জার্মানরা শীতে যা খেতে ভালোবাসেন

সাওয়ারব্রাটেন সাধারণত গরুর মাংস দিয়ে তৈরি হয়, তবে অন্য ধরনের মাংসও ব্যবহার করা যেতে পারে৷ মাংস ১০ দিন ম্যারিনেট করে রাখার পর তা রান্না করা হয়৷ মশলা দেওয়া ওয়াইন বা ভিনিগারে ভিজিয়ে রাখার দরুণ মাংসটা খুব নরম হয়ে যায়৷ প্রথাগতভাবে সাওয়ারব্রাটেন সার্ভ করা হয় ‘রোটকোল’ বা লাল বাঁধাকপির সঙ্গে৷ আপেলের টুকরো, ভিনিগার আর নানা ধরনের মশলা মিশিয়ে কম আঁচে রোটকোল রান্না করা হয়৷

গরুর মাংস পাতলা করে কেটে, সেই মাংসের স্লাইসে বেকন, আচার, পেঁয়াজ আর সর্ষেবাটার পুর দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়৷ পরে রোলগুলো প্রায় এক ঘণ্টা ধরে প্যানে সেদ্ধ করা হয়৷ আমিষ যারা পছন্দ করেন, এই খাবারটি তাঁদের বিশেষ প্রিয়৷

আলু সেদ্ধ করতে যা কাজ, তার অনেক বেশি কাজ এই ডাম্পলিং-গুলো তৈরি করতে! আলু সেদ্ধ করে ডিম, বিস্কুটের গুঁড়ো আর আলুর ময়দার সঙ্গে ভালো করে মেখে নিতে হয়৷ তারপর সেই মাখা থেকে গোল গোল ডাম্পলিং গড়ে নিয়ে জলে সেদ্ধ করতে হয়৷

কাঁচা আলু কুরে নিয়ে, সেই আলু কোরা কিছুটা ময়দা আর ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে, প্যানকেক হিসেবে প্যানে ভেজে নিতে হয়৷ সাধারণত আপেলের মোরব্বার সঙ্গে সার্ভ করা হয় এই আলুর প্যানকেক৷

দক্ষিণ জার্মানিতে এই ময়দার নুডল নিজেরাই তৈরি করে নেন পাকা রাঁধুনিরা, অর্থাৎ প্যানকেক তৈরি করে সেগুলো লম্বা লম্বা ফালি করে কেটে রাখেন৷ পরে গরম সুরুয়ায় সেই ‘নুডল’ দিয়ে সুপ সার্ভ করা হয়৷ খাবারটা নিরামিষাশীদের পক্ষেও আদর্শ৷

জার্মানে ‘স্পাট্স’ মানে চড়ুইপাখি৷ আসলে একটা ক্রিম দেওয়া সসে নরম ডিমের নুডল – সে হিসেবে ম্যাকারোনি আর চিজ বলা যেতে পারে৷ ভাজা পেঁয়াজ আর বেকনও দেওয়া যায়, তবে নিরামিষ সংস্করণটি খেতে দারুণ৷

অর্থাৎ ঘোড়াদের ঘাস খাওয়ানোর জন্য নাকে যে ধরনের ঝুলি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়৷ আসলে বড় বড় ব়্যাভিওলি, আকারে ঐ ঘোড়াদের নাকের ঝুলির মতো৷ শোয়েবিয়ার লোকেরা বলে, শোয়েবিয়া ছাড়া নাকি অন্য কোথাও ঠিকমতো মাউলটাশে তৈরি হয় না৷ মাউলটাশে শোয়েবিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য৷ ক্যাথলিকদের যে সব দিনে মাংস খাওয়া নিষেধ, সে সব দিনে তারা মাউলটাশে খায়৷ পুরের ভিতর মাংস থাকে, দয়াময় ঈশ্বর তো আর সেটা দেখতে পান না – কাজেই দোষ হয় না!

কেল হলো লিফ ক্যাবেজ বা এক ধরনের বাঁধাকপি৷ রংটা সবুজ বলে জার্মানে তার নাম সবুজ বাঁধাকপি৷ আজ এই কেল ক্যাবেজকে সুপারফুড বলে মনে করা হয়, কিন্তু উত্তর জার্মানিতে তার চল বহুদিনের৷ এমনকি সেখানে কেল উৎসবে কেলের রাজা আর কেলের রানি নির্বাচন করা হয়৷ ক্ষেতে ঠান্ডা পড়লে নাকি সবুজ বাঁধাকপির স্বাদ আরো ভালো হয়৷ শীতকালে ঘাটেবাজার আলু আর নানা ধরনের সসেজ মিশিয়ে কেলের স্টু বিক্রি করা হয় – লোকজন খেয়ে প্রাণ গরম করেন৷

জার্মানরা শীতে বাঁধাকপির পাতায় মোড়া, কিমা আর বাদামের পুর দেওয়া ক্যাবেজ রোল খেতে খুব ভালোবাসেন৷ রোলগুলো সুরুয়া বা টমেটো সসে কম আঁচে সেদ্ধ করা হয়৷

সেদ্ধ ডিমের ওপর মাস্টার্ড সস, সাথে সেদ্ধ আলু৷ সোজা রান্না, স্বাদও সহজ-সরল৷ ছোটরা খেতে ভালোবাসে – সে কথাটাও তো ভাবতে হবে!