1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প’

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২

বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা প্রায় বাতিল হবার পর জার্মান সেনাবাহিনীর পক্ষে রংরুট খুঁজে পাওয়া শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাই অ্যাডভেঞ্চারের লোভ দেখিয়ে তরুণ-তরণীদের টানার চেষ্টা চালাচ্ছে ‘বুন্ডেসভের’৷

https://p.dw.com/p/16HgC
ছবি: picture-alliance/dpa

২০১১ সালের পয়লা জুলাই থেকে জার্মানিতে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা স্থগিত রাখা হয়েছে, এবং তা যে ফিরে আসবে, এমনটা কেউই মনে করেন না৷ আগে জার্মানির কিশোর-তরুণদের স্কুল ছাড়ার পর বছর খানেক বাধ্যতামূলক সামরিক সেবায় কাটাতে হতো - অবশ্য তার বিকল্প হিসেবে অ-সামরিক সামাজিক সেবাও রাখা ছিল৷

এই প্রথার একটা বড় সুবিধা ছিল এই যে, স্কুল ছেড়ে যারা বুন্ডেসভেরে আসছে, তারা সেনাবাহিনীতে থেকে যাওয়ার কথাও ভাবত, কেননা সেনাবাহিনীতে থেকে উত্তরোত্তর পড়াশুনো করা যায়, প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়, যা ভবিষ্যৎ জীবনে ও পেশায় কাজে আসে৷ কিন্তু এখন এই পন্থায় রংরুট আসা বন্ধ হওয়ায়, সেনাবাহিনীকে নিজেই রংরুট যোগাড় করার ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে, অর্থাৎ মার্কিনি কায়দায় তরুণ প্রজন্মকে সেনাবাহিনীতে যোগদানে উৎসাহিত করতে হচ্ছে৷

তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের একটি সহজ পন্থা হল খেলাধুলা কিংবা অ্যাডভেঞ্চার, যাতে কম বয়সের ছেলেমেয়েরা সহজেই আকৃষ্ট হয়৷ কাজেই ক্লাইম্বিং ওয়াল, মানে দেওয়ালে চড়ার স্পোর্ট, কিংবা বিচ ভলিবল ইত্যাদির মাধ্যমে বুন্ডেসভের সৈনিক পেশাটাকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা চেষ্টা করছে৷

Bundeswehr Einsatz in Bosnien und Herzegowina Archivbild
২০১১ সালের পয়লা জুলাই থেকে জার্মানিতে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা স্থগিত রাখা হয়েছে, এবং তা যে ফিরে আসবে, এমনটা কেউই মনে করেন নাছবি: picture-alliance/dpa

বেশ কয়েক বছর আগেই চালু হয়েছে ‘‘বুন্ডেসভের অলিম্পিক্স''৷ এই প্রতিযোগিতায় স্কুলের ছেলেমেয়েরা অংশ নেয় এবং সেই সঙ্গে জার্মান সেনাবাহিনী সম্পর্কে জানতে পারে৷ বুন্ডেসভেরের নিজস্ব প্রচার অভিযানে দশটি নীল-হলুদ ট্রাক ব্যবহার করা হয়, যেগুলো জার্মানির বিভিন্ন শহরে ঘুরে ঘুরে বুন্ডেসভের সম্পর্কে খবরাখবর দেয়৷ এছাড়া স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বেঁধে সেনা ছাউনিতে গিয়ে সেখানে বুন্ডেসভের সম্পর্কে জানতে পারে, বিকল্পে বুন্ডেসভেরের অফিসাররা এসে স্কুলে বক্তৃতা দেন, এ সব তো আছেই৷

জার্মান সেনাবাহিনী শুধুমাত্র রংরুট যোগাড় করার কাজে ৫০০ অফিসার রেখেছে৷ কিশোর-কিশোরীদের প্রিয় পত্রিকা ‘‘ব্রাভো''-র সঙ্গে সহযোগিতায় বুন্ডেসভের আল্পস পর্বতমালা কিংবা ইটালির সার্ডিনিয়া দ্বীপে ‘‘অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্পের'' আয়োজন করে থাকে৷ এ সবই খেলার ছলে, সবই অ্যাডভেঞ্চার৷ কিন্তু সৈনিক পেশাটা তো আর শুধু মজা নয়৷ কাজেই বুন্ডেসভেরের এই প্রচার অভিযানে নাগরিক সমাজের সবাই যে খুব সন্তুষ্ট, এমন নয়৷ জার্মানির শিক্ষা ও বিজ্ঞান শ্রমিক সংগঠনে স্কুল শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মকর্তা মার্টিনা শ্মের বলেন:

‘‘আমরা এই অভিযানের কথা শুনে খানিকটা চটেই গেছি, কেননা আমরা কিছুকাল ধরে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বুন্ডেসভের কিভাবে কিশোর-কিশোরীদের জীবনের প্রতিটি অংশে প্রবেশ করছে এবং সেনাবাহিনীর কল্যাণে প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে৷''

বুন্ডেসভেরের এই আত্ম-বিজ্ঞাপণে সৈনিক পেশার রোমাঞ্চ এবং ‘মজার' দিকটাই বড় করে দেখানো হচ্ছে, অথচ ঐ পেশার অন্যান্য সম্ভাব্য গুরুতর ফলাফল, যেমন রণাঙ্গণের ট্রমা, এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু সম্পর্কে কিছুই বলা হচ্ছে না - এটাই হল সমালোচকদের মূল আপত্তি৷

মার্টিনা শ্মের'এর সবচেয়ে বড় আপত্তি হল: বুন্ডেসভের নাকি ইত্যবসরে প্রাইমারি স্কুলের কচিকাঁচাদের দিকেও নজর দিচ্ছে৷ তারা নাকি আফগানিস্তানে কর্মরত জার্মান সৈন্যদের জন্য ‘গার্ডিয়ান এঞ্জেল' বা ‘রক্ষাপরী' তৈরি করে পাঠাচ্ছে৷ মার্টিনার বক্তব্য:

‘‘এটা বাস্তবিক চিন্তার বিষয়৷ একটা বয়সের পর ছোটদের দিয়ে এটা আর করানো উচিত নয়৷''

মিউনিখের বুন্ডেসভের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিশায়েল ভোল্ফজোন'ও তাই মনে করেন, তবে অন্য কারণে:

‘‘সৈনিকের পেশাটা, তা সে সাধারণ সৈনিকই হোক আর অফিসারই হোক, ওটা কোনো মামুলি চাকরি নয়, কোনো মামুলি পেশা নয়৷ বুন্ডেসভের সেটা পরিষ্কার করে দিলে আমি খুশি হতাম, স্বয়ং প্রতিরক্ষামন্ত্রী যেমন মাঝে মাঝে করে থাকেন, বলে থাকেন যে, দেশের সেবা করাটা একটা সম্মান৷ তার অর্থ জার্মান গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করা, তা সে সরকারের নীতির সঙ্গে মিলুক আর না মিলুক৷''

অপরদিকে বুন্ডেসভেরের বক্তব্য হল, ঐ ‘মজাটা' শুধুমাত্র কচিকাঁচাদের সঙ্গে কথা বলার একটা পন্থা৷ প্রথমে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, তার পরে কাছাকাছি কোনো সৈন্যশিবির পরিদর্শন৷ এর অর্থ এই নয় যে, সৈনিক জীবনের কোনো দিক ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে

প্রতিবেদন: জুলিয়া মানকে/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য