1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানদের জনপ্রিয়তার রহস্য

আলেক্সান্ডার কুডাশেফ/এসি২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

জার্মানি একটি গণতন্ত্র, অথচ জার্মানদের মন বোঝা দায়৷ সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার প্রতি তাঁদের সহানুভূতি, অথচ তাঁরা অপরাপর গণতন্ত্রের সমালোচনা করে থাকেন৷ তবুও জার্মানরা এত জনপ্রিয় কেন? প্রশ্ন করেছেন আলেক্সান্ডার কুডাশেফ৷

https://p.dw.com/p/1EAGB
Berlin Feierlichkeiten 25 Jahre Mauerfall
ছবি: picture-alliance/dpa/Rainer Jensen

বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভুলভ্রান্তির পর জার্মানরা অবশেষে পশ্চিমা বিশ্বের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছেন – বলেছেন এক নামি-দামি ইতিহাসবিদ৷ কথাটা সত্যি৷ জার্মানদের জীবনদর্শন আজ পশ্চিম ইউরোপের অনুরূপ, হয়ত কিছুটা ভূমধ্যসাগরীয়, এমনও বলা যেতে পারে৷ জার্মানরা আজ সান-অ্যান্ড-স্যান্ড পছন্দ করেন৷ রাজনীতির ক্ষেত্রে কিন্তু তাঁরা দক্ষিণের উষ্ণ দেশগুলির মতো নন৷ বরং খানিকটা দোনামোনা, অনিশ্চিত৷

রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল

স্বভাবতই জার্মানরা পুটিনের আচরণ ভুল বলে মনে করেন – কিন্তু পুরোপুরি নয়৷ স্বভাবতই জার্মানরা ক্রাইমিয়া দখলকে মেনে নেননি৷ স্বভাবতই জার্মানি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করেছে – কিন্তু বেশ কিছুটা দ্বিধা ও উদ্বেগ সহ৷ বার বার শোনা যায়, রাশিয়া ভেঙে পড়লে চলবে না – অর্থাৎ জার্মানরা তাঁদের নিজেদের আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কেই সন্দিহান৷ ওদিকে পুটিন ইউক্রেনে তাঁর নয়া-সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থরক্ষার জন্য যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, অনেক জার্মানের কাছেই সেটা বোধগম্য৷ ওটা নাকি রুশ ইতিহাস ও সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত একটি দায়িত্ব৷ এভাবেই জার্মানদের অধিকাংশ রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল – যদিও সবাই নন৷

Alexander Kudascheff DW Chefredakteur Kommentar Bild
ডয়চে ভেলের প্রধান সম্পাদক আলেক্সান্ডার কুডাশেফছবি: DW/M. Müller

জার্মানদের যে ইসরায়েলের সঙ্গে একটা বিশেষ সম্পর্ক আছে, তা সকলেই বোঝেন৷ ৬০ লক্ষ ইউরোপীয় ইহুদিকে হত্যার পর আর সেই সম্পর্ক নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা চলে না৷ তবে ‘‘সাধারণ'' জার্মানরা গাজা স্ট্রিপের সংঘাত সম্পর্কে যা বলছেন, তা শুনলে বোঝা যাবে যে, জার্মানরা ব্যাপারটা একটু অন্যরকমভাবে দেখেন৷ স্বাভাবিকতা এবং স্বাভাবিকীকরণ এখানে মুখ্য দু'টি শব্দ নয়, বরং জার্মানদের ফিলিস্তিনি – এমনকি হামাসের সঙ্গেও একটা বিশেষ সম্পর্ক আছে, যদিও হামাস প্রকাশ্যভাবে ইসরায়েলকে ধ্বংসের ডাক দিয়ে থাকে৷ জার্মান পরিভাষায় এই মনোভাবকে এভাবে ব্যাখ্যা করা হয়: ইসরায়েলের সমালোচনা করা চলবে না কেন? জার্মান সরকার এবং বিরোধী দলগুলির একটা বড় অংশ তো ঠিক অবস্থানেই আছে: তারাই বলে দেয়, জার্মানদের মনোভাব কী হওয়া উচিত৷

অ্যামেরিকার সমালোচনা

জার্মানরা অন্যের উপর রাগ করতে ভালোবাসেন, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মার্কিনিরাই দোষী, তা তাঁরা কিছু করে থাকুক বা না থাকুক৷ এক্ষেত্রে জার্মানদের ভুল হতে পারে না; যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা পুরোপুরি সাধারণগ্রাহ্য, রাজনীতির ডান থেকে বাম অবধি৷ স্বভাবতই জার্মানরা অ্যামেরিকা-বিরোধী নন – তাঁরা তো আজ পশ্চিমি দুনিয়ার অংশ৷ কিন্তু ‘‘আংকল স্যাম''-এর দিকে স্থায়িভাবে তর্জনী তুলে রেখেছেন নীতিবান জার্মানরা৷ তথাকথিত ‘‘অ্যামেরিকান ওয়ে অফ লাইফ'' কবি ও দার্শনিকের জাত জার্মানদের বিশেষ পোষায় না৷ তাহলে কি জার্মানিকে তার নিজস্ব ‘মধ্যপন্থা' খুঁজে বার করে নিতে হবে? নাকি এই দোনামোনা চলবে?

জার্মানরা হাতের কাজ বোঝেন, তাঁরা উদ্ভাবক এবং আবিষ্কর্তা, প্রযুক্তবিদ৷ তাঁরা ঐকমত্য ভালোবাসেন৷ আজ তাঁরা একটু বামঘেঁষা৷ আজ তাঁরা স্বাধীনতার চেয়ে ‘সামাজিক ন্যায়'-কেই বেশি গুরুত্ব দেন৷ তাঁরা চান একটি সুইজারল্যান্ডের মতো সমৃদ্ধিশালী, সবুজ দ্বীপরাজ্যে বাস করতে৷ রাজনীতিকরা যখন বহির্বিশ্বের জন্য আরো কিছু করার ডাক দেন, তখন জার্মানরা তাতে সায় দেন – যদি না তা বাস্তবিক করতে হয়! জার্মানরা পরিবেশের জন্য যতটা করতে রাজি, বিপন্ন মানুষ ও শরণার্থীদের জন্য ততটা নয়৷ আশ্চর্য এই যে, জার্মানিই নাকি দেশ হিসেবে বিদেশে বিশেষভাবে জনপ্রিয়: বলতে কি, সবচেয়ে জনপ্রিয়, যেমন ইংল্যান্ডে, যেখানকার মানুষ আগে জার্মানদের পছন্দ করতেন না৷ এ অঘটন ঘটল কী করে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান