পর ঘোষণা করেন, এক বছরের মধ্যে গুয়ানতানামো বন্দি শিবির তিনি বন্ধ করে দেবেন৷ কিন্তু এখন আর সেকথা শোনা যাচ্ছেনা৷ প্রায় ৮০ জন গুয়ানতানামো বন্দির প্রতিনিধিত্ব করছেন মার্কিন আইনজীবী জাকারি কাৎসনেলসন৷ তিনি বলেন, ওবামা দেশের মানুষের মনোভাবটা ধরতে পারেননি৷ সাবেক বন্দি মোয়াজ্জেম বেগের সঙ্গে মিলে নির্দোষ বন্দিদের গ্রহণ করানোর জন্য সারা ইউরোপে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি৷ অ্যামনেস্টি সাহায্য করছে তাঁদের৷

শুক্রবার বার্লিনে অ্যামনেস্টির প্রতিনিধি ইউলিয়া ডুখরো বেগ ও আইনজীবী কাৎসনেলসনের উপস্থিতিতে বলেন, ইইউ-র আটটি দেশ এবং সুইজারল্যান্ড এ পর্যন্ত প্রাক্তন কিছু বন্দিকে গ্রহণ করেছে অথবা গ্রহণ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে৷ অ্যামনেস্টি জার্মানিকেও গুয়ানতানামোর নির্দোষ ঘোষিত বন্দিদের গ্রহণে এগিয়ে আসার আবেদন করেন৷ সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস সংগঠনের আইনজীবী সোফি ভেলার জানান, এ পর্যন্ত পর্তুগাল আর ফ্রান্স দুজন করে এবং বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি আর সুইজারল্যান্ড একজন করে বন্দি গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান৷ তিনি মনে করেন এই বন্দিদের সমাজের মূল ধারায় সাফল্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার সম্ভাবনা খুবই ভাল৷

প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন